দেশে বাড়ছে বাণিজ্যিক যানবাহনের উৎপাদন ও সংযোজন

বাংলাদেশের অর্থনীতির ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির কারণে বাণিজ্যিক যানবাহনের চাহিদা দ্রুতগতিতে বাড়ছে। ফলে স্থানীয় উদ্যোক্তারা দেশে গাড়ি সংযোজনের কারখানা তৈরিতে বিনিয়োগ করে যাচ্ছেন। নতুন এই বিনিয়োগে নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে, গতিশীল হবে দেশের অর্থনীতি।
নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, 'বাংলাদেশের অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়ন হচ্ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে বাণিজ্যিক যানবাহনের চাহিদা।'
এ ছাড়াও, যেহেতু সরকার নসিমন-করিমনের মতো অবৈধ যানবাহন কমিয়ে আনছে, তাই এদের বৈধ বিকল্পের চাহিদাও বাড়ছে।
'প্রকৃতপক্ষে, চাহিদা এতটাই বেড়েছে যে আমরা শুধুমাত্র সংযোজন করার পরিবর্তে উৎপাদনের দিকে আগাচ্ছি', যোগ করেন তিনি।
পিকআপ ট্রাক সংযোজনে নিটল-নিলয় গ্রুপ ও ভারতের টাটা কিশোরগঞ্জে একটি কারখানা করেছে। যৌথ অংশীদারি এই কোম্পানির নাম নিটা।
দেশে বাণিজ্যিক যানবাহনের উৎপাদন বাড়লে দুই দিক থেকে ভোক্তারা উপকৃত হবেন। এতে একদিকে যেমন দাম কমবে তেমনি হঠাৎ বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাড়লেও যানবাহনের দামে প্রভাব পড়বে না।
বাণিজ্যিক যানবাহনের সাম্প্রতিক বিক্রি নিয়ে মাতলুব বলেন, করোনাভাইরাস মহামারিতে বাজার প্রভাবিত হয়েছে, কিন্তু এখন পরিস্থিতির উন্নয়ন হচ্ছে।
'আমি আশা করি ২০২২ হবে বাণিজ্যিক যানবাহন খাতের জন্য একটি অসাধারণ বছর', যোগ করেন তিনি।
ইফাদ অটোসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিন আহমেদ বলেন, 'যেহেতু স্থানীয় অবকাঠামোর উন্নয়ন হচ্ছে, বাণিজ্যিক যানবাহনের স্থানীয় চাহিদাও একইসঙ্গে বাড়ছে।'
১৯৮৮ সাল থেকে ইফাদ অটোস ভারতের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্যিক যানবাহন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অশোক-লিল্যান্ডের যানবাহন বিপণন করছে।
তাসকিন জানান, আগামী বছরগুলোতেও চাহিদা বাড়তে থাকবে।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষরা এখন লঞ্চ সেবার ওপর নির্ভরশীল, কিন্তু পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর এ অঞ্চলের কমপক্ষে সাতপটি জেলার পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে। অর্থাৎ বাণিজ্যিক যানবাহনের চাহিদা বেশি থাকবে।
একইভাবে, পায়রা বন্দর চালুর পর এবং পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য বাড়লেও বাণিজ্যিক যানবাহনের চাহিদা বাড়বে।
এই সম্ভাবনা সম্পর্কে ধারণা পেয়ে অনেক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে তাদের যানবাহন সংযোজন করার চেষ্টা করছে।
সম্প্রতি এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি ঘোষণা দিয়েছে, তারা চীনের একটি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় গাজীপুরের শ্রীপুরে তাদের শিল্প পার্কে ডাবল কেবিন পিকআপ উৎপাদন করা শুরু করবে। এ বছরের প্রথম দিকে তারা এই শিল্প পার্ক উদ্বোধন করে।
এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশনের মোটরযান বিভাগের চিফ বিজনেস অফিসার এসএম জসিম উদ্দীন বলেন, 'বাণিজ্যিক যানবাহনের চাহিদা দেশের অর্থনীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ওঠানামা করে।'
'আমাদের অর্থনীতিতে ভালো সুযোগ থাকায় আমরা ২০১৫ সাল থেকে বাণিজ্যিক যানবাহন সংযোজন শুরু করি। বর্তমানে আমরা টি৮ এর মতো নতুন মডেল বের করছি। গত ছয় মাসে অর্থনীতির চাকা আবার চালু হওয়াতে আমরা বাণিজ্যিক যানবাহনের বিক্রির ধারা পুনরুদ্ধার করতে পেরেছি', যোগ করেন তিনি।
অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান
Comments