‘চাদরে মোড়ানো থাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার, ব্যবহার হয় ব্যক্তিগত কাজে’

দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আইসিটি ল্যাবগুলোতে থাকা কম্পিউটারগুলোর বেশিরভাগই চাদরে মুড়িয়ে রাখা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতি বা প্রধান শিক্ষক তাদের বাসায় কম্পিউটারগুলো নিয়ে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন।
আজ সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এসব অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয় বলে সভা সূত্রে জানা গেছে।
অবশ্য শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা থাকলেও ঢালাওভাবে অভিযোগ করা ঠিক হবে না। আমরা মনিটরিং জোরদার করছি। যেসব সমস্য আছে তা ঠিক হয়ে যাবে।
জানা গেছে, কমিটির সদস্য বিকল্প ধারার সংসদ সদস্য মাহী বি চৌধুরীসহ দুই-তিন জন সংসদ সদস্য বলেন, অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাদর বা টাওয়াল দিয়ে কম্পিউটারগুলো মুড়িয়ে রাখা রয়েছে। এগুলো চালু করা হয় না। আবার কিছু কম্পিউটার গভর্নিং বডির সভাপতি তার বাড়িতে নিয়ে গেছেন। কিছু নিয়ে গেছেন প্রধান শিক্ষক। কিছু পড়ে আছে। কাগজে কলমে আইসিটি ল্যাব দেখানো হচ্ছে। কিন্তু বাস্ততে আইসিটি দক্ষতা সম্পন্ন শিক্ষার্থী নেই।
তারা বলেন, সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে শিক্ষার্থীরা আইসিটি সম্পর্কে পড়তে বললে কিছুটা পারে। কিন্তু কম্পিউটার চালু করতে বললে বা কোন প্রোগ্রাম ওপেন করতে বললে পারে না। মন্ত্রণালয় বিষয়গুলো যথাযথ তদারকি করছে না বলেও তারা অভিযোগ করেন।
জবাবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, এ ক্ষেত্রে আমাদের কিছুটা সীমাবদ্ধতা আছে। এটা মেনে নিতে হবে। শিক্ষার ফল পেতে হলে কিছুটা সময় তো লাগবেই। মোটেও হচ্ছে না সেটা ঠিক নয়। আমরা মনিটরিং জোরদার করছি। পর্যায়ক্রমে সব ঠিক হয়ে যাবে।
সংসদীয় কমিটির বৈঠকে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) ভিসির বিরুদ্ধে নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্তসহ চরটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতি নিয়ে আলোচনা হয়। রুয়েটের দুর্নীতি নিয়ে ইউজিসি একটি প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়কে দিয়েছে বলেও বৈঠকে জানানো হয়।
শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য দ্বিমত পোষণ করে বলেন, এগুলো বিছিন্ন ঘটনা। দুই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা ধরে উচ্চশিক্ষা নিয়ে ঢালাও মন্তব্য করা ঠিক হবে না। আর যেসব ক্ষেত্রে অনিয়মের তথ্য আসছে ইউজিসি তা তদন্ত করছে। তদন্তে অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বৈঠকে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের দুর্নীতি-অনিয়ম নিয়ে অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয় বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন কমিটির সভাপতি আফসারুল আমীন। তিনি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কাজ দুদকের মাধ্যমে তদারকির কথাও বলেন।
Comments