অবিন্তার স্বপ্নকে বাস্তব করবে তার পরিবার
সে এখন শুধুই স্মৃতি। নিজে না ফেরার দেশে গেলেও তার স্বপ্নগুলো বাস্তব হতে চলেছে। দেশকে নিয়ে মেয়ে যে স্বপ্নগুলো দেখতো এখন সেগুলোই ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও পূরণের উদ্যোগ নিতে চলেছে পরিবার।
এতক্ষণ যার স্বপ্নের কথা বলা হলো তিনি অবিন্তা কবির। গত বছর গুলশানে জঙ্গি হামলায় আরও ১৯ জনের সঙ্গে সে প্রাণ হারায়। মেয়ের স্বপ্নের কথা ভেবেই সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষায় সহায়তার জন্য তার পরিবার ‘অবিন্তা কবির ফাউন্ডেশন’ চালু করেছে।
গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ফাউন্ডেশন উদ্বোধনের পাশাপাশি সেখানে অবিন্তার স্মরণ সভারও আয়োজন করা হয়। বক্তৃতায় একমাত্র সন্তানের স্বপ্ন নিয়ে কথা বললেও মা রুবা আহমেদের কণ্ঠে সবকিছু ছাপিয়ে উঠে আসছিলো প্রিয়জন হারানোর বেদনা। হলঘরে উপস্থিত সবাইকেই ছুঁয়ে যায় সেই কষ্ট।
১৯ বছরের মেয়েকে নিয়ে কথা বলার সময় বার বার রুবা আহমদের গলা ধরে আসছিলো। ভারাক্রান্ত মন নিয়েই থেমে থেমে জানান, তিনি সবসময়ই চেয়েছিলেন অবিন্তা যেখানেই থাকুক সে যেন মানবতা, দেশপ্রেম ও শৃঙ্খলার গুণ অর্জন করতে পারে। আর এগুলো অর্জন করতে পেরেছিলো বলেই সে বিদেশে পড়ালেখা শেষ করে দেশে ফিরে এসে গরীব মানুষদের নিয়ে কাজ করতে চাইতো। ২০১৫ সালে নিজের একাডেমিক এক লেখাতেও এই স্বপ্নের কথাই লিখেছিল সে।
রুবা জানান, ছোটবেলা থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতো অবিন্তা। ফোর্থ গ্রেড শেষ করে ২০০৭ সালে সে যখন দেশে ফিরে আসে তখনকার সুখস্মৃতির কথাও স্মরণ করেন তিনি।
ঢাকায় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে পড়ালেখা শেষ করে আটলান্টার ইমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় অবিন্তা। গ্রীষ্মের ছুটিতে দেশে এসেছিল সে। হামলার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু ফারাজ আয়াজ হোসেন ও ইউনিভার্সিটি অব বার্কলের শিক্ষার্থী ও ভারতীয় নাগরিক তারিশি জৈনের সাথে হলি আর্টিজান বেকারিতে গিয়েছি সে। সেখানে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুর মুখে পড়তে হয় তাদের।
অবিন্তার পরিবার ও বন্ধুদের উপস্থিতিতে এই স্মরণ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেসন ব্লুম বার্নিকাট। গতকাল অবিন্তা কবির ফাউন্ডেশনের পাশাপাশি www.abintafoundation.org ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে। ওয়েবসাইটটিতে অবিন্তার একান্ত ভুবনের কিছু দিকের সন্ধান পাওয়া যাবে।
Comments