আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩

ইংলিশদের উড়িয়ে দিয়ে নিউজিল্যান্ডের 'মধুর প্রতিশোধ'

৮২ বল বাকি থাকতেই মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর করে টম ল্যাথামের দল।

ইংলিশদের উড়িয়ে দিয়ে নিউজিল্যান্ডের 'মধুর প্রতিশোধ'

গত বিশ্বকাপ ফাইনালের কথা। স্রেফ কয়েকটা বাউন্ডারিই কম মেরেছিল নিউজিল্যান্ড। তাতেই শিরোপা হাতছাড়া হয়ে যায় তাদের। অথচ পুরো ম্যাচে লড়াই হয়েছিল সমানে সমান। টাই হওয়া ম্যাচে সুপার ওভারেও হয়েছিল টাই। সেই দুঃখ হয়তো কোনো কিছুতে লাঘব হওয়ার মতো নয়। তা না হলেও অন্তত কিছুটা সান্ত্বনা খুঁজে পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। ভারতে ২০২৩ সালের বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে সেই ইংল্যান্ডকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে তারা।

বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডকে ৯ উইকেটে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৮২ রান করে ইংল্যান্ড। জবাবে ৮২ বল বাকি থাকতেই মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর করে টম ল্যাথামের দল।

কিউইদের জয়ের ভিতটা এদিন গড়ে দেন তাদের বোলাররা। দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে লক্ষ্যটা নাগালেই রাখেন তারা। এরপর সেই ভিতে সহজেই ইমারত গড়েছেন ব্যাটাররা। বিশেষ করে, দুই ওপেনার ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবীন্দ্র। দুই ব্যাটারই তুলে নিয়েছেন সেঞ্চুরি। দ্বিতীয় উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ২৭৩ রানের জুটি গড়ে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন তারা।

তবে টস ভাগ্যও গিয়েছিল নিউজিল্যান্ডের পক্ষে। আহমেদাবাদের ব্যাটিংবান্ধব উইকেটেও তারা বেছে নেয় বোলিং। কারণ দিবা-রাত্রির এই ম্যাচে সন্ধ্যার সময় শিশির পড়ে বেশ। যে কারণে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং কিছুটা সহজ হয়ে যায় দলগুলোর জন্য। আর হয়েছেও তাই। দ্বিতীয় ইনিংসে অনেকটা অনায়াসেই ব্যাটিং করেছে নিউজিল্যান্ড। তেমন কোনো অস্বস্তি তৈরি করতে পারেননি ইংলিশ বোলাররা।

যদিও লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই খালি হাতে মাঠ ছাড়েন উইল ইয়ং। স্যাম কারানের করা প্রথম বলেই জস বাটলারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন এই ওপেনার। এরপর বাকি গল্প শুধুই কনওয়ে ও রাচিনের। তাদের অবিচ্ছিন্ন ২৭৩ রানের এই জুটি বিশ্বকাপ ইতিহাসের চতুর্থ সর্বোচ্চ জুটি। একইসঙ্গে নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ। এর আগে বিশ্বকাপে তাদের সর্বোচ্চ জুটিটি ছিল ক্রিস হ্যারিস ও লি জারমনের। ১৯৯৬ সালের ভারতের মাটিতেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চতুর্থ উইকেটে ১৬৮ রানের জুটি গড়েছিলেন তারা।

এদিন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে নেন কনওয়ে। যা তার ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসও বটে। ১২১ বলে ১৫২ রানের ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন তিনি। ১৯টি চার ও ৩টি ছক্কায় সাজান তার ইনিংস। আর ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন রাচিন। এর আগে কেবল একটি ফিফটি ছিল তার। ব্যাটিং অর্ডারে প্রোমোশন পেয়ে খেলেন হার না মানা ১২৩ রানের ইনিংস। ৯৬ বলে ১১টি চার ও ৫টি ছক্কা মারেন তিনি।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করেছিল ইংল্যান্ড। ছক্কা মেরে ইনিংসের সূচনা করা জনি বেয়ারস্টো আরেক ওপেনার ডাভিড মালানকে নিয়ে গড়েন ৪০ রানের জুটি। মালানকে উইকেটরক্ষক ল্যাথামের ক্যাচে পরিণত করে এই জুটি ভাঙেন ম্যাট হেনরি। এরপর প্রায় নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে দলীয় ১১৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে দলটি।

এরপর অধিনায়ক জস বাটলারের সঙ্গে ৭০ রানের জুটি গড়ে দলকে বড় পুঁজির দিকেই এগিয়ে নিচ্ছিলেন সাবেক অধিনায়ক জো রুট। এই জুটিও ভাঙেন হেনরি। বাটলারকেও উইকেটরক্ষকের ক্যাচে পরিণত করেন তিনি। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে ইংলিশদের আশা জাগিয়ে রেখেছিলেন রুট। তবে পার্টটাইম স্পিনার গ্লেন ফিলিপসের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান তিনি। এর আগে আগ্রাসী অলরাউন্ডার মঈন আলীও ফিলিপসের বলে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছিলেন। শেষ দিকে লেজের ব্যাটারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২৮২ রান করতে সমর্থ হয় ইংল্যান্ড।

ইংলিশদের হয়ে এদিন ১১ ব্যাটারের সবাই দুই অঙ্কের রান ছুঁয়েছেন। যা ওয়ানডে ক্রিকেটের ৫২ বছরের ইতিহাসে প্রথম ঘটনা। সর্বোচ্চ ৭৭ রানের ইনিংস খেলেন রুট। ৮৬ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় সাজান তার ইনিংস। ৪২ বলে সমান ২টি করে চার ও ছক্কায় ৪৩ রানের ইনিংস খেলেন বাটলার। বেয়ারস্টো করেন ৩৩ রান। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ১০ ওভার বল করে ৪৮ রানের খরচায় ৩টি উইকেট পান হেনরি। এছাড়া, ২টি করে উইকেট পান ফিলিপস ও মিচেল স্যান্টনার।

Comments

The Daily Star  | English

Stop destroying nature, plant trees instead of cutting: Yunus

Protecting the environment should be a citizen-led movement, he says

47m ago