জোকোভিচ ৩ বছরের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় নিষিদ্ধ

বিশ্বসেরা টেনিস তারকা নোভাক জোকোভিচের এবারের অস্ট্রেলিয়া সফর মোটেও সুখকর ছিল না। শেষ দৃশ্যটি ছিল সবচেয়ে নিদারুণ। টেনিস দুনিয়ার এই মহাতারকা আগামী ৩ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হলেন অস্ট্রেলিয়ায়।
এবারের অস্ট্রেলিয়া সফরে ১১ দিনের প্রতিটি মুহূর্ত তার কেটেছে ভীষণ অস্থিরতায়। অস্ট্রেলিয়ায় তাকে নিয়ে যে ধারাবাহিক নাটক লেখা হয়েছে তার প্রতিটি দৃশ্যই ছিল বিষাদময়।
অস্ট্রেলিয়ার আইন অনুযায়ী মাইগ্রেশন অ্যাক্টের অধীনে অভিবাসনমন্ত্রীর ক্ষমতা ব্যবহার করার অর্থ হলো, জোকোভিচকে এখন 'নির্দিষ্ট পরিস্থিতি' ব্যতীত পরবর্তী ৩ বছরের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশে বাধা দেওয়া হবে।
ফেডারেল আদালত জোকোভিচের আপিল খারিজের পর বিশ্বের এক নম্বর পুরুষ টেনিস খেলোয়াড় অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শুরুর মাত্র ১ দিন আগে অস্ট্রেলিয়া ছেড়ে চলে গেছেন। ৩৪ বছর বয়সী এই তারকার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে তার শিরোপা রক্ষার সুযোগটি হাতছাড়া হয়ে গেল।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন আজ সোমবার নাইন রেডিওকে বলেছেন, 'নিয়ম নিয়মই।'
তিনি আরও বলেন, 'এটি এমন একজনের সম্পর্কে, যিনি অস্ট্রেলিয়ায় আসতে চেয়েছিলেন কিন্তু সীমান্তে প্রবেশের প্রয়োজনীয় নিয়ম মেনে চলেননি। ৩ বছরের আগেই তার অস্ট্রেলিয়াতে ফিরে আসার দরজা খোলা আছে, তবে সেটা তার ভিসা আবেদনের পর সেই সময় বিবেচনা করা হবে।'
তিনি যোগ করেন, 'বিশেষ পরিস্থিতিতে' নোভাক জোকোভিচের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা যেতে পারে।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কারেন অ্যান্ড্রুজ উল্লেখ করেছেন, ভবিষ্যতে জোকোভিচের 'আবশ্যক কারণ' থাকলে তা বিবেচনা করা হবে। যেকোনো আবেদন তার যোগ্যতার ভিত্তিতে পর্যালোচনা করা হবে। তবে এটি এই মুহূর্তে অনুমানমূলক।
জোকোভিচকে অস্ট্রেলিয়া থেকে বের করে দেওয়ায় সার্বিয়ায় জনরোষ হয়েছে। সেখানের রাজনৈতিক নেতা এবং জনগণ অস্ট্রেলিয়ান সরকারের এই কার্যক্রমকে 'কলঙ্কজনক' হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং ২০ বারের গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়নের সঙ্গে যে আচরণ করা হলো তাকে নির্যাতন বলে বর্ণনা করেছেন।
এই বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চ্যানেল নাইনকে বলেন, 'এই সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আমরা সচেতন ছিলাম। তবে আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের সিদ্ধান্ত সঠিক।'
গতকাল আইনি লড়াইয়ে হেরে যাওয়ার পর রাতেই এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে দুবাইয়ের উদ্দেশে অস্ট্রেলিয়া ছাড়েন জোকোভিচ। তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বসে আর সময় নষ্ট করতে চাননি।
আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
Comments