১৬ বছর পর এফএ কাপ চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল

টাই-ব্রেকারের নির্ধারিত প্রথম পাঁচ শটের শেষটি ফিরিয়ে চেলসিকে সুযোগটা এনে দিয়েছিলেন এডওয়ার্ড মেন্ডি। কিন্তু সাডেন ডেথে ফের মিস করে ফেলেন ম্যাসন মাউন্ট। তাতে যেন কারাবাও কাপের পুনরাবৃত্তি ঘটে। নির্ধারিত সময়ের খেলা গোল শূন্য থাকার পর এবারও টাই-ব্রেকারে ম্যাচ জিতে নিল লিভারপুল।
শনিবার রাতে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে এফএ কাপের ফাইনালে টাই-ব্রেকারে গড়ানো ম্যাচে চেলসিকে ৬-৪ ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় লিভারপুল। নির্ধারিত সময়ে খেলা গোলশূন্য ড্র থাকার পর অতিরিক্ত সময়েও হয়নি কোনো গোল। ফলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।
এর আগে ২০০৫-০৬ মৌসুমে এফএ কাপ জিতেছিল লিভারপুল। ১৬ বছর পর ফের এ আসরে চ্যাম্পিয়ন হলো অলরেডরা। অন্যদিকে ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে টানা তিনবার এফএ কাপের ফাইনালে হারল চেলসি। ২০২০ সালে আর্সেনাল ও ২০২১ সালে লেস্টার সিটির কাছে হেরেছিল দলটি।
মৌসুমে এটা লিভারপুলে দ্বিতীয় শিরোপা। এর আগে কারাবাও কাপে এই চেলসিকে হারিয়েই জিতেছিল দলটি। তাতে টিকে রইল তাদের কোয়াড্রপল জয়ের আশা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠেছে অলরেডরা। তবে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে কিছুটা পিছিয়ে। শেষ দুই রাউন্ডে নিজেদের জয়ের পাশাপাশি ম্যানচেস্টার সিটির হোঁচট প্রত্যাশা করতে হবে তাদের।
টাই-ব্রেকারে এদিন নিজেদের দ্বিতীয় শটেই বারপোস্টে লাগিয়ে মিস করেন অধিনায়ক সিজার আজপিলিকুয়েতা। তবে লিভারপুলের হয়ে মানের নেওয়া শেষ শট ফিরিয়ে চেলসিকে ম্যাচে রাখেন মেন্ডি। এরপর সাডেন ডেথের দ্বিতীয় শট মিস করেন মাউন্ট। লিভারপুলের বদলি খেলোয়াড় কস্তানতিনোস সিমিকাস অবশ্য কোনো ভুল করেননি। জয় পায় ইয়ুর্গেন ক্লপের দল।
ম্যাচেও এদিন কিছুটা এগিয়েছিল লিভারপুল। মোট ১৭টি শট নেয় দলটি। তবে এরমধ্যে লক্ষ্যে ছিল মাত্র ২টি। অন্যদিকে ১০টি শট নিয়েই ২টি লক্ষ্যে রাখে চেলসি। তবে লড়াইটা এক অর্থে হয়েছে সেয়ানে সেয়ানেই। দুই দলেরই গোল করার দারুণ কিছু সুযোগ ছিল।
এদিন ম্যাচের ৩২তম মিনিটেই বড় ধাক্কা খায় লিভারপুল। ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়েন দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য তারকা মোহামেদ সালাহ। তাতে ২০১৮ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের কথা মনে হয়েছিল সবার। সেবার তাকে ছাড়া রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরে যায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে। এদিন অবশ্য তেমন কিছু হতে দেননি তার সতীর্থরা। এছাড়া চোট পাওয়ায় নির্ধারিত সময় শেষে মাঠ ছাড়েন ভার্জিল ভ্যান ডাইকও।
অবশ্য বারপোস্ট বাধা হয়ে না দাঁড়ালে নির্ধারিত সময়েই জয় পেতে পারতো লিভারপুল। ম্যাচের শেষ দিকে এক মিনিটের ব্যবধানে দুইবার বারপোস্টে লেগে ফিরে আসে বল। ৮৩তম মিনিটে লুইস দিয়াজের শট বাড়ে লেগে বেরিয়ে যাওয়ার পরের মিনিটে অ্যান্ডি রবার্টসনের শটও প্রতিহত হয় বারপোস্টে। তবে বারপোস্ট বাধা হয়ে দাঁড়ায় চেলসির ক্ষেত্রেও। দ্বিতীয়ার্ধেই তৃতীয় মিনিটে ফ্রি কিক থেকে নেওয়া মার্কোস আলনসোর শট বারপোস্টে লেগে ফিরে আসে।
দুই দলের গোলরক্ষকও খেলেছেন দারুণ। নবম মিনিটে লুইস দিয়াজের শট পা দিয়ে কোনোমতে ঠেকান চেলসি গোলরক্ষক মেন্ডি। ২৭তম মিনিটে আলনসো দারুণ সুযোগ পা দিয়ে ঠেকিয়ে নষ্ট করেন লিভারপুল গোলরক্ষক অ্যালিসন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে তো চেলসির দুটি দারুণ সুযোগ রুখে দেন এ ব্রাজিলিয়ান।
২৩তম মিনিটে মাউন্টের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৪৪তম মিনিটে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন দিয়াগো জটা। ৬০তম মিনিটে জটার আরও একটি শট অল্পের জন্য বাইরে চলে যায়। আট মিনিট পত ক্রিস্তিয়ান পুলিসিকের দূরপাল্লার শটও অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। ৯০তম মিনিটে তো দিয়াজের শট একেবারে বারপোস্ট ঘেঁষে মিস করে।
Comments