বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট ম্যাচ ২০১৭

তালগোল পাকানো ব্যাটিং

soumya ‍sarker
সাজঘরে ফিরছেন সৌম্য সরকার। ছবি: স্টার

চট্টগ্রামের পিচে অনেক টার্ন পাচ্ছিলেন স্পিনাররা, আচমকা নিচু হয়ে যাচ্ছিলো বল। তবু অমন ব্যাটিংয়ের কোন অজুহাত হয়? ৭২ রান পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেই অস্থির হয়ে পড়লেন সবাই। কিছু বুঝে উঠার আগেই সব শেষ।

তালগোল পাকিয়ে বাংলাদেশ অল আউট মাত্র ১৫৭ রানে। অস্ট্রেলিয়ানদের টার্গেট দিতে পারল মাত্র ৮৬ রানের। আবারও অসিদের নায়ক ন্যাথান লায়ন। ৬০ রানে ৬ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ম্যাচে নিয়েছে ক্যারিয়ার সেরা ১৩ উইকেট।

অথচ চতুর্থ দিনের শুরুটা ইঙ্গিত দিচ্ছিলো ভিন্ন কিছুর। আগের দিনই অস্ট্রেলিয়ানদের চেপে ধরে ৩৭৭ রানে ৯ উইকেট ফেলে দিয়েছিলো। এদিন রান আর বাড়তে না দিয়ে বাকি উইকেটটি তুলে নেন মোস্তাফিজুর রহমান। প্রথম সেশনের বাকিটা রীতিমতো দুঃস্বপ্নের মতো। অনেকদিন এমন হাল দেখা যায় না বাংলাদেশের। ১১ রানে ১, ৩২ রানে ২ উইকেট থেকে টপাটপ ৪৩ রানে নেই ৫ উইকেট!

সৌম্য সরকার শুরুতেই ব্যাটে টাচ পাচ্ছিলেন। দুই বাউন্ডারিতে জানান দিচ্ছিলেন আত্মবিশ্বাসের ইঙ্গিত। টানতে পারলেন কই? রাউন্ড দ্য উইকেটে বল করতে এসে তাকে পরাস্ত করেন প্যাট কামিন্স। স্লিপেই ক্যাচ দিয়েছেন এই বাঁহাতি। প্রথম থেকে টানা বল করতে থাকা লায়ন ১৩তম ওভারে এসে পান সাফল্য। কি বুঝে যে তামিম ওই বলে এগিয়ে গিয়েছিলেন তিনিই ভালো বলতে পারবেন। ব্যাট হাতে নড়বড়ে হলেও গ্লাভস পড়ে ক্ষিপ্র ম্যাথু ওয়েড তামিমকে টাটা জানাতে দেরি করেননি। রানের খরায় থাকা ইমরুল কায়েস হয়েছেন আবারও ব্যর্থ। তিন চারে ১৫ রান করার পর লায়নের বলে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ক্যাচিং প্র্যাকটিস করিয়ে ফেরত যান সাজঘরে। এর রেশ কাটতে না কাটতেই মাত্র ২ রান করে ওয়ার্নারকে ক্যাচ দিয়ে দেন আগের ম্যাচের হিরো সাকিব আল হাসান।

বিপর্যয়ে পড়ে ব্যাটিং অর্ডারও এবড়োথেবড়ো হয়ে যায় টাইগারদের। টপ অর্ডারে টানা পাঁচ বাঁহাতি পেয়ে আগের ইনিংসে মওকা পেয়েছিলেন অফ স্পিনার লায়ন। প্রথম চারজনকেই করেছিলেন এলবিডব্লিও। তা দেখেই হয়ত মুমিনুলকে নিচে পাঠিয়ে উপরে তোলা হয় নাসির হোসেনকে। চার নম্বরে নেমে ৫ রান করেছেন দলে ফেরা নাসির।

খাদের কিনারে পড়া দলকে উদ্ধারে নামেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও সাব্বির রহমান। তাতে ১০০ রানের গুটিয়ে যাওয়ার লজ্জা থেকে রক্ষা মেলে। দুজনে মিলে করেন ৫৪ রানের জুটি। লায়নের নিচু হওয়া বলে এগিয়ে এসে উইকেট খোয়ান সাব্বির। ২৪ রান করেছেন তিনি।

সাব্বিরের পর ৮ নম্বরে নামা মুমিনুল হককে নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে গেছেন মুশফিক। কিন্তু চা বিরতির আগে দুজনকেই আউট করে দেয় অসিরা। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে প্যাট কামিন্সের পেসের ঝাঁজে পরাস্ত হয়ে ওয়েডকে ক্যাচ দেন মুশফিক। সুইপ করতে গিয়ে কাটা পড়েন মুমিনুল। ৩১ আর ২৯ রান করে তারাই দলের সর্বোচ্চ স্কোরার। মুমিনুলকে আউট করে আরেকটি পাঁচ উইকেট পূরণ করেন ন্যাথান লায়ন।

প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেট নেওয়া এই অফ স্পিনারের ঝুলিতে এক ম্যাচ থেকেই জমা হলো ১৩ উইকেট। আগের টেস্টে থেকেও ৭ উইকেট তুলেছিলেন তিনি। মেহেদী হাসান মিরাজ শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন, কিন্তু সঙ্গী ছিলো না কেউ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস: ১৫৭/১০ (মুশফিক ৩১, মুমিনুল ২৯; লায়ন ৬/৬০)

অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস: ৩৭৭/১০ (রেনশ ৪, ওয়ার্নার ১২৩, স্মিথ ৫৮, হ্যান্ডসকম্ব ৮২, ম্যাক্সওয়েল ৩৮, কার্টরাইট ১৮, ওয়েড ৮, অ্যাগার ২২, কামিন্স ৪, ও'কিফ ৮*, লায়ন ০*; মোস্তাফিজ ৪/৮৪, মিরাজ ৩/৯৩, তাইজুল ১/৭৮, সাকিব ১/৮২)

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৩০৫/১০ (মুশফিক ৬৮, সাব্বির ৬৬; লায়ন ৭/৯৪)

Comments

The Daily Star  | English

Pilots faked flying records

CAAB inquiry finds, regulator yet to take action

9h ago