নদী সম্মেলন: উপকূলের ৫৩ শতাংশ এলাকায় লবণাক্ততার প্রভাব

উপকূলের ৫৩ শতাংশ এলাকায় লবণাক্ততার প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশবিদ এবং বিশেষজ্ঞরা।
ছবি: সোহরাব হোসেন

উপকূলের ৫৩ শতাংশ এলাকায় লবণাক্ততার প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশবিদ এবং বিশেষজ্ঞরা।

তারা জানান, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং লবণাক্ততা বাড়ার কারণে মিঠা পানির উৎস কমছে। ভূগর্ভস্থ পানিতেও লবণাক্ততার পরিমান বাড়ছে। নিরাপদ পানির উৎস তীব্রভাবে হ্রাস পাচ্ছে আর এর প্রভাব পড়ছে উপকূলবাসীর স্বাস্থ্য ও জীবিকার উপর।

আজ শনিবার পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় একটি হোটেলে 'উপকূলীয় নদী সম্মেলন-২০২২' এ এসব তথ্য জানানো হয়।

বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনসহ ৯টি প্রতিষ্ঠানের যৌথ আয়োজনে এ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন 'প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, প্রধান অতিথি ছিলেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার, বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান মো. মনজুরুল কিবরীয়া, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা'র সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মো. এজাজ।

অনুষ্ঠানে মূল আলোচক ছিলেন পরিবেশ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ মো. মনির হোসেন চৌধুরী ও সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম মন্টু।

তারা জানান, দেশের উপকূলীয় এলাকার নদ-নদীগুলো দখল, দূষণ এবং শুষ্ক মৌসুমে পানি প্রবাহ হ্রাস ও নদীর তলদেশ ভরাট ও সংযোগ বাঁধাগ্রস্ত হওয়ায় নদীর জীববৈচিত্র্য উল্লেখযোগ্য হারে কমছে।

অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, বিশ্বব্যাংকের একটি সমীক্ষার পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০৩০ সাল নাগাদ ২৭ সে.মি, ২০৫০ সালে নাগাদ ৬২ সে.মি, ও ২১০০ সাল নাগাদ ৮৮ সে.মি সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়বে এবং এর ফলে উপকূলীয় এলাকা আরও অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ এলাকা প্লাবিত করবে।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের ৪৮ নদী সমীক্ষা প্রকল্পের পরিবেশ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ মনির হোসেন চৌধুরী জানান, চট্টগ্রামের টেকনাফ থেকে খুলনার সাতক্ষীরা পর্যন্ত ৭১০ কিলোমিটার উপকূলের ১৯ জেলায় তিনি ১৪১টি নদীর মধ্যে ১২টি নদী নিয়ে সমীক্ষা পর্যালোচনা করেন। এসব নদীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অবৈধ দখলদার রয়েছে বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে। ১,৩৬০টি অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। পাকা, আধা-পাকা ভবনসহ শিল্প-কারখানাও গড়ে তোলা হয়েছে এসব নদীর তীরে। এতে নানা ধরনের প্রভাব পড়ছে জনজীবনের ওপর। এর মধ্যে ৩০ ভাগ জনস্বাস্থ্যের ওপর, ২৮ ভাগ নদীর পরিবেশ ও প্রতিবেশ, ২৭ ভাগ নদীর পরিবেশ দূষণে ও ১৫ ভাগ পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত করছে।

তিনি আরও বলেন, উপকূলসহ সারা দেশের নদীগুলোকে যথাযথ সংরক্ষণে আমাদের সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় আমাদের নদীকেন্দ্রীক জীব-বৈচিত্র্য ক্রমশ ধ্বংস হবে।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা বাপার সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন জানান, আমাদের নতুন প্রজন্মের অধিকাংশই নদী সম্পর্কে সচেতন নয়। প্রকৃতি ও জীবন রক্ষায় নদীর ইতিহাস, গুরুত্ব, নদী দূষণসহ নানাবিধ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এটিকে পাঠ্যভুক্ত করা প্রয়োজন।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago