আবারও চিটাগাং ভাইকিংসকে উড়িয়ে দিল কুমিল্লা
ঝড়ো শুরুর পর আবারও চিটাগাং ভাইকিংসের মন্থর ব্যাটিংয়ে মামুলি সংগ্রহ। সেই রান ডিপেন্ড করতে গিয়ে বোলিংয়ে নেই ঝাঁজ। তাই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সদের কাছে আবারও হেরেছে হারল ভাইকিংসরা। সিলেটে প্রথম দেখায় কুমিল্লা জিতেছিল ৮ উইকেটে, এবার জিতল ৬ উইকেটে।
এই জয়ে চার ম্যাচে তিন জয়ে কুমিল্লা উঠে গেল টেবিলের দুইয়ে। সমান ম্যাচে কেবল একটাই ম্যাচ জিততে পেরেছে মিসবাহ উল হকের দল। পড়ে আছে টেবিলের তলানিতে।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে চোটে পড়া তামিম এদিন নেমেছিলেন। তবে ফেরার ম্যাচ সুখকর হয়নি টাইগার ওপেনারের। ১০ বলে ৪ রান করে মুনাবিরার বলে সহজ ক্যাচ তুলে দেন কুমিল্লার আইকন। থিতু হয়ে আউট হয়েছেন লিটন দাস। রান তাড়ায় বিশাল চাপ ছিল না। অযতা চাপ বাড়িয়ে মুনাবিরাকেই পেটাতে গিয়ে লিটন বোল্ড হয়ে ফেরত যান ২০ রান করে।
ওয়ানডাউনে নেমে ইমরুল কায়েস শুরুতে ছিলেন বেশ নড়বড়ে। উইকেটে টিকে সময়ের সঙ্গে মানিয়ে নেন, বাজে বল কাজে লাগিয়ে পেয়েছেন বাউন্ডারি। পেশিতে টান পেয়েছিলেন। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে রান নিয়েছেন, যদিও ব্যাট ছিল ছন্দে, জায়গায় দাঁড়িয়েও মারতে পেরেছেন বাউন্ডারি। তবে ফিফটির কাছে গিয়ে তুলে দিয়েছেন ক্যাচ। ইমরুলের ৩৭ বলে ৪৫ রানের ইনিংসে ছিল দুই চার আর তিন ছয়।
এবারের বিপিএলে চিটাগাং ভাইকিংসের ইনিংসের যেন দুই অংশ। এক অংশে একা আছেন লুক রঙ্কি, বাকিরা সবাই অন্য অংশে। প্রতি ম্যাচেই ঝড়ো শুরু করে দিচ্ছেন রঙ্কি। বাকিরা মিলে যেন রান মন্থর করার মিশনে নামেন। প্রথম পাঁচ ওভারে প্রায় ১০ করে রান নিয়েও ২০ ওভার শেষে মিসবাহ উল হকরা করতে পেরেছে ১৩৯ রান।
ওই রান তাড়ায় কখনোই সমস্যা পড়তে হয়নি কুমিল্লাকে। চারে নামা জস বাটলার ইমরুলের সঙ্গে গড়েন ৭৪ রানের জুটি। ইমরুল থামলেও খেলে শেষ করেই এসেছেন বাটলার। তার ৩২ বলে ৪৪ রানের ইনিংস যখন থেমেছে তখন গ্যালারির উত্তাপও হাওয়া। ম্যাচের ফল নিয়ে দ্বিধা নেই কারো মনে।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিং পেয়ে পাক্কা শুরু পেয়েছিলেন সৌম্য-রঙ্কি জুটি। রঙ্কি আউট না হলে হয়ত বড় সংগ্রহই পেত ভাইকিংস। সাইফুদ্দিনের ফুললেন্থের বল ফ্লিক করতে গিয়ে লাইন মিস করন কিউই ব্যাটসম্যান। ২০ বলে ৩১ রান করে ফেরেন এলবিডব্লিউ হয়ে।
১০ ওভারে ১ উইকেটে ৭৫ রানের ভিত ছিল। পরের ১০ ওভারে পেটানোর মতো কেউ থাকলে তো। ভাইকিংসরা ছয় উইকেট জমিয়ে রেখে ২০ ওভার শেষ করেছে আর মাত্র ৬৪ রান তুলে।
শুরুতে এক প্রান্তে রঙ্কির ঝড়ে সঙ্গ দিচ্ছিলেন সৌম্য সরকার। বাজে বল পেলে মেরেছেন চার, ছয়ও। তবে স্বভাব সুলভ খেলতে পারেননি। রশিদ খান ভুগিয়েছেন তাকে। স্ট্রাইক রেট কমে যাওয়ার হতাশা থেকেই হয়ত মোহাম্মদ নবীর বলে বেরিয়ে এসেছিলেন। ব্যাটে বল লাগাতে না পারায় লিটনের সহজ স্টাম্পিং। ৮৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় ভাইকিংসরা।
তিনে নামা মুনাবিরা আবারও আউট হয়েছেন কুড়ির ঘরে। রশিদ খানের গুগলি বোঝার তালিম নিয়ে নামেননি, ১৯ রান করে হয়েছেন বোল্ড। সিকান্দার রাজার স্ট্রাইক রোটেট করার সুনাম ছিল, এদিন তিনিও কেমন মন্থর। ২৪ বল খেলে ২০ রান করে আউট হয়েছেন ব্রাভোর বলে।
প্রথম ওভারে ১৪ রান দিয়েছিলেন মোহাম্মদ নবী। বাকি দুই ওভারে দিলেন মাত্র ৫ রান। রশিদ খান এদিনও ছিলেন অনন্য। ৪ ওভার বল করে ১৭ রানে নিয়েছেন ১ উইকেট। ক্রমাগত গুগলি করে নাজেহাল করে গেছেন ব্যাটসম্যানদের। বোলিংয়েই আসল কাজটা সেরে রেখেছিল কুমিল্লা। ব্যাট করতে নেমে কেবল সেরেছে আনুষ্ঠানিকতা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চিটাগাং ভাইকিংস:১৩৯/৪ (রঙ্কি ৩১, সৌম্য ৩০, মুনাবিরা ১৯, সিকান্দার ২০, মিসবাহ ১৬*, জর্দান ১৬* ; রশিদ ১/১৭, নবী ১/১৯)
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: (তামিম ৪, লিটন ২০, ইমরুল ৪৫, বাটলার ৪৪, স্যামুয়েলস ১৭*, নবী ০* ; মুনাবিরা ২/১৭, সানজামুল ২/১৪)
টস:কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স
ফল:কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৬ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ইমরুল কায়েস।
Comments