পাম তেল রপ্তানি নিষিদ্ধ করছে ইন্দোনেশিয়া

বিশ্বের শীর্ষ পাম তেল উৎপাদনকারী দেশ ইন্দোনেশিয়া গতকাল শুক্রবার পাম তেল রপ্তানি নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ইন্দোনেশিয়ার এই সিদ্ধান্ত বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় একটি সুপার মার্কেটে পাম তেলের তৈরি পন্য কেনাকাটা করছে। ছবি: রয়টার্স

বিশ্বের শীর্ষ পাম তেল উৎপাদনকারী দেশ ইন্দোনেশিয়া গতকাল শুক্রবার পাম তেল রপ্তানি নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ইন্দোনেশিয়ার এই সিদ্ধান্ত বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রান্নার তেল এবং কাঁচামালের চালানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হলে বিশ্বব্যাপী প্যাকেটাজাত খাদ্যপণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়তে পারে। পাম তেল কেক থেকে শুরু করে প্রসাধনী পণ্য উৎপাদনে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। বিশ্বব্যাপী পাম তেল সরবরাহের অর্ধেকেরও বেশি আসে ইন্দোনেশিয়া থেকে।

এক ভিডিও সম্প্রচারে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো বলেন, প্রধান খাদ্যশস্য উৎপাদনকারী দেশ ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার আগ্রাসনের পর বৈশ্বিক খাদ্য মূল্যস্ফীতি রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে। ফলে, আগে তিনি দেশের জন্য খাদ্যপণ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে চান।

তিনি বলেন, আমি এই নীতি বাস্তবায়নের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করব, যাতে দেশীয় বাজারে রান্না তেল সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী হয়।

বাণিজ্য সংস্থা সলভেন্ট এক্সট্রাক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার (এসইএ) সভাপতি অতুল চতুর্বেদী বলেন, তার এই ঘোষণা পাম তেলের শীর্ষ ক্রেতা ভারত এবং বিশ্বব্যাপী ভোক্তাদের ক্ষতির মুখে ফেলবে। এই উদ্যোগটি দুর্ভাগ্যজনক এবং সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত।

ইন্দোনেশিয়ার এমন উদ্যোগের প্রতিক্রিয়ায় বিকল্প উদ্ভিজ্জ তেলের দাম বাড়ছে। যা আগামী ২৮ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। দ্বিতীয় সর্বাধিক ব্যবহৃত উদ্ভিজ্জ তেল সয়াবিন তেল শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে ৪.৫ শতাংশ বেড়ে প্রতি পাউন্ডে ৮৩.২১ সেন্টের রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।

ইন্দোনেশিয়া রান্নার তেলের জন্য ব্যবহৃত অপরিশোধিত পাম তেলের ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং শীর্ষ উৎপাদনকারী ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়ার দুর্বল উৎপাদনের কারণে বৈশ্বিক মূল্য সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। পাশাপাশি জানুয়ারিতে পাম তেল রপ্তানি সীমাবদ্ধ করে ইন্দোনেশিয়া। যা এ বছরের মার্চে প্রত্যাহার করা হয়।

গৃহস্থালী পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বল কোম্পানিসহ (পিজি.এন) এবং খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানি নেসলে এসএ (এনইএসএন.এস) এবং ইউনিলিভার পিএলসি পাম তেলের বড় ক্রেতা। ওরিও কুকি প্রস্তুতকারক মন্ডেলেজ ইন্টারন্যাশনাল ইনকের (এমডিএলজেড.ও) ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, তারা বিশ্বব্যাপী পাম তেলের ০.৫ শতাংশ ব্যবহার করে।

অন্যান্য দেশগুলোও নিজ নিজ দেশে দাম কমানোর প্রচেষ্টা হিসেবে শস্য সংরক্ষণ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রক্রিয়াজাত সয়া রপ্তানিকারক দেশ আর্জেন্টিনা মার্চের মাঝামাঝি সময়ে সয়া তেল ও খাবার বিদেশে রপ্তানি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয় এবং এই পণ্যগুলোর ওপর রপ্তানি করের হার ৩১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৩ শতাংশ করে।

রয়টার্স বলছে, মার্কিন কৃষি বিভাগ ইউক্রেনে যুদ্ধের সময় রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার পরিবর্তে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
Are schools open? Simple issue unnecessarily complicated

Are schools open? Simple issue unnecessarily complicated

Are the secondary schools and colleges open today? It is very likely that no one can answer this seemingly simple question with certainty.

2h ago