ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জরুরি উদ্যোগ প্রয়োজন

আপাতত মনে হচ্ছে দেশে করোনাভাইরাস কিংবা ডেঙ্গু কোনটির সংক্রমণ সহজে নিয়ন্ত্রণে আসবে না। সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হলো- চলতি বছরে বেশিরভাগ ডেঙ্গু রোগী বিপজ্জনক সেরোটাইপ-৩ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হচ্ছেন। রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী থেকে সংগৃহীত ২০টি নমুনা পরীক্ষা করেছে, যার প্রতিটিতে এই ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে।

আপাতত মনে হচ্ছে দেশে করোনাভাইরাস কিংবা ডেঙ্গু কোনটির সংক্রমণ সহজে নিয়ন্ত্রণে আসবে না। সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হলো- চলতি বছরে বেশিরভাগ ডেঙ্গু রোগী বিপজ্জনক সেরোটাইপ-৩ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হচ্ছেন। রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী থেকে সংগৃহীত ২০টি নমুনা পরীক্ষা করেছে, যার প্রতিটিতে এই ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে।

বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত এ বছরের ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল দুই হাজার ৯৮। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, গত ৭ জুলাই পর্যন্ত এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৫৬৫। অবাক করা বিষয় হলো- ডেঙ্গুর একটি প্রবণতা হলো- এটি এক বছর বিরতিতে বেশি পরিমাণে সংক্রামিত হয়।

স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং অন্তত ১৭৯ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন।

আইইডিসিআর ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন, সেরোটাইপ-৩ ভ্যারিয়েন্টটি শুধুমাত্র বিপজ্জনক নয়। একইসঙ্গে আগে যারা এর যে কোনো একটি ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছিলেন তাদের আরও মারাত্মক হতে পারে। এ বছর যারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের অনেকের দুর্লভ প্রকৃতির ডেঙ্গু হেমারেজিক ফিভার উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। এ ধরণের রোগীর দ্রুত ও সুষ্ঠু চিকিৎসা প্রয়োজন।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে, বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট ডেঙ্গুর এ ধরনের ভ্যারিয়েন্ট মোকাবিলার সবচেয়ে খারাপ সময়। কারণ, ইতোমধ্যে করোনার দৈনিক সংক্রমণ ২৮ জুলাই ১৬ হাজার অতিক্রম করেছে, যা আরও বড় ধরনের সংক্রমণের আভাস দিচ্ছে।

আরেকটি বিষয় বলতেই হবে, সব হাসপাতাল কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে ভারাক্রান্ত অবস্থায় আছে। আইসিইউ শয্যা পাওয়া দুর্লভ হয়ে উঠেছে অথবা একেবারে নেই বললেই চলে। ইতোমধ্যে, বেশিরভাগ ডেঙ্গু রোগী বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

জানা গেছে, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুটি ডেঙ্গু ওয়ার্ড করোনা রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহার করা হচ্ছে।

নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগেই ডেঙ্গু সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিকে প্রতিহত করতে হবে। শুধুমাত্র সেরোটাইপ-৩ ভ্যারিয়েন্টটি বেশি বিপজ্জনক বলে নয়, বরং যেসব রোগী একইসঙ্গে ডেঙ্গু ও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা কম বলে জানা গেছে। এই দুটি ভাইরাসের নির্ধারিত চিকিৎসা পদ্ধতি পরস্পর বিপরীত।

তবে, আশার কথা হচ্ছে- দ্য ডেইলি স্টারের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। যেখানে ছয়টি হাসপাতালকে প্রয়োজনীয় জনবলসহ ডেঙ্গুর চিকিৎসায় ডেডিকেটেড করার কথা বলা হয়েছে। আমরা আশা করছি, এই প্রস্তাবটি দ্রুত অনুমোদন পাবে এবং বাস্তবায়িত হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের অনুরোধ, এই হাসপাতালগুলোর প্রতিদিনেরে কার্যক্রম কার্যকর ও ফলপ্রসূ করতে উপযুক্ত পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা করার। এই পরিকল্পনার বাস্তবায়নে দেরি করা উচিত হবে না। এছাড়া, করোনার এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে ২০১৯ সালের মতো অথবা তার চেয়েও ভয়াবহ ডেঙ্গু পরিস্থিতি এড়াতে বিষয়টিকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত হবে না।

প্রতিবেদনটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English
Workers rights vs corporate profits

How some actors gambled with workers’ rights to save corporate profits

The CSDDD is the result of years of campaigning by a large coalition of civil society groups who managed to shift the narrative around corporate abuse.

9h ago