মেসি-এমবাপের জোড়া গোলে পিএসজির বড় জয়

নকআউট পর্ব আগেই নিশ্চিত হয়েছে পিএসজির। এমনকি গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে যে সন্তুষ্ট থাকতে তাও নিশ্চিত। তাই ক্লাব ব্রুজের বিপক্ষে ম্যাচটা ছিল নিছক আনুষ্ঠানিকতার। পাশাপাশি নিজেদের ছন্দ ফিরিয়ে আনার। আর সে ম্যাচে বেলজিয়ামের ক্লাবটিকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়ে গ্রুপ পর্ব শেষ করেছে পিএসজি।

মঙ্গলবার রাতে পার্ক দি প্রিন্সেসে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের 'এ' গ্রুপের ম্যাচে ক্লাব ব্রুজকে ৪-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে পিএসজির। দলের হয়ে দুটি করে গোল করেছেন লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপে। এর আগে প্রথম লেগের ম্যাচে এ দলটির বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করে পিছিয়ে গিয়েছিল ফরাসি দলটি।

গ্রুপ পর্বের ৬ ম্যাচ শেষে ১১ পয়েন্ট পয়েন্ট পিএসজির। একই দিনে দিনের অপর ম্যাচে আরবি লাইপজিগের কাছে ২-১ গোলে হারলেও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় ম্যানচেস্টার সিটিই। ছয় ম্যাচে পাঁচ জয়ে ১২ পয়েন্ট তাদের। ছয় ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে লাইপজিগ জায়গা করে নিয়েছে ইউরোপা লিগে।

ঘরের মাঠে এদিন পিএসজির লক্ষ্য ছিল ঘুরে দাঁড়ানোর। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আগের ম্যাচেই ম্যানচেস্টার সিটির কাছে ২-১ গোলে হেরেছিল তারা। আর লিগ ওয়ানে টানা দুটি ড্র। তবে ব্রুজের বিপক্ষে এদিন দাপুটে জয়ই তুলে নিয়েছে দলটি।

এদিন ম্যাচের ৬০ শতাংশ সময় বল দখলে ছিল পিএসজির। শটও নিয়েছে ১৭টি, যার ৯টি ছিল লক্ষ্যে। কম যায়নি ব্রুজও। ১৫টি শট নেয় তারা। এরমধ্যে ৬টি লক্ষ্যে রাখতে পারে দলটি।

তবে ম্যাচের সাত মিনিট পার না হতেই দুই গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। দুটি গোলই করেন এমবাপে। দ্বিতীয় মিনিটে এমবাপের কাছ থেকে বল পেয়ে জোরালো শট নিয়েছিলেন নুনো মেন্ডিস। গোলরক্ষক সিমন মিগনলেট তার শট ঠেকালে আলগা বল ফাঁকায় পেয়ে যান এমবাপে। নিখুঁত এক কোণাকোণি শটে বল জালে পাঠাতে কোনো ভুল হয়নি এ ফরাসি তারকার।

সপ্তম মিনিটে আনহেল দি মারিয়ার থ্রু পাস থেকে অসাধারণ এক ভলিতে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এমবাপে। অবশ্য এর মাঝে চতুর্থ মিনিটে আরও একটি গোল পেটে পারতো দলটি। দি মারিয়ার পাস থেকে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন জিয়র্জিনিও উইনালদাম। কর্নারের বিনিময়ে তার শট ঠেকান গোলরক্ষক সিমন।

দ্বাদশ মিনিটে গোল পেটে পারতেন দি মারিয়াও। মেসি পাস থেকে গোলরক্ষককে ফাঁকায় পেয়ে ভালো শট নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দারুণ সেভ করেন ব্রুজ গোলরক্ষক। ২৪তম মিনিটে গোল করার মতো প্রথম সুযোগ পায় সফরকারীরা। তবে জিয়ানলুইজি দোনারুমার নৈপুণ্যে গোল মিলেনি। হ্যান্স ভানাকেনের পাস থেকে ফাঁকায় বল দারুণ শট নিয়েছিলেন কেসে সান্দ্রা। কিন্তু দারুণ দক্ষতায় তা ঠেকিয়ে দেন ইতালিয়ান গোলরক্ষক।

৩৫তম মিনিটে দুই খেলোয়াড়কে কাটিয়ে দারুণ এক কোণাকোণি শট নিয়েছিলেন মেসি। তবে ঝাঁপিয়ে পড়ে তার প্রচেষ্টা নষ্ট করেন দেন ব্রুজ গোলরক্ষক সিমন। পরের মিনিটে গোল পেটে পারতো ব্রুজও। তবে আবারও বাধা হয়ে দাঁড়ান দোনারুমা। ক্লিনটন মাতার কাটব্যাক থেকে ম্যাটস রিটসের শট ঠেকিয়ে দেন তিনি,

৩৮তম মিনিটে গোল পান মেসি। পাল্টা আক্রমণ থেকে সতীর্থের বাড়ানো বল ধরে আড়াআড়ি মেসিকে পাস দেন এমবাপে। বল ধরে ডি-বক্সের বাঁইরে থেকে জায়গা করে নিয়ে দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে নিজের ট্রেডমার্ক শটে বল জালে পাঠান এ আর্জেন্টাইন।

৪৪তম মিনিটে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন এমবাপে। মেসির থ্রু পাস থেকে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে ফাঁকায় ঢুকে পড়েছিলেন তিনি। কিন্তু উড়িয়ে মেরে হ্যাটট্রিক হাতছাড়া করেন তিনি।

৫৪তম মিনিটে আবারও ব্রুজকে হতাশ করেন দোনারুমা। নোয়া লাংয়ের দূরপাল্লার জোরালো শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান তিনি। ১০ মিনিট পর মেসির থ্রু পাস থেকে বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন দি মারিয়া। কিন্তু তার শট লক্ষ্যে থাকেনি।

৬৮তম মিনিটে ব্যবধান কমায় ব্রুজ। এবার আর বাধা হতে পারেননি দোনারুমা। প্রায় মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে রিট সে দারুণ এক ক্রস করেন লাং। বল ধরে সময় নিয়ে নিখুঁত এক কোণাকোণি শটে বলে জালে পাঠাতে কোনো ভুল করেননি এ বেলজিয়ান মিডফিল্ডার। পাঁচ মিনিট পর এমবাপের বুলেট শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক সিমন।

ম্যাচের ৭৬তম মিনিটে সফল স্পটকিক থেকে ব্যবধান আরও বাড়ান মেসি। ডি-বক্সে তাকে ফাউল করেছিলেন ভ্যান ডার ব্রেমট। ফলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।

নির্ধারিত সময়ে শেষ দিকে ব্যবধান আরও বাড়ানোর দারুণ সুযোগ নষ্ট করেন বদলি খেলোয়াড় মাউরো ইকার্দি। আশরাফ হাকিমির ক্রস থেকে বল পায়ে লাগাতে পারলেই গোল পেটে পারতেন তিনি। কিন্তু পা ছোঁয়াতেই ব্যর্থ হন তিনি। যোগ করা সময়ে ব্যবধান কমাতে চাপ সৃষ্টি করেছিল ব্রুজ। তবে লাভ হয়নি। বড় হারেই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।

Comments

The Daily Star  | English

Israel launches major attack on Iran: what we know so far

‘Nuclear plant, military sites’ hit; strikes likely killed Iranian chief of staff, top nuclear scientists; state of emergency declared in Israel, fearing Iranian retaliation

4h ago