এমবাপে রিয়ালের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেনি: পেরেজ

পিএসজির সঙ্গে চুক্তি নবায়নের ঘোষণা আসার পর থেকেই শুরু। কিলিয়ান এমবাপেকে 'বিশ্বাসঘাতক' বলে রীতিমতো গালিগালাজ শুরু করে দেয় রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকরা। লস ব্লাঙ্কোসসের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন বলেই মনে করেন তারা। এমনকি ক্লাবের শিরোপা জয়ের উৎসবেও এমবাপেকে গালিগালাজ করতে ছাড়েননি মাদ্রিদিস্তারা। তবে ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ বলছেন ভিন্ন কথা।

রিয়ালের সঙ্গে এমবাপের আলোচনা এগিয়েছিল অনেক দূর। কিন্তু হুট করেই পিএসজিতে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ফ্রান্স ও কাতারের প্রেসিডেন্ট ও প্যারিসের মেয়রের চাপেই তার মধ্যে পরিবর্তন আসে বলে মনে করেন পেরেজ। সম্প্রতি স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম এল চিরিঙ্গিতো টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিষয়টি বিস্তারিত তুলে ধরেন রিয়াল প্রেসিডেন্ট।

এমবাপে বিশ্বাসঘাতকতা করেননি উল্লেখ করে পেরেজ বলেন, 'এমবাপের ব্যাপারটি সহজ, সে আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেনি। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলার ইচ্ছার কথা সে সবাইকে বলেছিল। গত আগস্টে ওরা তাকে ছাড়েনি, আমাদের প্রস্তাব গ্রহণ করেনি পিএসজি। আমরা অপেক্ষা করেছি। সে সবসময় বলেছে, তার স্বপ্ন রিয়ালে আসা। কিন্তু ১৫ দিন আগে সব বদলে যায়। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপে তার মধ্যে কিছু বাধ্যবাধকতা চলে আসে।'

আইনগত কারণে তারা প্রাক-চুক্তি করতে পারেননি বলে জানান রিয়াল প্রেসিডেন্ট, 'তার ভেতরে এই পরিবর্তন আমরা খেয়াল করেছিলাম। হুট করেই তখন এমন এক এমবাপেকে দেখলাম, যে আর আগের মতো নেই। যে এমবাপেকে আমি আনতে চেয়েছিলাম, এই এমবাপে সেরকম নয়। মনে হচ্ছিল, তার স্বপ্নই বদলে গেছে। তাকে ফোন করেছিল (ইমানুয়েল) ম্যাক্রোঁ, প্রচণ্ড চাপ ছিল। রাজনৈতিক চাপ, দুটি দেশের ব্যাপার… ২৩ বছর বয়সী একজনের জন্য অনেক চাপ এসব। আইনগত কারণে আমরা প্রাক-চুক্তি করতে পারিনি।'

তবে এই এমবাপেকে তিনি চিনেন না বলেই জানান পেরেজ, 'যাই হোক, বদলে যাওয়া এমবাপেকে আমি চিনি না। বলা ভালো, এই এমবাপে আমার এমবাপে নয়। দুটি দেশের প্রেসিডেন্ট ফোন করা মানে সেটা স্বাভাবিক ব্যাপার নয়, এমনকি প্যারিসের মেয়রও ফোন করেছিল… এরপর কাতার থেকে এতো লোভনীয় প্রস্তাব… সে চাপে পড়েছে এবং সহজ পথটা বেছে নিয়েছে। আমার মাথায় আসে না এটা, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট কীভাবে তাকে ফোন করেন! স্পেনের রাজা কি এভাবে কোনো ফুটবলারকে বলতে পারেন?'

এমবাপে রিয়ালে খেলে এমনটা তার মাও চেয়েছিলেন বলে জানান পেরেজ, 'এমবাপের মা চাচ্ছিলেন ছেলে রিয়ালে আসুক, কারণ মা তো ছেলের ছোটবেলার স্বপ্নের কথা জানেন। ওর মায়ের সঙ্গে কথা হয়নি আমার। তবে শুনেছি তিনি বিব্রত। এমবাপের প্রতি আমার অনুরাগ এখনও আছে। তবে ক্লাবের চেয়ে বড় কেউ নয়। আমাদের এই ক্লাবে কিছু মূল্যবোধ আছে, যা আমরা কখনোই বদলাতে চাই না। সে আমাকে একটি ম্যাসেজ পাঠিয়েছিল। তবে আমি তো আগে থেকেই খেয়াল করছিলাম যে সে বদলে গেছে।'

সবমিলিয়ে ক্লাবের চেয়ে বড় কেউ নয় বলেই জানান তিনি, 'মাদ্রিদিস্তারা হয়তো হতাশ, তবে কোনো খেলোয়াড়ই ক্লাবের চেয়ে বড় হতে পারে না। রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে কোনো ফুটবলারই ক্লাবের চেয়ে বড় নয়। আমরা কারও জন্যই ব্যতিক্রমী কিছু করে ক্লাব ব্যবস্থাপনাকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না। আমি এমবাপেকে শুভ কামনা জানাই। সে দুর্দান্ত এক ফুটবলার ও অনেক মানুষের মুখে হাসি ফোটাবে। তবে ক্লাবের চেয়ে বড় কেউ নয়।'

Comments

The Daily Star  | English

Customs flags hurdles at 3rd terminal of Dhaka airport

Customs House Dhaka said it has found more than a dozen issues related to infrastructure, security, and operational readiness of the new terminal

11h ago