এক নজরে পৃথিবীর ৫ স্মার্টেস্ট প্রতিষ্ঠান

collage

প্রযুক্তির এই যুগে সারা পৃথিবীতে অগণিত প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে। প্রতিযোগীতার বাজারে একেক প্রতিষ্ঠানের পণ্য একেক রকম। তবে কিছু প্রতিষ্ঠান এমনসব পণ্য ও পণ্যের ধারণা নিয়ে বাজারে আসে যা অন্যদের পক্ষে ভাবাও সম্ভব হয় না। এসবের মধ্যে ৫০টি স্মার্টেস্ট প্রতিষ্ঠানের একটি তালিকা তৈরি করেছে এমআইটি টেকনোলজি রিভিউ। সেই তালিকা থেকে সেরা পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের নাম তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্যে।

১. এনভিডিয়া

সদরদপ্তর: সান্তা ক্লারা, ক্যালির্ফোনিয়া

কোম্পানির পণ্য: ইন্টেলিজেন্ট মেশিনস

কোম্পানির মূল্য: ৯০.৯ বিলিয়ন ডলার

প্রতিষ্ঠা সাল: ১৯৯৩

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরির সফটওয়ারের কাজ হাতে নিয়ে এনভিডিয়ার যাত্রা শুরু হলেও প্রতিষ্ঠানটির সবচেয়ে বেশি আয় আসে ভিডিও গেমসের গ্রাফিক কার্ড বিক্রি থেকে। এনভিডিয়ার আয়ের বার্ষিক হিসাবের খাতায় দেখা যায়, ডাটা সেন্টার ও অটোমোটিভ খাত থেকে এর আয় দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। এছাড়াও, কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তা তৈরির সফটওয়ারের কাজ থেকেও আয় হচ্ছে বেশ। পৃথিবীর বড় বড় ইন্টারনেট ও ক্লাউড সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান তাদের তৈরি চিপস ব্যবহার করে। এছাড়াও, অনেক নামি-দামি গাড়ি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এদের স্বয়ংক্রিয় গাড়ি চালানোর প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে।

পৃথিবীর স্মার্টেস্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকায় এনভিডিয়ার নাম প্রথমেই রয়েছে কারণ এ প্রতিষ্ঠানটি এমন কিছু প্রযুক্তি বাজারে এনেছে যা এই আধুনিক সভ্যতাকে বহু দূর এগিয়ে দিয়েছে।

২. স্পেসএক্স

সদরদপ্তর: হাওথ্রন, ক্যালির্ফোনিয়া

কোম্পানির পণ্য: মহাকাশ পরিবহন

কোম্পানির মূল্য: ১২ বিলিয়ন ডলার

প্রতিষ্ঠা সাল: ২০০২

বিশ্বের প্রথম বেসরকারি মহাকাশ পরিবহন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স। ইলন মাস্ক প্রতিষ্ঠিত স্পেসএক্স-এর লক্ষ্য ছিল কম খরচে মহাকাশ ভ্রমণ। এর জন্য তারা পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেট বানানোতে মনযোগ দেয়। ফ্যালকন এক্স রকেটের মাধ্যমে ইতোমধ্যে তারা সফলতাও দেখিয়েছে। এর আগে নাসার রকেটগুলো মাত্র একবার উৎক্ষেপণ করা যেত। কিন্তু স্পেসএক্সের রকেট বার বার ব্যবহার করা যায়।

পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেটে চড়ে যারা মহাকাশ ভ্রমণে যেতে চান, তাদের জন্যে শতকরা ১০ ভাগ ছাড় দেওয়ার ঘোষণা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে। পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেটের আবিষ্কার ও মহাকাশ ভ্রমণকে সুলভ করার সফলতা নিয়ে স্পেসএক্স স্মার্টেস্ট প্রতিষ্ঠানের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।

৩. আমাজন

সদরদপ্তর: সিয়াটল, ওয়াশিংটন

কোম্পানির পণ্য: যোগাযোগ

কোম্পানির মূল্য: ৪৭৯.৩ বিলিয়ন ডলার

প্রতিষ্ঠা সাল: ১৯৯৪

এই আমেরিকান ই- কমার্স এবং ক্লাউড কম্পিউটিং কোম্পানিটি কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনলাইন কেনাকাটার বাজারকে আরও প্রসারিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। পণ্য বেছে নিতে প্রতিষ্ঠানটি ব্যবহার করে ক্যামেরা ও সেন্সর। এর বিলও তৈরি হয় স্বয়ংক্রিয়ভাবে।

কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ভবিষ্যতে পণ্যের বাজার কেমন করে সাজানো যেতে পারে এর একটি নমুনা সৃষ্টি করেছে আমাজন। একটি অনলাইন বুকস্টোর হিসেবে কাজ শুরু করে আজ এ প্রতিষ্ঠানটি পৃথিবীর তৃতীয় স্মার্টেস্ট কোম্পানি হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে।

৪. টোয়েন্টিথ্রিঅ্যান্ডমি

সদরদপ্তর: মাউন্টেন ভিউ, ক্যালির্ফোনিয়া

কোম্পানির পণ্য: বায়োমেডিসিন

কোম্পানির মূল্য: ১.১ বিলিয়ন ডলার

প্রতিষ্ঠা সাল: ২০০৬

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের জেনেটিক পরীক্ষার রিপোর্ট সরাসরি তাঁদের কাছে পৌঁছে দিতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। এর ফলে আলঝিমার’স এবং পার্কিনসন’স-সহ আটটি স্বাস্থ্যগত পরিস্থিতির খবর গ্রাহকদের কাছে সরাসরি পৌঁছে দেওয়া যায়। মুখের লালার মাধ্যমে জেনেটিক পরীক্ষার এই অভিনব পদ্ধতিকে ২০০৮ সালে টাইম ম্যাগাজিন বর্ষসেরা আবিষ্কার হিসেবে অভিহীত করেছিলো। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির সেবা গ্রহীতার সংখ্যা ২০ লাখেরও ওপরে। এ প্রতিষ্ঠানের পণ্য হতাশা, পার্কিনসন’স, নারীর বন্ধ্যাত্বসহ বিভিন্ন গবেষণা কাজে ব্যবহার করা হয়।

চলতি বছরে যুক্তরাষ্ট্র সরকার অনুমতি দেওয়ায় এখন প্রতিষ্ঠানটি এর সেবা গ্রহীতাদের বলতে পারবে যে ব্যক্তি বিশেষের ডিএনএ থেকে কী কী ধরনের রোগ সৃষ্টি হতে পারে। এমন অভিনব প্রযুক্তি বাজারে এনে টোয়েন্টিথ্রিঅ্যান্ডমি বিশ্বের চতুর্থতম স্মার্টেস্ট প্রতিষ্ঠান হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে।

৫. অ্যালফাবেট

সদরদপ্তর: মাউন্টেন ভিউ, ক্যালির্ফোনিয়া

কোম্পানির পণ্য: সংযোগস্থাপন ব্যবস্থা

কোম্পানির মূল্য: ৬৭৩.৯ বিলিয়ন ডলার

প্রতিষ্ঠা সাল: ১৯৯৮

সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগল-এর মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট-এর মনোযোগ বেশি কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তি ও স্ব-চালিত গাড়ির উন্নয়নের দিকে। গুগল ছাড়াও, অ্যালফাবেট-এর অন্যান্য পণ্যের মধ্যে রয়েছে গুগল গ্লাস ও স্ব-চালিত গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা “এক্স”, বিনিয়োগকারী সংস্থা “ক্যাপিটালজি” এবং নতুন প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তাদানকারী সংস্থা “জিভি”।

কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তি, টেলিফোন সিস্টেমে নতুন নতুন আবিষ্কার, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এবং স্ব-চালিত গাড়ি নিয়ে নিয়মিত গবেষণার জন্যে অ্যালফাবেট বিশ্বের পঞ্চম স্মার্টেস্ট প্রতিষ্ঠান।

Comments

The Daily Star  | English

India, Pakistan agree ceasefire: Trump

US President Donald Trump on Saturday said that India and Pakistan have agreed to a "full and immediate ceasefire," amid both countries launching strikes and counter-strikes against each other's military installations

24m ago