দ্রব্যমূল্যের কারসাজি রোধে সরকারি আদেশ কার্যকর হয়নি ১ দশকেও

এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, অসাধু ব্যবসায়ীরা নিয়মিতভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়ে কারসাজি করে যাচ্ছে। অথচ এই বেআইনি চর্চা বন্ধ করতে একটি সরকারি আদেশ আছে। গত ২৪ মে দ্য ডেইলি স্টারের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, পণ্যের মূল্যের হেরফের রোধে সরকার অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৫৬ এর অধীনে ২০১১ সালে পণ্য বিপণন ও পরিবেশক নিয়োগ আদেশ জারি করে।
ছবি: শেখ এনাম/স্টার

এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, অসাধু ব্যবসায়ীরা নিয়মিতভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়ে কারসাজি করে যাচ্ছে। অথচ এই বেআইনি চর্চা বন্ধ করতে একটি সরকারি আদেশ আছে। গত ২৪ মে দ্য ডেইলি স্টারের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, পণ্যের মূল্যের হেরফের রোধে সরকার অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৫৬ এর অধীনে ২০১১ সালে পণ্য বিপণন ও পরিবেশক নিয়োগ আদেশ জারি করে।

কিন্তু ১১ বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও আদেশটি বাস্তবায়ন হয়নি। কারণ যারা এটি কার্যকর করবেন, তারা কেউই তাদের ভূমিকা পালন করেননি। আমদানিকারক ও প্রস্তুতকারকরা আদেশটি মেনে চলার ক্ষেত্রে কোনো গুরুত্ব দেয়নি। আদেশ কার্যকর করতে বা বাজার পর্যবেক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও তাদের দায়িত্ব পালন করেনি।

সরকারি এই আদেশটি কার্যকর করা হয়নি বলে অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রায়শই পণ্যের দাম বাড়াতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। সম্প্রতি আমরা ভোজ্যতেল, গমসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ক্ষেত্রে এটি দেখেছি।

২০১১ সালে জারি করা ওই আদেশ সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হলে আমরা ভোজ্যতেলের সংকট এড়াতে পারতাম, অর্থাৎ সরকার সহজেই এই সংকট মোকাবিলা করতে পারতো।

আইন অনুযায়ী, সরকারের কাছে পরিবেশকদের তালিকা এবং আমদানিকারকদের সরবরাহের তথ্য থাকার কথা। এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো হাতে থাকলে সরকার খুব সহজেই সংকট সৃষ্টির জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে পারতো।

আদেশে বলা হয়েছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানিকারক বা প্রস্তুতকারকরা প্রতিটি উপজেলা, সিটি করপোরেশন ও জেলায় এক বা একাধিক পরিবেশক মনোনীত করে তাদের তালিকা জাতীয় কমিটির কাছে পাঠাবেন। মাসিক পণ্য সরবরাহের তথ্যও কমিটির কাছে পাঠানোর কথা। কিন্তু এটা হচ্ছে না।

কমিটির প্রতি মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদ, সরবরাহ, বিক্রয়, মূল্য নির্ধারণ এবং বাজারে পণ্যের প্রাপ্যতা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বৈঠকে বসার কথা। কিন্তু এ পর্যন্ত বাজার পরিস্থিতি মূল্যায়নের জন্য তেমন কোনো বৈঠক হয়নি এবং ওই আদেশ কার্যকরেও তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

যখন দেশে বাজার পরিস্থিতি অস্থিতিশীল ছিল, তখন এই আদেশটি জারি করা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের বেশিরভাগ আইন বা সরকারি আদেশের মতো এই আদেশটিও কার্যকর করতে সরকারের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। আর এর মূল্য দিতে হয়েছে সাধারণ মানুষকেই এবং এখনো দিতে হচ্ছে।

কিন্তু এমন হওয়ার কথা ছিল না। আমরা সরকারকে আর দেরি না করে এই আদেশটি কার্যকর করার অনুরোধ জানাচ্ছি। পাশাপাশি বাজারে যারা দ্রব্যমূল্যে কারসাজি করছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh Bank dissolves National Bank board

Bangladesh Bank again dissolves National Bank board

The bank’s sponsor director Khalilur Rahman made the new chairman

1h ago