রপ্তানির নামে প্রতারণাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

চট্টগ্রাম বন্দর। স্টার ফাইল ছবি

এটা উদ্বেগজনক যে, ভুয়া কৃষি কোম্পানিগুলো সরকারের কাছ থেকে প্রণোদনা নিয়ে ভুয়া রপ্তানি দেখিয়ে অর্থপাচার করছে। গতকাল শনিবার দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, এমন অন্তত ২০টি কোম্পানি গত ৫ বছরে সরকারের দেওয়া ২০ শতাংশ রপ্তানি প্রণোদনা পকেটে পুরেছে। এজন্য তারা প্রায় ৪৫১ কোটি ৫০ লাখ টাকার ৯৬৫টি ভুয়া চালান দেখিয়েছে। কাস্টমস চিহ্নিত কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি ঢাকার মামুন এন্টারপ্রাইজ। কোম্পানিটি ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে কৃষি রপ্তানির বিপরীতে ৬ কোটি ২০ লাখ টাকার বেশি প্রণোদনা নিয়েছে। তদন্তে দেখা গেছে, কোম্পানিটি ১৪২টি চালানের বিপরীতে এই প্রণোদনা নিলেও একটিও পাঠায়নি।

স্পষ্টতই এই কেলেঙ্কারিতে রপ্তানিকারক, কাস্টমস ও এনবিআরের কর্মকর্তাসহ একটি বড় সিন্ডিকেট জড়িত। তা না হলে কোম্পানিগুলো কীভাবে এত সহজে এনবিআর ওয়েবসাইটকে পাশ কাটিয়ে কোনো পরিদর্শন ছাড়াই বন্দর দিয়ে অস্তিত্বহীন পণ্য রপ্তানি করবে?

চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষের তদন্তে এরইমধ্যে এই কেলেঙ্কারির অনেক তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তারা দেখেছে যে, কোম্পানিগুলো কিছু কাস্টমস কর্মকর্তা এবং সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের সহায়তায় বিপুল পরিমাণ অর্থপাচার করছে।

কাস্টমস নথি অনুসারে, অন্তত ২০ জন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এনবিআর সার্ভারে জাল রপ্তানি এন্ট্রি তৈরি করতে কাস্টমস কর্মকর্তাদের আইডি ও পাসওয়ার্ড পেতে রপ্তানিকারকদের সহায়তা করেছে। এনবিআর সার্ভারে চালানের অবস্থা পরিবর্তন করেই ভৌতিক রপ্তানি দেখানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত এর সঙ্গে কোনো ব্যাংকের সম্পৃক্ততা পাওয়া না যায়নি। তবে ব্যাংকগুলোর এর সঙ্গে জড়িত থাকার সম্ভাবনা তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ উড়িয়ে দেয়নি।

গত কয়েক বছরে অর্থপাচার আমাদের অর্থনীতির জন্য একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এর সুরাহা করার জন্য কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। এই প্রতারণাকারী কৃষি কোম্পানিগুলোর আমদানি-রপ্তানি এবং অভিযুক্ত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। কিন্তু পণ্য রপ্তানি না করে কীভাবে দেশে টাকা এলো তা জানতে আরও তদন্ত প্রয়োজন।

চিহ্নিত এই প্রতারকদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ও অর্থপাচার মামলা করার জন্য আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানাই। কোনো বেআইনি অর্থ প্রদানে জড়িত থাকলে ব্যাংক এবং সংশ্লিষ্ট অডিট ফার্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত কর্তৃপক্ষের। সেই সঙ্গে আমাদের রপ্তানি প্রক্রিয়া আরও কঠোর করা উচিত। ভবিষ্যতে এই ধরনের জালিয়াতি বন্ধে ৩ থেকে ৪ ধাপে পরিদর্শনসহ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

Comments

The Daily Star  | English

Sagar-Runi murder: Inconclusive DNA test results stall probe

The task force investigating the 2012 murders of journalist couple Sagar Sarowar and Meherun Runi in its report submitted to the High Court last month said it required more time to complete the probe as the results of the DNA samples collected from the scene were inconclusive.

4h ago