প্রসঙ্গ বাজেট: মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নিন, অযথা ব্যয় কমান

আসন্ন বাজেটের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। পরবর্তী অর্থবছরের বাজেট যেন যথাযথভাবে কাজে লাগানো যায়, এ জন্য আমরা সরকারকে প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কথা মনে করিয়ে দিতে চাই।
কম দামে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে রাষ্ট্রায়ত্ত টিসিবির ট্রাকের সামনে ভিড়। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার ফাইল ফটো

আসন্ন বাজেটের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। পরবর্তী অর্থবছরের বাজেট যেন যথাযথভাবে কাজে লাগানো যায়, এ জন্য আমরা সরকারকে প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কথা মনে করিয়ে দিতে চাই।

করোনা মহামারির ক্ষতি থেকে পুনরুদ্ধার করতে গিয়ে বিভিন্ন বাহ্যিক ও সম্ভাব্য অভ্যন্তরীণ কারণে মুদ্রাস্ফীতি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, সরকার পরবর্তী বাজেট মহামারির আগের সময়ের মতো করেই প্রণয়নের পরিকল্পনা করছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন মতে, এবারের বাজেটে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বিনিয়োগ আকর্ষণ, ২৮টি প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন সম্পন্ন, কৃষির যান্ত্রিকীকরণকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো এবং দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক নিরাপত্তার আওতা বাড়ানোর চেষ্টা করা হবে।

আমরা সরকারের এসব লক্ষ্যের সঙ্গে একমত হলেও কীভাবে এগুলো অর্জন করা হবে তা নিয়ে সংশয়ে থাকি। এর আগেও সরকার এমন অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এবং তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছিল।

যেমন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজগুলো সরকারের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। মহামারি চলাকালে প্রণোদনাসহ বিভিন্ন সুবিধা পেতে উদ্যোক্তাদের যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে।

দরিদ্রদের জন্য নেওয়া সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ক্ষেত্রে বারবার দুর্নীতির খবর পাওয়া গেছে। দরিদ্রদের জন্য এসব কর্মসূচির আওতায় সুবিধা পাওয়া খুবই প্রয়োজন ছিল। অথচ এগুলো থেকে লাভবান হয়েছেন প্রভাবশালী ও ক্ষমতাশালীদের ঘনিষ্ঠজনরা।

এটা বললে ভুল হবে না যে বাংলাদেশ এখনো মহামারির ক্ষতি পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। বিপুল সংখ্যক লোক চাকরি হারিয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। তাই বাজেটে আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টির দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। অবশ্য মহামারির আগেও সরকার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে হিমশিম খেয়েছিল।

এবারের বাজেটে শিক্ষার জন্যও যথেষ্ট বরাদ্দ থাকা উচিত।

বিভিন্ন বাহ্যিক পরিস্থিতির কারণে সম্প্রতি অবশ্য সরকারের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে। এ ছাড়া, উচ্চ সুদের কিছু জাতীয় ঋণের বিষয়ে উদ্বেগ আছে। আমাদের যে সম্পদ আছে, সরকারকে আরও বিচক্ষণতার সঙ্গে তা ব্যবহার করতে হবে, যদিও অতীতে সরকার এতেও ব্যর্থ হয়েছিল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে সরকারের উচিত সতর্ক অবস্থানে থাকা। মানবসম্পদ উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকারের ব্যয় বাড়ানো উচিত।

যা হোক, দেশের রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ ও তাদের গাড়ি আমদানির মতো অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানো উচিত। মূল্যবান তহবিল নষ্ট করার চর্চা পরিত্যাগ করা প্রয়োজন। বাস্তবায়নের সক্ষমতা নেই এমন উচ্চাশার পরিকল্পনা তৈরির পরিবর্তে সরকারকে প্রয়োজনীয় কর্মসূচিগুলোর কার্যকর বাস্তবায়নে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত।

Comments

The Daily Star  | English
Digital Security Act

255 journalists sued under DSA for their work: CGS

At least 451 journalists were sued under the Digital Security Act (DSA) since its inception and 255 of them were sued for their journalistic reports, according to a research paper by Centre for Governance Studies (CGS)

16m ago