ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রতিশোধ নিয়েই ফাইনালে ভারত

২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই ইংল্যান্ডের কাছে হেরেই সেমি-ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিল ভারত। এক আসর পর সেই দলটির সঙ্গে ফাইনালের ওঠার লড়াইয়ে ফের দেখা তাদের। তবে এবার আর গল্পটা আগের মতো হয়নি। ইংলিশদের হারিয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়েছে রোহিত শর্মার দল। তাতে ফাইনালের টিকিট মিলেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম চ্যাম্পিয়নদের।

বৃহস্পতিবার গায়ানার প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ৬৮ রানে হারিয়েছে ভারত। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭১ রান করে ভারত। জবাবে ১৬.৪ ওভারে ১০৩ রানে গুটিয়ে যায় গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা।

লক্ষ্য তাড়ায় অবশ্য শুরুটা ভালোই করেছিল ইংল্যান্ড। পেসারদের প্রথম তিন ওভারে ২৬ রান তুলে নিয়েছিল দলটি। তবে স্পিনার আসলেই বদলে যায় ম্যাচের পরিস্থিতি। বল হাতে নিয়ে প্রথম বলেই বিপজ্জনক জস বাটলারকে ফেরান আকসার প্যাটেল। এরপর আরেক ওপেনার ফিল সল্টকে ছাঁটাই করেন জাসপ্রিত বুমরাহ। পরের ওভারে ফিরে জনি বেয়ারস্টোকেও বিদায় করেন আকসার। তাতে পাওয়ার প্লেতেই তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ইংল্যান্ড।

পাওয়ার প্লে শেষেই চাপ অব্যাহত থাকে ইংলিশদের। মঈন আলীকে ছাঁটাই করে নিজের তৃতীয় শিকার ধরেন আকসার। এরপর মঞ্চে আসেন কুলদ্বীপ যাদব। ফিরিয়ে দেন স্যাম কারানকে। ফলে পঞ্চাশ রানের আগেই অর্ধেক ব্যাটার সাজঘরে ইংল্যান্ডের।

হ্যারি ব্রুক এক প্রান্ত আগলে কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেন নি। কুলদ্বীপের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন। তাতে লেজ বেড়িয়ে যায় দলটির। এরপর খুব বেশি আগায়নি ইংলিশদের ইনিংস। কোনোমতে একশ পার করতে পারে দলটি।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৫ রানের ইনিংস খেলেন ব্রুক। বাটলারের ব্যাট থেকে আসে ২৩ রান। শেষদিকে জোফরা আর্চার করেন ২১ রান। এই তিন ব্যাটার ছাড়া দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পেরেছেন কেবল লিয়াম লিভিংস্টন। ১১ রান করেন তিনি।

ভারতের পক্ষে ১৯ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নেন কুলদিপ। আকসার ৩টি উইকেট নেন ২৩ রানের বিনিময়ে। এছাড়া বুমরাহ শিকার ২টি।  

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে কিছুটা দেখেশুনেই শুরু করেন ভারতীয় দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। আসর জুড়ে ফর্মের খোঁজে থাকা কোহলি এদিনও ভুগেছেন। প্রথম রান নিতে বল খেলতে হয় পাঁচটি। এরপর অবশ্য হাত খোলার চেষ্টা করেন। তবে একটি ছক্কা মারার এক বল পরই শিকার হয়েছে রিস টপলির। কোহলিকে বোল্ড করে দেন এই পেসার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই প্রথম কোনো সেমি-ফাইনালে পঞ্চাশের কম রান করলেন কোহলি। এর আগে তিনটি সেমিতেই পঞ্চাশ কিংবা তার বেশি রান করেছেন এই তারকা।

অবশ্য এক প্রান্তে নিয়মিত বাউন্ডারি মেরে রানের চাকা সচল রাখার চেষ্টা করেন রোহিত। রিশাভ পান্ত হতাশ করেন। ষষ্ঠ ওভারে বল হাতে নিয়ে তাকে ফেরান স্যাম কারান। এরপর সূর্যকুমার যাদবের সঙ্গে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক। তৃতীয় উইকেটে ৫০ বলে ৭৩ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার। তাতে বড় পুঁজির স্বপ্ন দেখছিল ভারতীয়রা।

মাঝে অষ্টম ওভারের খেলা শেষে বৃষ্টি নামায় প্রায় দেড় ঘণ্টা খেলা বন্ধ থাকে। এর আগেই অধিনায়ক হিসেবে তিন সংস্করণে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন রোহিত। বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে একই ধারায় শুরু করেন অধিনায়ক। ৩৬ বলে নিজের ফিফটিও তুলে নেন তিনি। এরপর অবশ্য খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। আদিল রশিদে বলে বোল্ড হয়ে যান ব্যক্তিগত ৫৭ রানে। ৩৯ বলের ইনিংসে ৬টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন তিনি।

অধিনায়ককে হারানোর কিছুক্ষণ পর ফিরে যান সূর্যও। জোফরা আর্চারের শিকার হওয়ার আগে ৩৬ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় করেন ৪৭ রান। এরপর উইকেটে নেমেই হাত আগ্রাসী হওয়ার চেষ্টা চালান হার্দিক পান্ডিয়া। ক্রিস জর্ডানের করা ওভারে জোড়া ছক্কা হাঁকান। এরপর পাল্টা আঘাত করেন জর্ডানও। তুলে নেন জোড়া উইকেট। হার্দিককে তুলে নেওয়ার পরের বলে আউট করেন শিভাম দুবেকেও।  এরপর রবীন্দ্র জাদেজা ও আকসার প্যাটেলের ব্যাটে শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ের রসদ মিলে যায় ভারতের। শেষ দিকে জাদেজা ৯ বলে অপরাজিত ১৭ ও আকসার ৬ বলে ১০ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেন।

ইংল্যান্ডের পক্ষে ৩৭ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নেন জর্ডান।

Comments

The Daily Star  | English
Rivers and people in Bangladesh

Of rivers and people

The present leadership must prioritise the development of these two assets of Bangladesh for a sustainable and prosperous future.

8h ago