ভারতের হিজাব বিতর্কের রেশ অস্ট্রেলিয়ায়

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকে নারী শিক্ষার্থীদের হিজাব নিষিদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তার রেশ আছড়ে পড়েছে তাসমান সাগরপাড়ের দেশ অস্ট্রেলিয়াতেও।

কর্ণাটক রাজ্য কর্তৃপক্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারী শিক্ষার্থীদের হিজাব পরা নিয়ে সম্প্রতি যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তা নিয়ে আদালতে শুনানি চলছে। এর মধ্যেই এই ঘটনার প্রতিবাদে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ও সিডনিতে বিক্ষোভ করেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলীয়রা।

বিক্ষোভকারীদের ভাষ্য, এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা কেবল ভারতজুড়ে বসবাসকারী মুসলিমদের ওপরে প্রভাব ফেলবে না, গোটা পৃথিবীর ওপরেই এর প্রভাব পড়বে। তারা বলছেন, যখন মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরা নিষিদ্ধ করা হয়, তখন তা তাদের শিক্ষিত হওয়ার ক্ষেত্রে, নিজেদের স্বপ্নের পেছনে ছুটতে ও ক্যারিয়ারের লক্ষ্যে পৌঁছাতে বাধা দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি প্রতারণামূলক উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়।

অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যমগুলোকে বিক্ষোভকারীরা আরও বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা এমন একটি ধারণাকে শক্তিশালী করে যে, আপনি আপনার চারপাশের অন্যদের মতো একই স্বাধীনতা ভোগ করেন না।

এ ব্যাপারে মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ সোশ্যাল অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্সের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো আমান্ডা গিলবার্টসন এনবিএস নিউজকে বলেন, 'ভারতের সংবিধান "ধর্মনিরপেক্ষতার ইতিবাচক সংজ্ঞার" ওপর প্রতিষ্ঠিত। ভারতের আদমশুমারি অনুসারে, দেশটির মুসলমানদের মধ্যে সাক্ষরতার হার জাতীয় জনসংখ্যার তুলনায় অনেক কম। কিন্তু তারা ক্রমাগত উন্নতি করছে। হিজাব নিষিদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হলে সেই উন্নয়ন ব্যহত হতে পারে।'

তিনি আরও বলেন, 'উচ্চ আদালত যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ করার পক্ষে রায় দেয়, তাহলে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার ওপর প্রভাব ফেলবে, যার ভিত্তিতে এর সংবিধান প্রণীত হয়েছিল'।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এখন কর্ণাটকের ক্ষমতায়।

এমন এক সময়ে কর্ণাটকে এই হিজাব বিতর্ক চলছে, যখন দেশটির বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন চলছে। কর্ণাটকে বিধানসভা নির্বাচন আগামী বছর, তার পরের বছরের মে মাসের মধ্যে দেশটির পরবর্তী লোকসভা নির্বাচন।

কর্ণাটকের মুসলিম পরিবারগুলো বলছে, তাদেরকে আরও চাপে রাখতেই হিজাবের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা। এ নিষেধাজ্ঞার কারণেই হিজাব পরিহিত শিক্ষার্থীদের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়।

আকিদুল ইসলাম : অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English
US tariffs impact on Bangladesh economy

Can Bangladesh ride out the wave of US tariffs?

Trump's announcement sent businesses scrambling. Orders froze. Buyers demanded discounts. Stock markets plummeted.

11h ago