ফসলি জমি থেকে মাটি উত্তোলন বন্ধের দাবি ‘গ্রীণ ভয়েস’র

সুন্দরবন দিবস পালন ও ফসলি জমির উর্বরতা ধ্বংস করে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলনের মহোৎসব বন্ধের দাবিতে সমাবেশ করেছে পরিবেশবাদী ছাত্র-যুব সংগঠন 'গ্রীন ভয়েস'।
গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, 'আইলা-সিডর থেকে সুন্দরবন দক্ষিণাঞ্চলের লাখো মানুষকে রক্ষা করেছে। আর এই বন ধ্বংসে সরকার ব্যস্ত।'
নাগরিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, 'কৃষি জমির মাটি অবৈধভাবে উত্তোলনের কাজে রাজনৈতিক ক্ষমতাবান, স্থানীয় প্রভাবশালীদের এক শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। ভারী ও সড়ক বিনষ্টকারী খননযন্ত্র, হাজারো ওভারলোডেড মাটি ভর্তি ট্রাকের অবাধ চলাচল গ্রামীণ সড়ক ব্যবস্থাকেও বিপন্ন করে তুলেছে।'
নিরাপদ নৌ আন্দোলনের চেয়ারম্যান আমিনুর রসুল বলেন, 'জাতীয় ভূমি ব্যবহার নীতি, ২০০১-এর ৫.৫ অনুচ্ছেদে পরিষ্কারভাবে বলা আছে, উর্বর কৃষি জমি যেখানে বর্তমানে দুই বা ততোধিক ফসল উৎপাদনের জন্য সম্ভাবনাময়, তা কোনোক্রমেই অকৃষিকাজের জন্য যেমন ব্যক্তিমালিকানাধীন নির্মাণ, গৃহায়ন, ইটের ভাটা তৈরি ইত্যাদির জন্য ব্যবহার করা যাইবে না। এই নীতিমালার কোনো কথা কেউই গ্রাহ্য করছে না। এভাবে কৃষি জমির মাটি কেটে গভীর গর্ত তৈরি, মাটির উর্বরতা বিনষ্ট করার কাজ চলতে থাকলে কৃষি জমির সুরক্ষা বিপন্ন হবে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।'
সভাপতির বক্তব্যে গ্রীন ভয়েসের প্রধান সমন্বয়ক আলমগীর কবির বলেন, 'দুর্বৃত্ততাড়িত পরিবেশ বিনাশী এ সংকট থেকে দেশকে রক্ষার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী, পরিবেশমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।'
সমাবেশে ৪ দফা দাবি উত্থাপন করেন আলমগীর কবির। সেগুলো হলো:
১. ইটভাটা, টাইলস ফ্যাক্টরিতে কৃষি জমি খনন করে উত্তোলিত মাটির ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে।
২. ফসলি কৃষি জমির উর্বরতা, শ্রেণী প্রকৃতি নষ্ট করে মাটি উত্তোলনের এই পরিবেশ-বিনাশী, খাদ্য নিরাপত্তা ধ্বংসী কাজ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
৩. কৃষিজমি বিনষ্টকারী মাটিখেকো মাফিয়া সিন্ডিকেটকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
৪. জাতীয় ভূমি ব্যবহার নীতির আওতায় কৃষি জমি সুরক্ষার জন্য প্রয়োগযোগ্য, বাস্তবানুগ আইন তৈরি করতে হবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন মিত্তিকা সমাজ উন্নয়নের ব্যবস্থাপক খাদিজা খাতুন, বহ্নিশিখার সংগঠক ফাতেহা শারমিন এ্যানিসহ গ্রীন ভয়েসের বিভাগীয়, জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বয়করা।
Comments