ছেলের থেকে ভালো ফল করেছি: মা
নবম শ্রেণীতে পড়ার সময় দারিদ্রের কাছে হার মেনে অসহায় পিতা অসিত কুমার তাঁর কন্যার বিয়ে দিতে বাধ্য হোন। কিন্তু, নানা প্রতিকূলতা দমাতে পারেনি মলি রানী কুণ্ডুকে। ৩৭ বছর বয়সে এসে, নিজের পুত্রের সঙ্গে তিনি এক সঙ্গে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার গালিমপুর গ্রামের মলি রানী কুণ্ডু এসএসসি পরীক্ষায় বাগাতিপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৪.৫৩ পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। অন্যদিকে তাঁর ছেলে মৃন্ময় কুণ্ডু (১৬) বাগাতিপাড়া মডেল পাইলট স্কুল থেকে পেয়েছে জিপিএ ৪.৪৩।
নিজের সাফল্যে আবেগ-আপ্লুত হয়ে মলি বলেন, “পরীক্ষায় সফল হয়ে খুব ভালো লাগছে। নিজের ছেলের চেয়ে ভালো ফল করে আরও বেশি ভালো লাগছে। যখনই ওকে পড়তে বসতে বলতাম, ও বলতো আমি নাকি পাশ করবো না। আমি পাশ করে ওকে ভুল প্রমাণ করতে পেরেছি।”
“এখন আমি চাই নিজেকে আর আমার দুই ছেলেকে সুশিক্ষিত করতে, কিন্তু আর্থিক অসঙ্গতির কারণে সেটা কতদূর সম্ভব হবে জানি না,” বলেন মলি।
এদিকে, মৃন্ময় কুণ্ডুর মন্তব্য, “মায়ের সঙ্গে এসএসসি পাশ করতে পেরে আমি খুব খুশি। মায়ের ফল আমার থেকে ভালো হওয়ার কারণে আমি সামনের পরীক্ষায় আরও ভালো ফল করার অনুপ্রেরণা পেয়েছি। কঠিন অধ্যবসায় আর আত্মবিশ্বাস থাকলে সাফল্য আসবেই, সেটা আমার মা প্রমাণ করেছেন।”
মলির স্বামী দেবব্রত কুণ্ডু বলেন, “অন্যদের মতো আমিও খুব খুশি। আমার স্ত্রী এবং আমার ছেলে একসঙ্গে এসএসসি পাশ করায় আজকের দিনটি আমার জন্যে স্মরণীয়। আমি খুবই গর্বিত। মলি প্রমাণ করেছে সে খুবই পরিশ্রমী নারী। সরকারের কাছে থেকে সহযোগিতা পেলে, সামনে আরও ভালো করবে।”
নাটোরের জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন বলেন, “মা-ছেলে দুজনের প্রতি রইলো আমার শুভকামনা। বিশেষ করে, মলি যে অসাধারণ কৃতিত্ব দেখিয়েছেন, এর জন্য তাঁকে শুভেচ্ছা।”
Comments