এখন আমাদের আনন্দ ফেসবুকে লাইক দেখে, পাখি-প্রকৃতি দেখে না: সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

ছবি: সংগৃহীত

অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেছেন, এখন আমাদের আনন্দ ফেসবুকে লাইক দেখে, পাখি-প্রকৃতি দেখে না। অথচ একজন মানুষের সবচেয়ে বড় জিনিস হলো সংস্কৃতি শিক্ষা।
 
আজ মঙ্গলবার গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের গ্রীষ্মকালীন সেমিস্টারে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন।

বিশ্ববিলয়ের শেওড়াপাড়া ক্যাম্পাসে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সঙ্গে সমানভাবে নৈতিকতা অর্জনের ওপর গুরুত্ব দেন অন্যান্য বক্তারাও। 

তারা বলেছেন, শিক্ষার উদ্দেশ্য চাকরি করা নয়। এর সঙ্গে মূল্যবোধ শেখাও জরুরি। তা না হলে শিক্ষা মূল্যহীন হয়ে পড়বে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকিরের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। 

মনজুরুল ইসলাম বলেন, ছোটবেলায় আমাদের শিক্ষকরা মূল্যবোধ শেখালেও দিন দিন তা হারিয়ে যেতে বসেছে। আমরা এখন অন্যের সঙ্গে কথা বলার চেয়ে মোবাইল ফোন টিপতেই বেশি পছন্দ করি। 

আমাদের প্রতিনিয়ত প্রযুক্তির কাছে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। অন্ধের মতো মোবাইল ফোন ব্যবহার অনেক ক্ষেত্রে আমাদের অপদার্থ বানাচ্ছে। এসব ফোন থেকে ভালোর চেয়ে খারাপ জিনিসই বেশি নিচ্ছি। তিনি বলেন, কেন আমাদের বার্গার, পিৎজা খেতে হবে? কারণ, এগুলো সেলিব্রেটিরা খায়। এসব করে পশ্চিমা বিশ্বের মতো আমাদের সমাজকেও ভোক্তা সমাজে পরিণত করার চেষ্টা চলছে বলেন, অধ্যাপক মনজুরুল।

তিনি আরও বলেন, গ্রামে গিয়ে গ্রামের ভাষাতেই কথা বলতে হবে, তা না হলে অন্যরা কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে না। তিনি বলেন, আগে মায়ের ভাষা শিখুন, তারপর ইংরেজি। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের মূল্যবোধ চর্চার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির বলেন, নবীনবরণ হলো উচ্চশিক্ষা গ্রহণের প্রবেশ পথ। এখান থেকে দীক্ষা নিয়েই আগামী ৪ বছরের পথচলা শুরু হবে। তিনি বলেন, প্রত্যেক শিক্ষার্থীই তার মা-বাবাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। তাই এই ভালোবাসার ফল হিসেবে ৪ বছর ধরে প্রস্তুত হয়ে পূর্ণাঙ্গ মানুষ হয়ে বাবা-মাকে উপহার দিতে হবে। এ সময় তিনি কাউকে দায়ী নয়, বরং নিজের কাজ নিজেকেই করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শুধু ভালো ফল কিংবা ভিসি-ডিনস অ্যাওয়ার্ড না; এর বাইরেও শিক্ষার্থীদের অনেক দক্ষতা অর্জন করতে হবে। দেশে ও বিদেশে আয়োজিত সভা-সেমিনারে যোগ দিতে হবে। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের সামাজিক দায়বদ্ধতা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দক্ষ গ্রাজুয়েট ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার আহ্বান জানান।

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ফায়জুর রহমান বলেন, সহশিক্ষা কার্যক্রমের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, শুধু একাডেমিক বই নয়, প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে দেশি-বিদেশি বই পড়তে হবে। 

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ের সঙ্গে নবীন শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন রেজিস্ট্রার মো. সাইফুল ইসলাম। 

এ ছাড়া বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ফায়জুর রহমান, ডিন অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল আজাদ, অধ্যাপক ড. ফারহানা হেলাল মেহতাব, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তারেক আজিজ ও রেজিস্ট্রার মো. সাইফুল ইসলাম।

Comments

The Daily Star  | English
CAAB pilot licence irregularities Bangladesh

Regulator repeatedly ignored red flags

Time after time, the internal safety department of the Civil Aviation Authority of Bangladesh uncovered irregularities in pilot licencing and raised concerns about aviation safety, only to be overridden by the civil aviation’s higher authorities.

9h ago