জাঁকালো উদ্বোধনের অপেক্ষায় পদ্মা সেতু

দেশে এর আগে কখনো এত বৃহৎ উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করা হয়নি।
পদ্মা সেতু। ছবি: স্টার

দেশে এর আগে কখনো এত বৃহৎ উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করা হয়নি।

বাংলাদেশে প্রথম নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আগামী ২৫ জুন। সেতুটি উদ্বোধন আয়োজন এমনভাবে হতে যাচ্ছে, যেটার অংশ হবে দেশের সাধারণ জনগণ।

দেশের ৪ হাজারেরও বেশি ইউনিয়নের প্রত্যেকটিতেই আতশবাজি ফোটানোর পাশাপাশি উড়ানো হবে রঙিন ফানুস। দিনের আকাশে মেঘের মতো ভাসবে হিলিয়াম বেলুন।

মাওয়া প্রান্তের ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পর থেকে দেশের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক অর্জনগুলোর একটিকে তুলে ধরতে জাজিরা প্রান্তে বেশ কয়েকটি কর্মসূচি পালন করবে।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানিয়েছে, বর্ণিল এই আয়োজনে মাদারীপুর জেলার শিবচরের কাঠালবাড়িতে ১০ লাখ মানুষের বিশাল জমায়েতের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

কাঠালবাড়ি ফেরি টার্মিনালে পদ্মার তীরে আওয়ামী লীগরে নির্বাচনী প্রতীক নৌকার মতো আকৃতির একটি বিশাল মঞ্চ নির্মাণ করা হবে, যেখান থেকে পুরো পদ্মা সেতু দৃশ্যমান।

ওই মঞ্চে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের বহনকারী রঙিন নৌকাগুলো তখন নদীতে চলাচল করবে।

মাওয়া থেকে জাজিরা পর্যন্ত বিশাল এই নদীর ওপর নির্মিত দীর্ঘ সেতুটি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকা এবং উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের সরাসরি সংযোগ স্থাপন করবে।

আশপাশেরসহ দক্ষিণের ২১ জেলা থেকে মানুষ এই আয়োজনে অংশ নেবে।

সূত্র আরও জানিয়েছে, এসব জেলার মানুষ যাতায়াত করবে লঞ্চ, ট্রলার ও বাসে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা এখন দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলাগুলো পরিদর্শন করছেন এবং ১০ লাখ মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে স্থানীয় দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন।

উদ্বোধনী আয়োজনে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পাশাপাশি পুরো এলাকাটিই থাকবে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতাধীন।

জাজিরা প্রান্তের র‌্যালির পর দেশের জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের অংশগ্রহণে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

এর আগে সকাল ৯টায় প্রধানমন্ত্রী মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এরপর তিনি আড়াই থেকে ৩ হাজার জনকে নিয়ে একটি নাগরিক সমাবেশে যোগ দেবেন, যেখানে থাকবেন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সুশীল সমাজের সদস্য ও কূটনীতিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ব্যক্তিরা।

বৈঠকের পরে এসইউভি গাড়িতে করে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের প্রথম নাগরিক হিসেবে সেতুটি অতিক্রম করবেন প্রধানমন্ত্রী। সেতুর বিপরীত প্রান্তে জাজিরা পয়েন্টে একটি ভিত্তি ফলকও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

সেখান থেকে তিনি যোগ দেবেন বৃহৎ সমাবেশটিতে।

সেতুর ২ পাশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার দুটি ম্যুরাল উন্মোচন করা হবে।

চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যেহেতু সেতুটির নির্মাণকাজ করেছে, সেহেতু উদ্বোধনকালে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি বাংলাদেশ ও চীনের পতাকায় সজ্জিত করার সম্ভাবনা রয়েছে।

Comments