অপরাধ ও বিচার

শরীয়তপুরে আ. লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১

শরীয়তপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সদর উপজেলার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এক জন নিহত হয়েছেন।
নিহত আব্দুল ওয়াহিদুজ্জামান খানের মৃত্যুর খবরে স্বজনদের আহাজারি। ছবি: স্টার/ জাহিদ হাসান

শরীয়তপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সদর উপজেলার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এক জন নিহত হয়েছেন।

সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।

নিহত আব্দুল ওয়াহিদুজ্জামান খান (৩২) উপজেলার চিকন্দি ইউনিয়নের আবুরা গ্রামের মৃত রমিজ খান এর ছেলে। তিনি মাদারীপুর বঙ্গবন্ধু ল কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার চিকন্দি ইউনিয়নের আবুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হত্যায় জড়িত সন্দেহে ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, 'মঙ্গলবার চিকন্দি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য আলমাছ খান ও সাবেক সদস্য তমিজ খানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। নিহত ওয়াহিদুজ্জামান সাবেক ইউপি সদস্য তমিজ খানের ভাতিজা। দুই পক্ষই স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।'

তিনি আরও বলেন, 'আলমাছ খান ও তমিজ খানের সমর্থকদের এই সংঘর্ষে আরও ১০-১৫ জনের মতো আহত হয়েছেন। আহতরা শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে এবং বিভিন্ন প্রাইভেট ক্নিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মিন্টু মাদবর (৪২) ও দিদার সিকদার (৩৫) নামে ২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। নিহতের মরদেহ মর্গে রাখা আছে। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষ হলে, স্বজনদের কাছে মরদেহ তুলে দেওয়া হবে।'

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চিকন্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বাচ্চু সরদারের সমর্থক তমিজ খান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন খানের সমর্থক আলমাছ খানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ রয়েছে।

সম্প্রতি আওয়ামী লীগের একটি সভায় আলমাছ খানের অনুসারীরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বাচ্চু সরদারকে লাঞ্চিত করে। এতে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়।

ওই ঘটনার জেরে মঙ্গলবার দুপুরে তমিজ খানের ভাতিজা মোদাচ্ছের খান বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে আলমাছ খানের সমর্থকরা তাকে ধাওয়া করেন। খবর পেয়ে মোদাচ্ছেরের ছোট ভাই ওয়াহিদুজ্জামানসহ লোকজন ছুটে আসেন। পরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। সেসময় দেশি অস্ত্র, রামদা, টেটা, বল্লম নিয়ে দুই পক্ষ সংর্ঘষে জড়ালে দুই পক্ষের অন্তত ১১ জন আহত হয়।

জানতে চাইলে চিকন্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বাচ্চু সরদার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আলমাছ খান, আক্তার ও তার ভাই ফরহাদ খান এলাকায় একক আধিপত্য বিস্তার করতে চায়। তারা আমাদের বিভিন্নভাবে হেনস্থা করছিল। তাছাড়া আক্তার কিছুদিন আগে চিকন্দি ইউনিয়ন আওয়ামীলীর সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়। এরপর থেকে ক্ষমতার দম্ভে তাদের দাপট বেড়ে যায়। ক্ষমতার দম্ভ দেখিয়ে আজ তাদের সমর্থকরা আমাদের সমর্থক ওয়াহিদুজ্জামানকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমরা হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।'

অভিযোগের বিষয়ে চিকন্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি আইনজীবী। আইন পেশা নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকি। আমি আওয়ামীলীগের একজন সক্রিয় কর্মী। আমি সবাইকে নিয়ে রাজনীতি করতে চাই। রাজনীতি করলেও এলাকার মারামারির ঘটনায় জড়িত নই।'

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চিকন্দি ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আলমাছ খান ও সাবেক সদস্য তমিজ খানকে মোবাইলে ফোন করা হলে তারা ফোন ধরেননি। এসএমএস পাঠানো হলে কোনো উত্তর দেননি।

Comments

The Daily Star  | English

There is a reason why daily news has become so depressing

Isn't there any good news? Of course, there is. But good news doesn't make headlines.

9h ago