আমরাও মানুষ, আমাদেরও গায়ে লাগে: মাহমুদউল্লাহ
৮৪ রানের বিশাল জয়ে সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করার পর স্বস্তির হাসি নিয়েই সংবাদ সম্মেলনে আসার কথা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। কিন্তু বাংলাদেশ অধিনায়কের মুখ দেখা গেল শক্ত, জানালেন 'শক্ত থাকাই তো স্বাভাবিক।' পরে এই শক্ত আবরণ থেকে বেরিয়ে এল আবেগ, আক্ষেপ আর হাহাকার। জানালেন স্কটল্যান্ডের কাছে হারের পর চারপাশ থেকে ধেয়ে আসা সমালোচনা তীব্রভাবে স্পর্শ করেছে তাদের, সেই দুঃখ এখনো বুক থেকে সরাতে পারেননি।
প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের কাছে হারের পর ওমানের বিপক্ষে একটা পর্যায় পর্যন্ত চাপে ছিল বাংলাদেশ, দলকে ঘিরে ধরেছিল প্রথম পর্ব থেকেই বাদ পড়ার শঙ্কা। পরে ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচ জেতে। পাপুয়া নিউগিগিনির বিপক্ষে ম্যাচ জিতলেই তাই নিশ্চিত হতো পরের ধাপ। বৃহস্পতিবার সেটা অনায়াসেই করে ফেলে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন- পাপুয়া নিউগিনিকে গুঁড়িয়ে সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশ
এদিন ২৮ বলে ৫০ করে দলের বড় জয়ে ভূমিকা রাখা মাহমুদউল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে এসে শুরু থেকেই কন্ঠ থেকে ঝরালেন হাহাকার, জানিয়ে দিলেন গত কদিন ধরে হওয়া সমালোচনার স্রোত তাদের করেছে কতটা আহত, 'শক্ত হওয়াটাই মনে হয় স্বাভাবিক। ঠিকাছে, আমরা মানুষ, আমরাও ভুল করি। একদম ছোট করে ফেলা ঠিক না। কারণ এটা আমাদের দেশ, আমরা সবাই একসঙ্গে (আছি)। আমি সব সময় এই কথাটা বলি। পুরো দেশকে প্রতিনিধিত্ব করছি, এটা আমাদের মাথায় থাকে। আমাদের চেয়ে অনুভূতি কারো বেশি না আমার মনে হয়। সমালোচনা অবশ্যই হবে। খারাপ খেলেছি, কিন্তু একবারে ছোট করে ফেলা ঠিক না। এটা আমাদের সবারই খারাপ লেগেছে।'
স্কটিশদের বিপক্ষে হারের পরদিন গণমাধ্যমে দলের তীব্র সমালোচনা করেন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন। তিন সিনিয়র ক্রিকেটারের অ্যাপ্রোচ নিয়েও প্রশ্ন তুলেন তিনি। গণমাধ্যমেও পারফরম্যান্সের সমালোচনা ছিল। বাংলাদেশ অধিনায়ক জানালেন সবই তাদের স্পর্শ করেছে, 'স্পর্শ সবই করে। বললাম যে আমরাও মানুষ, আমাদেরও অনুভূতি কাজ করে। আমাদেরও পরিবার আছে, আমাদের বাবা-মারাও বসে থাকে টিভি সেটের সামনে। আমাদের বাচ্চারাও বসে থাকে। তারাও মন খারাপ করে। আপনি যেটা বললেন যে সোশ্যাল মিডিয়া তো সবার হাতের নাগালে। সমালোচনা তো হবে, আমরা তো আশা করি সমালোচনা। অবশ্যই সমালোচনা হবে, কেন হবে না। সমালোচনার মাধ্যেম কেউ কাউকে ছোট করে ফেলে তখন এইগুলা খারাপ লাগে।'
প্রথম ম্যাচে ওভারপ্রতি ১০ করে রান নেওয়ার চাহিদায় ২২ বলে ২৩ করেন মাহমুদউল্লাহ। তার মন্থর ব্যাটিং নিয়ে উঠে প্রশ্ন। সেই প্রশ্নও ভালোভাবে নেননি তিনি, 'অনেক প্রশ্ন এসেছে আমার স্ট্রাইকরেট নিয়ে। আমরা তো চেষ্টা করেছি, চেষ্টার বাইরে তো আমাদের কাছে কিছু নেই। এরকম না যে আমরা চেষ্টা করিনি। হয়ত রেজাল্টটা আমাদের পক্ষে আসেনি। সমালোচনা অবশ্যই আমাদের কাম্য, সমালোচনা হবেই। আরেকটু যদি স্বাস্থ্যকর হয় সবার জন্য ভাল। বাংলাদেশের জার্সি গায়ে দিলে আমাদেরও ফিল হয়।'
দেশের অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার চোটগ্রস্ত শরীর নিয়েও খেলে যাওয়ার প্রসঙ্গও টানেন, 'সবারই ব্যথা থাকে, কারো অনেক ইনজুরি থাকে ওইগুলা নিয়েই আমরা খেলি। দিনের পর দিন পেইন কিলার খেয়েই আমরা খেলি। হয়ত বিহাইন্ড দ্যা সিন অনেকে এইগুলা জানে না। কাজেই নিবেদন নিয়ে কথা বলা ঠিক না।'
'আমি আশা করি দলের ভেতরে উদগ্রিব ভাব ছিল, সেটা ইতিবাচক ছিল। সাপোর্ট স্টাফসহ সবারই।'
Comments