শেষ সময়ের গোলে রিয়ালকে হারিয়ে শেরিফের অঘটন

আক্রমণের বন্যা বইয়ে দিল উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সফলতম ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ। তাদের চাপে কোণঠাসা হয়ে পড়লেও শেরিফ তিরাসপুল জন্ম দিল অঘটনের। হাতেগোনা যে কয়েকটি সুযোগ তারা পেল, তা কাজে লাগিয়ে কার্লো আনচেলত্তির শক্তিশালী দলকে হারিয়ে চমকে দিল তারা।
মঙ্গলবার রাতে আসরের 'ডি' গ্রুপের ম্যাচে রিয়ালের ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ২-১ গোলে জিতেছে মলদোভার ক্লাব শেরিফ।
প্রথমার্ধে ইয়াসুর ইয়াখশিবায়েভের লক্ষ্যভেদে এগিয়ে যায় সফরকারীরা। দ্বিতীয়ার্ধে করিম বেনজেমা স্পট-কিক থেকে সমতায় ফেরান স্বাগতিকদের। এরপর নির্ধারিত সময়ের শেষদিকে সেবাস্তিয়ান থিল কেড়ে নেন সব আলো। তার গোলই প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে আসা শেরিফকে উপহার দিয়েছে স্মরণীয় জয়।
ম্যাচের প্রায় ৭৫ শতাংশ সময়ে বল ছিল স্প্যানিশ পরাশক্তি রিয়ালের পায়ে। তারা ৩১টি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখে ১১টি। লস ব্লাঙ্কোসদের আধিপত্যের বিপরীতে গোটা সময় আক্রমণ ঠেকাতে হিমশিম খেতে হয় শেরিফকে। আক্রমণের ঝাপটা সামলে তারা যে চারটি শট নেয়, তার তিনটিই ছিল লক্ষ্যে। আর তাতেই হয়েছে বাজিমাত।

রিয়াল লক্ষ্যে প্রথম শট নেয় ম্যাচের ১৮তম মিনিটে। ফরাসি স্ট্রাইকার বেনজেমার ফ্রি-কিক ঝাঁপিয়ে রুখে দেন শেরিফের গোলরক্ষক গিওর্গস আথানাসিয়াদিস। সাত মিনিট পর পাল্টা আক্রমণে জালের ঠিকানা খুঁজে নেয় শেরিফ। ক্রিস্তিয়ানোর ক্রসে ইয়াখশিবায়েভ হেড করে এগিয়ে দেন দলকে। তারা দুজনই ছিলেন ফাঁকায়। আশেপাশে ছিল না রিয়ালের কোনো ডিফেন্ডার।
৩২তম মিনিটে গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার অসাবধানতার খেসারত অবশ্য দিতে হয়নি রিয়ালকে। ক্লিয়ার করতে গিয়ে তিনি উল্টো বল দিয়ে ফেলেন প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়কে। তবে ইয়াখশিবায়েভের শট চলে যায় পোস্ট ঘেঁষে।
৩৬তম মিনিটে এডেন হ্যাজার্ডের শট দারুণ দক্ষতায় ফেরান আথানসিয়াদিস। আলগা বলে খুব কাছ থেকে নাচোর হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ছয় মিনিট পর কাসেমিরোর শটও ঠেকিয়ে দেন শেরিফ গোলরক্ষক। ফলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় রিয়াল।

বিরতির পর গোল শোধে মরিয়া রিয়াল সমতা ফেরায় ৬৫তম মিনিটে। ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ডি-বক্সে ফাউলের শিকার হলে ভিএআরের সহায়তায় পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। এরপর স্পট-কিক থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজের ৭২তম গোল করেন বেনজেমা। তিনি এখন এককভাবে প্রতিযোগিতার ইতিহাসের চতুর্থ সর্বোচ্চ গোলদাতা।
সাত মিনিট পর ক্রিস্তিয়ানোর আরেকটি ক্রসে ব্রুনো নিশানা ভেদ করলেও অফসাইডের কারণে তা বাতিল হয়। ৭৪তম মিনিটে লুকা মদ্রিচের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করার পর এদার মিলিতাওকেও হতাশ করেন দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখানো আথানাসিয়াদিস। ৮২তম মিনিটে রদ্রিগোর শট থাকেনি লক্ষ্যে।
কিছুক্ষণ পরই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ১৩ বারের বিজয়ী রিয়ালকে স্তব্ধ করে দেয় শেরিফ। ৮৯তম মিনিটে আদামা ত্রাওরে পাস দেন ডি-বক্সের বাইরে থাকা থিলকে। তার জোরালো শট ঝাঁপিয়ে পড়েও রুখতে পারেননি কোর্তোয়া। যোগ করা সময়ে দলকে ফের সমতায় ফেরানোর সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি বেনজেমা।
দুই ম্যাচে পূর্ণ ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে রয়েছে শেরিফ। ৩ পয়েন্ট নিয়ে রিয়াল আছে দুইয়ে। রাতের অন্য ম্যাচে শাখতার দোনেস্কের মাঠে গোলশূন্য ড্র করেছে ইন্টার মিলান। দুই দলেরই পয়েন্ট ১ করে। গোল ব্যবধানে ইতালিয়ান সিরি আ চ্যাম্পিয়ন ইন্টার রয়েছে তিনে। ইউক্রেনের শাখতারের অবস্থান তলানিতে।
Comments