ক্রিকেট

সল্টের তাণ্ডবে ১৭০ রানের লক্ষ্যকে মামুলি বানাল ইংল্যান্ড

ডানহাতি উইকেটরক্ষক-ব্যাটারের কল্যাণে সাত ম্যাচের সিরিজে সমতা ফেরাল সফরকারীরা।
ছবি: টুইটার

অধিনায়ক বাবর আজমের ব্যাটে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি গড়ল পাকিস্তান। কিন্তু ফিল সল্টের তাণ্ডবে সেটা ইংল্যান্ডের জন্য হয়ে পড়ল মামুলি। ক্যারিয়ারসেরা টি-টোয়েন্টি ইনিংসে প্রতিপক্ষের বোলারদের কচুকাটা করলেন। তার কল্যাণে সাত ম্যাচের সিরিজে ৩-৩ ব্যবধানে সমতা ফেরাল সফরকারীরা।

শুক্রবার লাহোরে ষষ্ঠ টি-টোয়েন্টিতে ৮ উইকেটের অনায়াস জয় পেয়েছে মইন আলির দল। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬৯ রান তোলে পাকিস্তান। জবাবে ৩৩ বল হাতে রেখে ২ উইকেটে ১৭০ রান করে জয় নিশ্চিত করে ইংলিশরা। ফলে আগামী রোববারের সপ্তম ও শেষ ম্যাচ রূপ নিল অঘোষিত ফাইনালে।

ডানহাতি উইকেটরক্ষক-ব্যাটার সল্টের ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৮৮ রানের টর্নেডো ইনিংস। মাত্র ৪১ বল খেলে মারেন ১৩ চার ও ৩ ছক্কা। আরেক বিধ্বংসী ওপেনার অ্যালেক্স হেলসের সঙ্গে ২৩ বলে ৫৫ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন তিনি। তখনই জয়ের ভিত পেয়ে যায় ইংল্যান্ড।

ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় ওভারেই মোহাম্মদ হারিস বিদায় নেন। মোহাম্মদ রিজওয়ানের বিশ্রামে সুযোগ পাওয়া উইকেটরক্ষক-ব্যাটারের টি-টোয়েন্টি অভিষেক স্মরণীয় হয়নি। ৮ বলে ৭ রান করে তিনি শিকার হন রিচার্ড গ্লিসনের। শর্ট ফাইন লেগে আদিল রশিদ নেন সহজ ক্যাচ।

২ বল খেলা শান মাসুদকে রানের খাতা খুলতে দেননি ডেভিড উইলি। এলবিডব্লিউ হওয়ার পর রিভিউ নিলেও বহাল থাকে মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত।

১৫ রানে ২ উইকেট খুইয়ে ফেলা দলের হাল ধরেন বাবর। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে যান তিনি। খেলেন ৮৭ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস। যদিও হাফসেঞ্চুরি পর্যন্ত বেশ ঠাণ্ডা ছিল তার ব্যাট। ৫৯ বল মোকাবিলায় বাবর মারেন ৭ চার ও ৩ ছক্কা।

তৃতীয় উইকেটে ৩২ বলে ৪৭ ও চতুর্থ উইকেটে ৩৫ বলে ৪৮ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি পায় পাকিস্তান। বাবরের সঙ্গী হওয়া হায়দার আলি ও ইফতিখার আহমেদকে ফেরান স্যাম কারান। সীমানার বাইরে বল পাঠাতে গিয়ে হায়দার ক্যাচ দেন বেন ডাকেটকে। ১৪ বলে তার সংগ্রহ ১৮ রান। চারে নামা ইফতিখারের ঝড় থামে বড় হওয়ার আগে। কাটার হাঁকাতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করে তিনি তালুবন্দি হন হ্যারি ব্রুকের। ২১ বলে সমান ২টি করে চার-ছয়ে তিনি করেন ৩১ রান।

ইনিংসের ১৫তম ওভারে বাবর হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন ৪১ বলে। এরপর শুরু করেন মেরে খেলা। পরপর দুই ওভারে গ্লিসন ও উইলিকে মারেন ছক্কা। মঞ্চ তৈরি থাকলেও আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত আসিফ আলি হন ব্যর্থ। ৯ বলে ৯ রান করে আউট হন উইলির বলে।

রিস টপলির করা শেষ ওভারে ১৯ রান নেয় পাকিস্তান। প্রথম দুই বলে যথাক্রমে চার ও ছক্কা হাঁকান বাবর। পঞ্চম বলে ছয় মারা মোহাম্মদ নওয়াজ শেষ বলে লং-অফে ক্যাচ দেন ব্রুকের হাতে। ৭ বলে তিনি করেন ১২ রান।

লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম বল থেকেই শুরু হয় সল্টের আগ্রাসন। ওই ডেলিভারির পর তৃতীয় বলেও মারেন চার। রউফের বিশ্রামের সুযোগ পাওয়া শাহনেওয়াজ দাহানির ওপর দিয়ে এরপর চলে তাণ্ডব। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে তিনি খরচ করেন ২২ রান। সল্ট ও হেলস দুজনেই মারেন একটি করে চার-ছক্কা। মোহাম্মদ ওয়াসিম ৪টি চার হজম করলে তৃতীয় ওভারেই ইংলিশদের সংগ্রহ ছোঁয় পঞ্চাশ।

বল হাতে নিয়ে হেলসকে বিদায় করেন শাদাব খান। বাড়তি বাউন্সে পরাস্ত হয়ে দাহানিকে ক্যাচ দেন হেলস। ১২ বলে ৪ চার ও ১ ছয়ে তিনি করেন ২৭ রান।

দমে না গিয়ে সল্টের ব্যাট হয়ে ওঠে আরও ক্ষুরধার। নতুন যোগ্য সঙ্গী হিসেবে পান ডাভিড মালানকে। বাঁহাতি স্পিনার নওয়াজ আক্রমণে ফিরে হজম করেন ৪ চার ও ১ ছক্কা। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ইংল্যান্ড স্কোরবোর্ডে জমা করে ৮২ রান।

ফিল্ডিংয়ের বাধ্যবাধকতা উঠে গেলেও সল্ট একই তালে খেলতে থাকেন। আগের ম্যাচে পাকিস্তানের জয়ের নায়ক আমির জামালকে সপ্তম ওভারে বেধড়ক পেটান তিনি। ৩ চার ও ১ ছক্কাসহ ২০ রান আসে ওই ওভার থেকে। মাত্র ১৯ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন সল্ট।

দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আসে ৩৪ বলে ৭৩ রান। ১৮ বলে ৫ চারে ২৬ করে বিদায় নেন মালান। শাদাবের বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার পর তিনি রিভিউ নিলেও লাভ হয়নি। এরপর সল্ট ও ডাকেট মিলে খেলা শেষ করে দেন। দুজনের ৩০ বলে ৪২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ডাকেট ছিলেন অগ্রগামী ভূমিকায়। তিনি ১৬ বলে ৪ চারে ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন।

Comments

The Daily Star  | English

The contradiction of comfort

How comfortable is it to not have clean air to breathe?

6h ago