নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা ফিরিয়ে আনুন

ছবি: স্টার ফাইল ফটো

দেশে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করা হয়েছে। এই প্রথম আইনের মাধ্যমে দেশে ইসি প্রতিষ্ঠিত হলো। সার্চ কমিটির মনোনয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে যদিও আমাদের কিছু বক্তব্য ছিল, মনোনীত ব্যক্তিদের নিয়েও আমাদের আপত্তি ছিল। তবে এ সব এখন অতীত।

আমরা নতুন সিইসি ও অপর ইসিদের স্বাগত জানাই। তারা সবচেয়ে কঠিন ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিয়েছেন। দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক হিসেবে তারা কমিশনের ভালোর জন্য এতে পরিবর্তন আনবেন বলে আমরা আশা করি।

নিয়োগ পাওয়ার পর সিইসি যে বক্তব্য দিয়েছেন, আমরা তা-ই পুনর্ব্যক্ত করছি। তিনি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজের বিষয়ে ইঙ্গিত করেছেন, আর সেটি হচ্ছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।

আমরা আবারও বলছি, গত ৫ বছরে এই প্রতিষ্ঠানটির বিশ্বাসযোগ্যতা ক্রমেই ধ্বংস হয়েছে। নির্বাচন ও রাজনীতির ওপর থেকে জনগণের বিশ্বাস চলে গেছে। নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতির ক্রমাগত কমে যাওয়া তারই প্রমাণ। এটা খুবই দুঃখজনক যে নির্বাচনের স্বাধীনতা ও বিনা বাধায় ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা এই দেশের সংবিধানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদ।

আমরা বিশ্বাস করি, সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে নতুন ইসি তাদের দায়িত্বের গুরুত্ব বোঝেন। তারা কীভাবে নিজেদের দায়মুক্তি দেবেন এবং জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করবেন, সে সিদ্ধান্ত তারাই নেবেন। তবে গত ৫ বছরের হিসাবে এটি অনেক বড় প্রশ্ন।

ইসির কাছে জাদুর কাঠি নেই। বরং তাদের কিছু প্রতিবন্ধকতা আছে, যা দূর করতে সময় লাগবে। আমরা আশা করি নতুন ইসি তাদের পূর্বসূরীদের কাজ থেকে বস্তুনিষ্ঠ শিক্ষা নেবে। কেবল নির্বাচনের আয়োজন করাই তাদের কাজ নয়। প্রতিটি স্তরে স্বচ্ছতা ও দখলদারিত্বমুক্ত এবং সবাই সমানভাবে অংশ নিতে পারে এমন নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করে নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা পুনরুদ্ধার করতে যা কিছু দরকার, সবই তাদের করতে হবে।

নতুন কমিশনের সদস্যদের বেশিরভাগই সাবেক সফল আমলা। আগে তাদের এমন পরিবেশে কাজ করতে হয়েছে, যেখানে তাদের হয়তো রাজনৈতিক ঊর্ধ্বতনদের আদেশ মেনে চলতে হয়েছে। তবে এখন তাদের এই নতুন অবস্থানে তারা কেবল দেশের জনগণ ছাড়া আর কারো কাছে দায়বদ্ধ নন। মনে রাখতে হবে যে জনগণ সবসময় তাদের পর্যবেক্ষণ করবে। এ জন্য তাদের অবশ্যই ন্যায্য, নৈতিক ও অপ্রতিরোধ্য নীতিতে কাজ করতে হবে।

আমরা সতর্ক করতে চাই যে ব্যর্থতার কোনো বিকল্প নেই। সফলতার আনন্দ এতটাই বেশি হয় যে, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে না পেরে অনুশোচনা করলে তাতে কিছুই আসবে যাবে না।

Comments

The Daily Star  | English

Govt relieves Kuet VC, Pro-VC of duties to resolve crisis

A search committee will soon be formed to appoint new candidates to the two posts

1h ago