কুয়াকাটা সৈকতে পর্যটকের ভিড়, কাটছে ব্যবসায়িক মন্দা

করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দেড় বছর ধরে কুয়াকাটায় পর্যটন কেন্দ্রিক ব্যবসায়ীরা ব্যাপকভাবে মন্দার মুখোমুখি হয়েছিলেন। আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা লোকসান গুনেছেন। কিন্তু এ বছর বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর সঙ্গে আরও দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটি কাটাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটকেরা এখানে ছুটে আসছেন। উপভোগ করছেন সাগরের সৌন্দর্য, একই স্থান থেকে সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য। সৈকত জুড়ে পর্যটকের ঢল। শামুক-ঝিনুকের দোকানসহ বিপনী বিতানগুলোতে উপচেপড়া ভিড়।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, বরিশাল-কুয়াকাটা সড়কের লেবুখালী পয়েন্টে 'পায়রা সেতু' চালু হওয়ায় এবং করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় এবার কুয়াকাটায় পর্যটক বেড়েছে। এ বছরের ২৪ অক্টোবর এ সেতুটি চালু হয়। এরপর থেকেই কুয়াকাটায় পর্যটকের আগমন বাড়তে থাকে। এবার বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সরকারি ছুটি, তার সাথে যোগ হয়েছে শুক্রবার ও শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি। সব মিলিয়ে তিন দিন ছুটি পেয়ে ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে এসেছেন এখানকার প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে। এতে পর্যটন কেন্দ্রিক ব্যবসায়ীরাও তাদের লোকসান পুষিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন।
সৈকতের ঝিনুক ব্যবসায়ী মো. শাহীন আলম জানান, বেশি পর্যটক আসায় তাদের বিক্রিও বেড়েছে। তিনি বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত প্রায় তিন লাখ টাকার মালামাল বিক্রি করেছেন।
আবাসিক হোটেল 'সমুদ্র বাড়ি রিসোর্টের' মালিক জহিরুল ইসলাম মিরন বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রায় দেড় বছর আমরা লোকসান গুনেছি। এবার পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যবসা ভালো হচ্ছে। এতে আমরা ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারব।'
কুয়াকাটা রাখাইন মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিজাম উদ্দিন হাওলাদার বলেন, বছরের দুটি ঈদ এবং শীত মৌসুমে পর্যটকদের আগমনের ওপর কুয়াকাটার ব্যবসা-বাণিজ্য নির্ভর করে। গত দিনের লোকসান কাটিয়ে আমরা এখন লাভের মুখ দেখছি। ব্যবসায়ীদের হতাশা কেটে যাচ্ছে।
কুয়াকাটার হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, 'কুয়াকাটায় ছোট-বড় ১৬০টি আবাসিক হোটেল-মোটেল রয়েছে। পর্যটকদের সেবা দেওয়ার জন্য প্রত্যেকটি হোটেলই সাধ্যমত প্রস্তুতি নিয়েছে। এসব হোটেলগুলোর ৮০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। আশা করছি পর্যটকদের এভাবে ভিড় অব্যবাহত থাকলে গত বছরের লোকসান কাটিয়ে ব্যবসায়ীরা নতুন উদ্যমে তাদের ব্যবসা চালাতে পারবেন।
কুয়াকাটার একাধিক আবাসিক হোটেলের ব্যবস্থাপক বলেছেন, গত দেড় বছর ধরে কুয়াকাটায় হোটেল ব্যবসায় মন্দা পরিস্থিতি ছিল। এ সময় প্রত্যেকটি হোটেলের মালিকপক্ষকে অন্য খাত থেকে টাকা জোগাড় করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতে হয়েছে।
কুয়াকাটা পর্যটন পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আবদুল খালেক বলেন, অনেক পর্যটক আসায় পর্যটন পুলিশের কয়েকটি দল মাঠে কাজ করছে। পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মানা, মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করতে মাইকিং করা হচ্ছে।
Comments