অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট সহজলভ্য করা হোক

প্রতিদিনই করোনা শনাক্তের সংখ্যা আগের দিনের সংখ্যাকে ছাপিয়ে গেলেও হতাশাজনকভাবে সরকার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে হস্তক্ষেপ না করার মনোভাব নিয়ে আছে।
যে গতিতে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ছড়াচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে, সেখানে দ্রুত রোগ শনাক্তের জন্য প্রয়োজনীয় র্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট সহজলভ্য করার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় আমরা বিস্মিত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ২৩টি ব্র্যান্ডের র্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট সরকার জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে। দেশের ৫৪৫টি সরকারি ও ১০০টি বেসরকারি হাসপাতালে এই পরীক্ষার সুবিধা আছে।
ব্যক্তিগত পর্যায়ে এর ব্যবহার এখনো অনুমোদিত নয়।
তবে দ্য ডেইলি স্টারের কাছে যে তথ্য আছে তাতে একটি ব্র্যান্ডের টেস্ট কিট এখন যে কেউ বাজার থেকে কিনতে পারছেন। কিন্তু, প্রশ্ন হলো দেশে যখন ব্যাপক হারে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ছে তখন অনুমোদিত সব ব্র্যান্ডের টেস্ট কিট ন্যায্যমূল্যে বাজারে উন্মুক্ত করে দেওয়াই কি সরকারের জন্য যৌক্তিক নয়?
আগে যখন সংক্রমণের গতি ধীর ছিল তখন অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট উন্মুক্ত না করার সিদ্ধান্ত যুক্তিযুক্ত ছিল। এখন যে গতিতে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে মহামারির তৃতীয় ঢেউ দেখা যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই সময় আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত শনাক্ত করে আইসোলেশন ও চিকিৎসা নিশ্চিত করারই যথার্থ।
র্যাপিড অ্যন্টিজেন টেস্ট কিটের সহজলভ্যতা ঠিক এই কাজটাতেই সহায়তা করতে পারে। নির্ভুল ফলাফলের জন্য পিসিআর টেস্টের সমকক্ষ না হলেও এই পদ্ধতি খরচসাপেক্ষ হওয়ায় অনেকেই আক্রান্ত হয়েও পরীক্ষা করেন না, যার কারণে অন্যরাও ভাইরাসের সংস্পর্শে চলে আসেন।
এখনো অনেকের জন্য র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট ব্যয়বহুল মনে হলেও এর টেস্ট কিট বাজারে উন্মুক্ত করা হলে নিশ্চিতভাবেই খুচরা দাম কমে যাবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ঘরে বসে পরীক্ষা করা যায় এমন টেস্ট কিট বাজারে আনার ব্যাপারটি বিবেচনা করা হবে যদি অন্য দেশগুলো এমনটা করে থাকে। তবে এখনই সেই পথে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই।
এখানে উল্লেখ্য, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ছড়ানোর অনেক আগেই ব্রিটেন এ ধরনের টেস্ট কিট বাজারে সহজলভ্য করেছে। বাংলাদেশে সংক্রমণের রাশ টানতে দ্রুত রোগী শনাক্ত করার ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা যে গুরুত্ব দিচ্ছেন তাতে আমরা মনে করি র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট বাজারে সহজলভ্য করার ব্যাপারে সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এটাই সঠিক সময়।
এতে যেমন পরীক্ষাটি কম খরচে করা সম্ভব হবে তেমনি পুরো প্রক্রিয়াটি দ্রুত ও সহজ হবে। এতে মানুষ তাদের রোগের উপসর্গ আরও গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত চিকিৎসা নিতে উৎসাহী হবে। যেমনটা বলেছে জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থার প্রধান—ওমিক্রনের উপসর্গ মৃদু মনে হলেও এর ভয়াবহতাকে তুচ্ছজ্ঞান করা বিপজ্জনক হতে পারে।
Comments