শেষের ঝড়ে আশাহত আফগানিস্তানের সামনে লক্ষ্য ২৮৩
২৫০ এর নিচে লক্ষ্যতাড়া করতে পারলেই খুশি, টসের সময়ে বলেছিলেন আফগানিস্তানের অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ শহিদি। সে আশা পূরণ হওয়ার পথেই ছিল আফগানরা। পাকিস্তানের দুর্দান্ত শুরুর পর মাঝে স্পিনজালে ভর করে ফিরে আসে আফগানিস্তান। কিন্তু শাদাব ও ইফতিখারের ব্যাটে শেষের ঝড়ে শেষমেশ পাকিস্তানকে ২৮২ রানের আগে রুখতে পারেনি আফগানিস্তান।
সোমবার চেন্নাইয়ে টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে মনের মতো শুরু পেয়ে যায় পাকিস্তান। আব্দুল্লাহ শফিক সুযোগ পেলেই চড়াও হয়েছেন নাভিন উল হকের উপর। মুজিব উর রহমানকেও কার্যকর হতে দেননি শফিক। নিঁখুত ব্যাটিংয়ে নিয়মিত বাউন্ডারি বের করেছেন ইমাম উল হকের সাথে মিলে। নাভিনকে একটি ছক্কা মারলে ধারভাষ্যে উত্তেজিত হয়ে পড়েন ওয়াকার ইউনুস। ছক্কাটি যে ছিল পাওয়ারপ্লেতে এবছরে পাকিস্তানের প্রথম, সেটি এসেছে ১১৬৯ বল পর।
পাওয়ারপ্লে বিনা উইকেটে ৫৬ রানে শেষ করতে না করতেই যদিও উইকেট হারায় পাকিস্তান। ইমাম পুল করে সোজা মিডউইকেটে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান ২২ বলে ১৭ রান করে। বাবর এসে চারে দুর্দান্ত শুরু করেন। তবে এরপর দুজনকেই আফগান স্পিনাররা চেপে ধরেন। নাবি তার ৫ ওভারের স্পেল শেষ করেন ১১ রানে। বাড়তি স্পিনার নূর আহমেদকে ১৯তম ওভারে চার মারলে সাত ওভার পর বাউন্ডারি পায় পাকিস্তান। দেখেশুনে খেলে অবশ্য ৬০ বলে ফিফটি পেয়ে যান শফিক।
২০ ওভারে একশ পূর্ণ করে এগুতে থাকে পাকিস্তান। বিশ্বকাপে অভিষিক্ত নূর আহমেদ এসে প্রথম ধাক্কা দেন। শফিককে এলবিডাব্লিউ বানিয়ে ফিরিয়ে দেন ৫৮ রানেই। ততক্ষণে চেন্নাইয়ের পিচে টার্ন পেতে শুরু করেছেন স্পিনাররা। নূরের বেশ বাইরের গুগলিতে টেনে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। এক অঙ্কে রিজওয়ানকে ফিরিয়ে ১২০ রানে তিন উইকেট নিয়ে আফগানরা ফিরে আসে ম্যাচে। সউদ শাকিল শুরু পেয়েও গেলেও উইকেট বিলিয়ে দেন। নাবিকে এগিয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে আউট হন ২৫ রানেই।
অন্যপাশে সবাই যেখানে আফগানিস্তানের স্পিনজালে অস্বস্তিতে পড়ে ভিন্ন কিছু করতে গেছেন, ঝুঁকিপূর্ণ পথ বেছে নিয়ে বিপদ ডেকে এনেছেন। একপাশে বাবর আজম সেখানে খেলে গেছেন নিরাপদে। ফিফটি পেতে ৬৯ বল লাগলেও পিচ ও পরিস্থিতি বিবেচনায় বাবরের ইনিংস পাকিস্তানকে ভালো অবস্থানেই রেখেছিল। ফিফটির পর ভালো সংগ্রহে নিয়ে যাওয়ার আভাসই দিচ্ছিলেন। ৪১তম ওভারেই দুইশ পেরিয়ে যায় পাকিস্তান। কিন্তু নুরের বেশ বাইরের বলে কাভারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে বাবরের ইনিংস থেমে যায় ৭৪ রানেই। ৯২ বলের সে ইনিংস গড়েন তিনি ৪টি চার ও ১টি ছক্কার সাথে নিয়মিত স্ট্রাইক বদল করে।
শাদাব যোগ্য সঙ্গ দেন বাবরকে। ইফতিখার এসে এরপর শেষের ঝড় তুলেন দারুণভাবে। চারটি ছক্কার সাথে এক চারে খেলেন ২৭ বলে ৪০ রানের ইনিংস। শাদাবের সাথে ৫০ বলে ৭৩ রানের জুটি গড়ে যখন ফিরছেন, পাকিস্তানের রান ২৭৯। নাভিন দুর্দান্ত শেষ ওভারে ৩ রান দিলে পাকিস্তান থামে ২৮২ রানে। ৩৮ বলে ৪০ রান করে শেষ বলে আউট হয়ে যান শাদাব। তবে শাদাব ও ইফতিখারের ব্যাটেই পাকিস্তান শেষ দশ ওভারে আনতে পারে ৯১ রান। দুর্দান্ত শুরু আর শেষের বদৌলতে মাঝের ধাক্কা কাটিয়ে তারা জেতার মতো পুঁজি গড়তে সমর্থ হয়।
Comments