রোনালদোর গোলের পরও হারল ইউনাইটেড

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের দ্বিতীয় অভিষেকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শুরুটা দারুণ করেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। ম্যাচের ত্রয়োদশ মিনিটেই ইউনাইটেডকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে লিড তো ধরে রাখতেই পারেনি তারা। উল্টো আরও দুটি গোল হজম করে অপেক্ষাকৃত দুর্বল ইয়াং বয়েজের কাছে হারতে হলো ১০ জনের দলটিকে।

বার্নে মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের 'এফ' গ্রুপের ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের দল ইয়াং বয়েজের বিপক্ষে ২-১ গোলের ব্যবধানে হেরে যায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। সুইস দলটির হয়ে গোল দুটি করে নিকোলাস এনগামালু ও জর্ডান সিবাটচিউ।

মূলত ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে মারাত্মক ভুল করে বসেন বদলি খেলোয়াড় জেসে লিংগার্ড। নিজেদের অর্ধে প্রতিপক্ষের পায়ে বল তুলে দিয়ে গোল হজম করতে হয় তাদের। তবে ম্যাচের ৩৫তম মিনিটে অ্যারন ভ্যান বিসাকার লাল কার্ডই পিছিয়ে দেয় তাদের। ১০ জনের দল নিয়ে এরপর থেকে কোণঠাসা হয়ে যায় তারা।

তবে বিসাকার লাল কার্ডের কারণে রক্ষণভাগ ঠিক রাখতে জাডন সাঞ্চোকে বসিয়ে ডিফেন্ডার দিয়াগো ডালটকে নামান ইউনাইটেড কোচ ওলে গানার সুলশার। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ভ্যান ডি বিককে নামিয়ে রাফায়েল ভারানেকে নামিয়ে রক্ষণের শক্তি আরও বাড়ান। অতিরিক্ত রক্ষণাত্মক কৌশল বেছে নিয়ে রোনালদোর করা গোলের লিড ধরে রাখতে চেয়েছিলেন কোচ। কার্যত সেটাই কাল হয় তাদের জন্য।

এদিন গোল করার মতো প্রথম সুযোগটা পেয়েছিল স্বাগতিকরাই। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই মেসচাক এলিয়ার কোণাকোণি শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট না হলে এগিয়ে যেতে পারতো তারা। তবে ১৩তম মিনিটে নিজেদের প্রথম সুযোগে ঠিকই গোল আদায় করে নেয় ইউনাইটেড। ব্রুনো ফার্নান্দেজের ক্রস থেকে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়ে আলতো টোকায় জালে পাঠান রোনালদো।

২৪তম ক্রিস্তিয়ান ফাসনাকতের দূরপাল্লার শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান ইউনাইটেড গোলরক্ষক দাভিদ দি গিয়া। পাল্টা আক্রমণ থেকে সুযোগ ছিল ইউনাইটেডেরও। ব্রুনোর বাড়ানো বল থেকে বাঁ প্রান্তে অনেকটা ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন রোনালদো। তবে তার শট গোলরক্ষক বরাবর থাকায় তা সহজেই ঠেকিয়ে দেন ডেভিড ভন বলমুস।

৩১তম মিনিটে মাইকেল আবিস্কারের দূরপাল্লার শট লক্ষ্যে থাকেনি। চার মিনিট পর বড় ধাক্কা খায় ইউনাইটেড। ক্রিস্টোফার মার্টিনেজকে বিপজ্জনক ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন ভ্যান বিসাকা। ফলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় সফরকারী দলটি।

একজন কম নিয়ে খেলা ইউনাইটেড তিন মিনিট পরই গোল হজম করতে পারতো। ৩৮তম মিনিটে অবিশ্বাস্য এক মিস করেন ইয়াং বয়েজের ফাসনাকত। উলিসেস গার্সিয়ার ক্রস থেকে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়েও বাইরে মারেন এ সুইস মিডফিল্ডার। পাঁচ মিনিট পর ভিনসেন্ট সিয়েরোর শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক দি গিয়া। তবে শটে তেমন জোর ছিল না।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই ইউনাইটেডকে চেপে ধরে ইয়াং বয়েজ। বেশ কয়েকটি সুযোগও তৈরি করে তারা। তবে লক্ষ্যের দেখা পায় ৬৬তম মিনিটে। দারুণ এক দলীয় প্রচেষ্টায় সমতায় ফেরে ইয়াং বয়েজ। ডান প্রান্ত থেকে এলিয়ার ক্রস সিলভান হেফতির পায়ে চলে যায় নিকোলাস এনগামালু পায়ে। গোলমুখে দারুণ শট বল জালে পাঠাতে কোনো ভুল হয়নি ক্যামেরুনের এ  ফরোয়ার্ডের। 

সুযোগ ছিল পরের মিনিটেও। এনগামালুর শট লক্ষ্যেই থাকেনি। ২০ মিনিট পরও দূরপাল্লার ভালো শট নিয়েছিলেন তিনি। তবে অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৮৮তম মিনিটে কেদরিক জেসিগাররের প্রায় ৩৫ গজ দূর থেকে নেওয়া শটে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন ইউনাইটেডকে। অসাধারণ দক্ষতায় সে যাত্রা দলকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক দি গিয়া।

ম্যাচের যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে বড় ভুলটি করে ফেলেন লিংগার্ড। নিজেদের অর্ধে সতীর্থকে বল পাস দিতে গিয়ে ইয়াং বয়েজের বদলি খেলোয়াড় সিবাটচিউর পায়ে বল তুলে দেন তিনি। ডি-বক্সে ঢুকে ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে পাঠাতে কোনো ভুল হয়নি এ মার্কিন ফরোয়ার্ডের। ফলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শুরুতেই চমক দেখায় দলটি।

Comments

The Daily Star  | English

Pilots faked flying records

CAAB inquiry finds, regulator yet to take action

9h ago