ফুটবলকে বিদায় জানালেন হিগুয়েইন
এমন নয় যে বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন। মাত্র তো ৩৪ বছর বয়স। তার বড় অনেক খেলোয়াড়ই দাপটের সঙ্গে খেলে যাচ্ছেন শীর্ষ লিগগুলোতে। ছন্দহীনতাও ভুগছেন না। শেষ ১৪ ম্যাচে করেছেন ১২টি গোল। কিন্তু এখনই পেশাদার ফুটবলকে বিদায় বলে দিলেন গঞ্জালো হিগুয়েইন। আর বিদায় বেলা কান্না আটকাতে পারেননি এ আর্জেন্টাইন তারকা।
বাবা হোর্হে হিগুয়েইনও অবশ্য গত এপ্রিলেই জানিয়েছিলেন এমনটা। ইন্টার মিয়ামিতে চলতি মৌসুম শেষে হিগুয়েইন বুট জোড়া তুলে রাখবেন বলেছিলেন। এ নিয়ে তখন থেকেই গুঞ্জন। পরে অবশ্য বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছিলেন এ আর্জেন্টাইন তারকা। তবে তখন যে বাবা মিথ্যে বলেননি তা জানালেন এতো দিন পর এসে।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে অবসর ঘোষণা করে হিগুয়েইন বলেন, 'পেশাদার ক্যারিয়ারের দারুণ সাড়ে সতেরো বছর কাটানোর পর, আমি অনুভব করি যে ফুটবল আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে, নিজের সবকিছু এবং আরও অনেক কিছু দিয়েছে। আপনাদের অনেক ধন্যবাদ যারা সবসময় আমাকে বিশ্বাস করেছেন, বিদায় বলার সময় এসেছে।'
সিদ্ধান্তটি অনেক আগেই ক্লাবকে জানিয়েছিলেন বলে জানান তিনি, 'তিন-চার মাস আগেই আমি ক্লাবকে (অবসরের ব্যাপারে) বলেছিলাম, তখন থেকেই জানতাম এমন দিন আসছে। আমি কয়েক বছর ধরেই এ নিয়ে ভাবছিলাম। আমি এখানে (মিয়ামি) এসেছিলাম ফুটবল উপভোগ করার জন্য, আমার জীবনের আনন্দের জন্য, আমার ভাই ফেডের কাছাকাছি থাকার জন্য।'
'এটা (মিয়ামি ক্যারিয়ার) আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম একটি পর্যায় ছিল। আমি আপনাদের বলতে পারি যে আমার ক্যারিয়ারের সেরা মুহূর্তগুলোর একটি ছিল এখানে। এই ক্লাব, আমার সতীর্থরা এবং কোচিং স্টাফরা আমাকে আমাকে ফুটবল খেলার ইচ্ছা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। আমি এখন অবসর নিতে পারি,' যোগ করেন হিগুয়েইন।
জন্ম ফ্রান্সে হওয়ায় ফরাসী দলে ডাক পেয়েছিলেন হিগুয়েইন। কিন্তু বেছে নেন বাবার দেশ আর্জেন্টিনাকে। প্রথম ম্যাচেই পেরুর বিপক্ষে হারের মুখে থাকা দলকে বাঁচিয়েছেন দারুণ এক গোল করে। তবে জাতীয় দলে পথটা মসৃণ হয়নি। ব্রাজিল বিশ্বকাপের ফাইনালে সহজ সুযোগ মিস না করলে হয়তো ইতিহাসটা লেখা হতো ভিন্নভাবে। এরপর দুটি কোপা আমেরিকার ফাইনালেও সহজ মিস করলে ভিলেন বনে যান আর্জেন্টাইনদের কাছে। রাশিয়া বিশ্বকাপের পর আর আর ডাক মিলেনি জাতীয় দল থেকে।
দিয়াগো ম্যারাডোনার অধীনে ২০০৯ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হয় হিগুয়েইনের। তখন থেকে ২০১৮ পর্যন্ত মোট ৭৫টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। খেলেছেন ৩টি বিশ্বকাপ ও ৩টি কোপা আমেরিকা কাপ। ২০১০, ২০১৪ এবং ২০১৮ বিশ্বকাপে একটি হ্যাটট্রিক সহ গোল করেছেন ৫টি। আর্জেন্টিনার ইতিহাসের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ ৩১টি গোল তার। রিয়াল মাদ্রিদ, জুভেন্তাস, নাপোলি, চেলসির মতো ক্লাবে খেলা এ তারকার ক্লাব ক্যারিয়ারও দুর্দান্ত। ৭০৮ ম্যাচে করেছেন ৩৩৩টি গোল।
Comments