উইকেট বিলিয়ে দিয়ে ৮০ রানেই শেষ বাংলাদেশ
৩ উইকেট হারিয়ে আগের দিনই মহাবিপাকে ছিল বাংলাদেশ। সেই দুরবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে ব্যাটারদের কাছ থেকে প্রত্যাশা ছিল নিবেদন ও ক্রিজে থাকার দৃঢ় মানসিকতা। কিন্তু লক্ষ্য তাড়ার পথে যাওয়া তো দূরে থাক, লড়াইয়ের ন্যূনতম ছাপও রাখতে পারল না টাইগাররা। একের পর এক বিলাসী শট খেলে ছুঁড়ে দিলেন মুশফিকুর রহিম-মুমিনুল হক-লিটন দাসরা। বিশাল হারে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে দুই টেস্টের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলো রাসেল ডমিঙ্গোর শিষ্যরা।
সোমবার পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টের চতুর্থ দিনের সকালে বাংলাদেশ ব্যাট করতে পেরেছে কেবল এক ঘণ্টা। ৪১৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় দ্বিতীয় ইনিংসে তারা গুটিয়ে গেছে কেবল ৮০ রানে। টেস্টে এটি তাদের চতুর্থ সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ। এদিন মাত্র ১৪.২ ওভার খেলে বাকি ৭ উইকেট খোয়ায় সফরকারীরা, যোগ করতে পারে আর ৫৩ রান। ফলে প্রোটিয়ারা জিতেছে ৩৩২ রানের বিশাল ব্যবধানে।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সবগুলো উইকেট তুলে নেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই স্পিনার মিলেই। ম্যাচ ও সিরিজসেরা বাঁহাতি কেশব মহারাজ ৭ উইকেট নিতে খরচ করেন ৪০ রান। অফ স্পিনার সাইমন হার্মার ৩৪ রানে শিকার করেন ৩ উইকেট। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে হার্মার পেয়েছিলেন ৩ উইকেট, মহারাজ ২ উইকেট।
দিনের শুরু থেকেই দেখা যেতে থাকে টার্ন ও বাউন্স। প্রথম ওভারেই মুশফিকের বিপক্ষের এলবিডব্লিউয়ের রিভিউয়ের আবেদন করেন হার্মার। কিন্তু বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায়, বল চলে যেত স্টাম্পের ওপর দিয়ে। ফলে রিভিউ হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা, বেঁচে যান মুশফিক। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন তিনি। পরের ওভারে জায়গায় দাঁড়িয়ে মহারাজকে ড্রাইভ করতে গিয়ে স্লিপে প্রোটিয়া অধিনায়ক ডিন এলগারের হাতে ক্যাচ দেন।
বাজে শটে মহারাজের পরের ওভারে উইকেট বিলিয়ে দেন বাংলাদেশ দলনেতা মুমিনুল। সিরিজে টানা চার ইনিংসে দুই অঙ্কে যেতে পারেননি তিনি। সুইপ করতে গিয়ে টপ-এজ হয়ে ক্যাচ আউট হন। প্রথম ইনিংসে ভালো ব্যাট করা ইয়াসির আলী রাব্বিকে যেন পেয়ে বসেছিল তাড়াহুড়ো। হার্মারের বলে আগ্রাসী শট খেলে ডিপ মিড-উইকেটে লিজাড উইলিয়ামসের তালুবন্দি হন তিনি। রানের খাতাও খোলা হয়নি তার।
আরও একবার হতাশ করেন সাম্প্রতিক সময়ে ছন্দে থাকা লিটন। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে তিনি স্টাম্পড হলে ৫ উইকেট পূর্ণ হয় মহারাজের। নিজের পরের ওভারে জোড়া শিকার ধরেন তিনি। মেহেদী হাসান মিরাজকে রিভিউ নিয়ে ফেরানোর পর এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন খালেদ আহমেদকে। এরপর তাইজুল ইসলামকে একই কায়দায় সাজঘরে পাঠিয়ে বাংলাদেশের দুর্দশার অবসান ঘটান হার্মার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস: ৪৫৩
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ২১৭
দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় ইনিংস: ১৭৬/৬ (ইনিংস ঘোষণা)
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস: (আগের দিন ২৭/৩) ২৩.৩ ওভারে ৮০ (মুমিনুল ৫, মুশফিক ১, লিটন ২৭, ইয়াসির ০, মিরাজ ২০, তাইজুল ০, খালেদ ০, ইবাদত ০*; মহারাজ ৭/৪০, হার্মার ৩/৩৪)
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৩২ রানে জয়ী।
সিরিজ: দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়ী দক্ষিণ আফ্রিকা।
Comments