তাসকিন-সৌম্যের ঢাকার সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ

বিপিএলে এবার সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা স্কোয়াড় কোনটি? এমন প্রশ্নে কেউ যদি ঢাকা ডমিনেটর্সের নাম বেছে নেয় তাহলে পাল্টা যুক্তির জায়গা থাকবে সীমিত। গড়পড়তা বিদেশি, স্থানীয় পারফর্মারদের ঘাটতি মিলিয়ে দলটির স্কোয়াডের গভীরতা সীমিত।
রাজধানী শহরের নামের ফ্র্যাঞ্চাইজি হলেও তিন বছর মেয়াদে এবার ঢাকার মালিকানা বিক্রি নিয়ে আগ্রহীর সংখ্যা ছিল নগণ্য। অনেকটা বাধ্য হয়ে শেষ সময়ে একটি মালিকানা খোঁজে নেয় বিসিবি। তাড়াহুড়োর ফল দেখা গেছে তাদের প্লেয়ার্স ড্রাফটেও। খুব একটা প্রস্তুতির ছাপ দেখা যায়নি তাদের মাঝে।
ড্রাফটের আগে তাসকিন আহমেদকে সরাসরি চুক্তিতে দলে নিশ্চিত করে ঢাকা। সরাসরি চুক্তিতে দলে নিয়েছিল শ্রীলঙ্কান চামিকা করুনারত্নে আর দিলশান মুনাওয়ারাকেও। কিন্তু শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে চামিকা সব ধরণের ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হওয়ায় তাকে পাচ্ছে না তারা।
ড্রাফট থেকে বিদেশিদের মধ্যে পাকিস্তানের শান মাসুদ ভালো পছন্দ। বাঁহাতি এই ব্যাটারকে পুরো আসরে পেলে হয়ত ব্যাটিংয়ে একটা বড় ভরসা হতে পারেন। একই দেশের আহমেদ শেহজাদের দল পাওয়া আবার বেশ অবাক করা। এক সময় বিপিএলে ঝলক দেখানো শেহজাদ সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটেই ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন। সেরা সময় পেরিয়ে আসা এই ওপেনারের ভাবমূর্তিও বেশ প্রশ্নবিদ্ধ। বাকি দুই বিদেশি চুক্তিও খুব নজরকাড়া নয়।
স্থানীয় ব্যাটারদের মধ্যে দলটির সবচেয়ে বড় নাম সৌম্য সরকার। কুড়ি ওভারের সংস্করণে ছন্দে না থাকা সৌম্য কতটা কি করতে পারেন দেখার বিষয়। মিডল অর্ডারে দলটির ভরসা মোহাম্মদ মিঠুন। ঘরোয়া লিগগুলোতে ভালোই খেলেন তিনি, ঢাকাকে টেনে নেওয়ারও ভার তার উপর। নাসির হোসেনও আছেন। তবে নিজের সেরা সময়ের থেকে অনেক দূরে তিনি। এছাড়া মিজানুর রহমানকে রেখেছে তারা। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে পারফর্ম করলেও বিপিএলের মতো মঞ্চে তাকে সেভাবে আলো ছড়াতে দেখা যায়নি।
আরিফুল হক, মুক্তার আলির মতো মিনি অলরাউন্ডারকে নিয়েছে তারা। আছেন অভিজ্ঞ অলক কাপালি। প্রথম শ্রেণী থেকে অবসরে যাওয়া অলক হয়ত লেগ স্পিনে রাখবেন ভূমিকা। ব্যাট হাতে তাকে সেরা অবস্থায় পাওয়ার বাস্তবতা আর নেই।
ঢাকার সবচেয়ে ভালো পেস আক্রমণ। তাসকিন তো আছেনই, দেশের উইকেটে বেশ কার্যকর পেসার শরিফুল ইসলাম আছেন দলটিতে। অভিজ্ঞ আল-আমিন হোসেনও তৃতীয় পেসার হিসেবে রাখতে পারেন বড় ভূমিকা।
স্পিন বিভাগে দলটি ভরসা রেখেছে আরাফাত সানির উপর। তিনি বিপিএলে বরাবর মাঝারি পারফর্ম করে থাকেন। তার বিকল্প হিসেবে থাকা মনির হোসেন দেশের সর্বোচ্চ ধাপের ক্রিকেটে কখনই ভালো করতে পারেননি, সাম্প্রতিক সময়ে নিয়মিতও না।
ঢাকাকে সাফল্য পেতে হলে আসলে সেরা তিন তারকা তাসকিন, সৌম্য আর মিঠুনের জ্বলে উঠার বিকল্প নেই।
৭ জানুয়ারি মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলবে ঢাকা।
ঢাকা ডমিনেটর্স
সরাসরি চুক্তিতে: তাসকিন আহমেদ, চামিকা করুনারত্নে (শ্রীলঙ্কা), দিলশান মুনাওয়ারা (শ্রীলঙ্কা)।
ড্রাফট থেকে দেশি: মোহাম্মদ মিঠুন, সৌম্য সরকার, শরিফুল ইসলাম, আরাফাত সানি, নাসির হোসেন, আল-আমিন হোসেন সিনিয়র, অলক কাপালি, মনির হোসেন, আরিফুল হক, মুক্তার আলি, মিজানুর রহমান, দেলোয়ার হোসেন।
ড্রাফট থেকে বিদেশি: শান মাসুদ (পাকিস্তান), আহমেদ শেহজাদ (পাকিস্তান), উসমান ঘানি (আফগানিস্তান), সালমান এরশাদ (কানাডা)।
Comments