‘প্রবাস’ পেনশন স্কিমে চাঁদার হার কমানো ও নিবন্ধন সহজ করার দাবি

বৈঠকে অংশ নেন বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাই ও উত্তর আমিরাত, জনতা ব্যাংক, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ব্যবসায়িক, সামাজিক ও বিভাগীয় কল্যাণ পরিষদ মিলে মোট ২৮টি প্রতিষ্ঠান। 
আমিরাতে প্রেসক্লাবের গোলটেবিল বৈঠক: ছবি: সংগৃহীত

সদ্য ঘোষিত সরকারি পেনশন স্কিমে প্রবাসীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গোলটেবিল বৈঠক করেছে দেশটিতে থাকা গণমাধ্যমকর্মীদের সংগঠন বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ইউএই।

গত শনিবার রাতে শারজা বাংলাদেশ সমিতির হলরুমে 'প্রবাসীদের পেনশন স্কিম: বাস্তবায়নের সহজ পথ' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে অংশ নেন বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাই ও উত্তর আমিরাত, জনতা ব্যাংক, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ব্যবসায়িক, সামাজিক ও বিভাগীয় কল্যাণ পরিষদ মিলে মোট ২৮টি প্রতিষ্ঠান। 
  
বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল বি এম জামাল হোসেন। গোলটেবিল বৈঠকের ভার্চুয়ালি অংশ নেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব সভাপতি শিবলী আল সাদিক। পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান জনি। 

শুরুতে পেনশন স্কিমের ওপর বিশেষ বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কনস্যুলেটের লেবার কাউন্সিলর আবদুস সালাম। 
বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর কামরুল হাসান, প্রথম সচিব (প্রেস) আরিফুর রহমান, প্রথম সচিব (শ্রম) শাহানাজ পারভীন।

এ সময় বিভিন্ন মতামত, প্রশ্নোত্তর ও পেনশন সংক্রান্ত নানা বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ কনস্যুলেট লেডিস গ্রুপ, দুবাই বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল, বাংলাদেশ সমিতি শারজা, বাংলাদেশ সমিতি আজমান, বাংলাদেশ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উম্ম আল কোয়েন, বরিশাল বিভাগ কল্যাণ পরিষদ, চট্টগ্রাম সমিতি, বৃহত্তর ফরিদপুর সমিতি, গ্রেটার কুমিল্লা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, এনআরবি খুলনা, সিলেট বিভাগ উন্নয়ন পরিষদ, বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন ইন্টারন্যাশনাল সিটি, টেকনাফ সমিতি, রাঙ্গুনিয়া সমিতি ও আরবান রিডারসের কর্মকর্তা, সভাপতি, সম্পাদক ও দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ। 

বক্তারা পেনশন স্কিমে প্রান্তিক প্রবাসীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য বিদেশে থাকা মিশনের পাশাপাশি বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সংগঠনের জোরালো ভূমিকা পালনের আহবান জানান। 

এ ছাড়া সরকারি পেনশনের বিপরীতে প্রবাসীদের জন্য ঘোষিত প্রবাস পেনশন স্কিমকে বৈষম্য উল্লেখ করে চাঁদার পরিমাণ কমানোর দাবি করেন তারা। রেমিট্যান্স প্রেরণে যে প্রণোদনা সরকার দিচ্ছে সেটাকে পেনসনে রূপান্তর করারও দাবি করেন কেউ কেউ। 

বক্তারা বলেন, পেনশন স্কিমে প্রবাসীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হলে প্রথমত চাঁদার হার কমাতে হবে। দ্বিতীয়ত নিবন্ধন প্রক্রিয়া আরও সহজিকরণ করতে হবে। পাশাপাশি প্রান্তিক প্রবাসীদের কাছে যথাযথভাবে তথ্য পৌঁছাতে হবে। 

প্রবাসীদের দাবির প্রেক্ষিতে ভার্চুয়াল বক্তব্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, প্রবাস স্কিমে চাঁদার হার কমানো যায় কি না বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হয়েছে। 

এ ছাড়া পাসপোর্টের তথ্য দিয়েও পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন প্রবাসী। তবে সার্ভারের জটিলতা কাটিয়ে পাসপোর্টের বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছেন তারা। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বি এম জামাল হোসেন বলেন, 'পেনশন স্কিমের বিষয়টিতে আমরা অধিক গুরুত্ব দিচ্ছি। কারণ পেনশনের মাধ্যমে সবার সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। প্রবাসীদের মধ্যে এই বিষয়ে আরও জিজ্ঞাসা থাকলে তাও মিশনকে জানাতে পারেন। আমরা যথাযথ তথ্য সহায়তা প্রদান করব। প্রয়োজনে পেনশন কর্তৃপক্ষ ও অর্থবিভাগ থেকে উত্তর এনে দিব।'
  
এ ছাড়া প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন বাংলাদেশ লেডিস গ্রুপের সভাপতি আবিদা হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রেবেকা সুলতানা, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুবাইয়ের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক সাকিয়া সুলতানা, জনতা ব্যাংক আবুধাবির সিইও মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, জনতা ব্যাংক দুবাইয়ের ম্যানেজার জামাল হোসেন, জনতা ব্যাংক আবুধাবির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার হাবিব উল্লাহ।
 
কমিউনিটি সংগঠকদের মধ্যে আলোচনা করেন, বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সিনিয়র সহসভাপতি আইয়ুব আলী বাবুল, সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ।
 
বাংলাদেশ সমিতি শারজার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী করিমুল হক, বাংলাদেশ সমিতি আজমানের সভাপতি আবদুল আলিম, সাধারণ সম্পাদক শিকদার শাফায়েত উল্লাহ, আরবান রিডারসের সংগঠক নওশের আলী, বৃহত্তর ফরিদপুর সমিতির সভাপতি বুলবুল আহমেদ মুকুল, গ্রেটার কুমিল্লা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন কাউসার, সহসভাপতি ও বরিশাল বিভাগ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি রাজা মল্লিক, এনআরবি খুলনার কোঅর্ডিনেটর প্রকৌশলী মইনুল ইসলাম, জয়েন্ট কোঅর্ডিনেটর শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশীদ, সিলেট বিভাগ উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম, বাংলাদেশ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উম্ম আল কোয়েনের সভাপতি সবুজ হাসান, বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন ইন্টারন্যাশনাল সিটির সভাপতি মারুফ উল হক বিপুল, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, টেকনাফ সমিতির সভাপতি ড. আবদুস সালামসহ প্রায় ৬০ জন প্রবাসী।

লেখক: আমিরাতপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক 

Comments