'ঈদে সবাই ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ হয়ে যায়'

কর্ম জীবনের ব্যস্ততায় স্বাভাবিক দিনগুলোতে উপভোগ করার সুযোগ থাকে খুব কমই। সেখানে ঈদ এমনই একটা উৎসব যা দৈনন্দিন ব্যস্ততার বিরতি দিয়ে প্রিয়জনদের সঙ্গে উপভোগ করার কিছুটা সুযোগ করে দেয়। বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির জন্যও অভিজ্ঞতাটা আলাদা নয়।

তবে ঈদে যেন একটু ভিন্ন অভিজ্ঞতারই সম্মুখীন হন জ্যোতি। 'পরিবারের সদস্য থেকে আত্মীয়, সবাই ঈদে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ হয়ে যায়!' দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে ঈদ নিয়ে আলাপকালে হেসে এমন অভিজ্ঞতার কথাই বলেন জ্যোতি।

মূলত বিভিন্ন আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবরা জ্যোতিকে পেয়ে যেন ক্রিকেট বিশ্লেষক হয়ে ওঠেন। তাকে নানা ধরণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। অধিনায়কের ভাষায়, 'ঢাকা এবং আমার নিজের শহর থেকে অনেক আত্মীয়-স্বজন আমাদের এখানে জড়ো হয়। যখন আমি বাড়িতে থাকি, তখন আলোচনা হয় ক্রিকেট নিয়ে। সবাই ক্রিকেট বিশ্লেষকদের মতো আমাকে তাদের মতামত ও পরামর্শ দেয়!'

ঈদের দিনের শুরুতে অবশ্য পরিবারের সঙ্গে নানামুখী কর্মকাণ্ডেই দিন কাটে অধিনায়কের, 'আমার বড় বোনের বিয়ে হওয়ার পর থেকে আমার কাঁধে অনেক গৃহস্থালির দায়িত্ব পড়েছে। ঈদের সময়, আমি সাধারণত তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে আমার বাবা ও ভাইকে তাদের নামাজের জন্য প্রস্তুত করতে সাহায্য করি। তারপর আমি আমার মায়ের সঙ্গে কিছু খাবার রান্না করে অতিথিরা যখন আমাদের বাড়িতে আসে তাদের পরিবেশন করার চেষ্টা করি।'

করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে গত দুই বছর ঈদ উদযাপন করতে পারেননি কেউই। সে দুঃস্মৃতি এখনও ভুলতে পারেননি সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ অভিযানে টাইগ্রেসদের নেতৃত্ব দেওয়া ময়মনসিংহের এই ক্রিকেটার। তবে সে ভয়াবহতা কাটিয়ে উঠতে পারায় দারুণ খুশি জ্যোতি।

'আমি মনে করি এই বছর, আমি আমার পুরো পরিবারের সঙ্গে আন্তরিকভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারব। গত দুই বছর খুব কঠিন ছিল কারণ আমার আত্মীয়রা লকডাউন প্রোটোকলের কারণে একত্রিত হতে পারেনি। এছাড়াও, এই ঈদটি আমার জন্য খুব বিশেষ কারণ আমি বিদেশ থেকে পুরো পরিবারের কেনাকাটা করতে পেরেছি,' নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন বলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

একজন পেশাদার ক্রিকেটার হওয়ার কারণে জ্যোতিকে একাধিক ঈদেই তার পরিবারের কাছ থেকে দূরে কাটাতে হয়েছে। বিদেশের সেই তিক্ত মধুর স্মৃতিও স্মরণ করেন ২৪ বছর বয়সী এ ক্রিকেটার। দেশের বাইরেও সেই ঈদগুলোকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য তার সতীর্থদের প্রতি কৃতজ্ঞও অধিনায়ক।

'২০১৫ সালে প্রথমবার যখন আমি ঈদের সময় আমার পরিবার থেকে দূরে ছিলাম, আমি দেখেছিলাম আমার সিনিয়ররা ঈদ উপভোগ করছেন কিন্তু আমি খুব দুঃখিত ছিলাম। ঈদের আগের রাতে আমার কোথাও যেতে ভালো লাগছিল না। তবে আমি নিজেকে মনে করিয়ে দিয়েছিলাম যে এই ত্যাগ আমার কাজের অংশ।

'(ফারজানা হক) পিংকি আপা এবং রিতু মনি আমার পাশে ছিলেন এবং আমার মন ভালো চেষ্টা করেছিলেন যখন আমি তখন কিছুটা ছোট ছিলাম। পরের দিন সকালে তারা খুব ভোরে উঠে কোথাও থেকে একটি রাইস কুকার কিনে সেমাই রান্না করে এবং আমার জন্য নুডুলস। আমি যখন জেগে উঠি, আমি তাদের ভাবভঙ্গী দেখে খুব অবাক হয়েছিলাম,' স্মরণ করেন জ্যোতি।

২০১৯ সালে ঈদ উল-আযহার সময় যখন তারা অ্যাওয়ে ম্যাচে খেলছিলেন তখন সব নারী ক্রিকেটারদের বিসিবি সভাপতির পাঠানো 'সালামি'র কথাও স্মরণ করেন অধিনায়ক।

শৈশবে ঈদের রোমাঞ্চ অনেকটাই আলাদা বলে মনে করেন জ্যোতি। কারণ উৎসবের প্রস্তুতি তিন-চার দিন আগে শুরু হতো। এবার তার পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে ভালো সময় কাটানোকেই অগ্রাধিকার দেবেন তিনি, 'এই ঈদের জন্য আমি এখনো কোনো বিশেষ পরিকল্পনা করিনি। আগে সারাদিন গান শুনতাম এবং টেলিভিশনে অনুষ্ঠান দেখতাম। আমার মনে হয় সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে বের হব, যদিও অনেক ভিড় জায়গা আমি পছন্দ করি না।'

Comments

The Daily Star  | English
CAAB pilot licence irregularities Bangladesh

Regulator repeatedly ignored red flags

Time after time, the internal safety department of the Civil Aviation Authority of Bangladesh uncovered irregularities in pilot licencing and raised concerns about aviation safety, only to be overridden by the civil aviation’s higher authorities.

10h ago