দার্জিলিং নিয়ে আন্দোলনকারীদের সুর নরম
শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের চাপের কাছে মাথা নত করতেই হচ্ছে পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনকারী সংগঠন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতৃত্বকে। সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পাহাড় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কাছে চিঠি লিখে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছেন মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুং।
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কার্যত আকুতি জানিয়েছেন গুরুং। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মমতা ব্যানার্জি যাতে ইতিবাচক হস্তক্ষেপ করেন সেটিরও অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়াও, চিঠিতে পাহাড়ের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধারায় দেওয়া মামলা প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করেছেন বিমল গুরুং।
কলকাতার গণমাধ্যমে এই চিঠির তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পর এ ব্যাপারে মোর্চা নেতা স্বরাজ থাপা জানিয়েছেন বিষয়টি এখনো আলোচনার পর্যায়ের রয়েছে। চূড়ান্ত হলে পরে সাংবাদিকদের জানানো হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এদিকে, সরকারি সূত্র মোর্চার আলোচনা বসার চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করছে।
গত ১২ জুন থেকে পশ্চিমবঙ্গ ভেঙে দার্জিলিং, ডুয়ার্স, তরাই, মিরিক, কালিম্পংসহ পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে বিমল গুরুংয়ের নেতৃত্বে আন্দোলন শুরু করে পাহাড়ি-আদিবাসীদের সংগঠন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। প্রায় আড়াই মাস ধরে চলা ধর্মঘটে কার্যত বিপর্যস্ত পাহাড়ের জনজীবন।
পার্বত্য অঞ্চলে পুলিশসহ বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী নিহত এবং কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি এতোটাই ভয়াবহ আকার নেয় যে থানায় পর্যন্ত গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। আর এতে সরকার আরও কঠোর হয়। একের পর এক রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দেওয়া হয় মোর্চার শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে। পুলিশের ভয়ে আন্দোলনের শুরু থেকেই অজ্ঞাতস্থানে চলে যান বিমল গুরং, রোশন গিড়ির মতো মোর্চার শীষ নেতারা।
রাজ্য সরকার দুদিন আগেই আলোচনার জন্য ২৯ আগস্ট তারিখ ঘোষণা করে। সে আলোচনায় মমতা ব্যানার্জি সবাইকে অংশ নেওয়ার আহবান জানান। মমতার ওই ডাকে আন্দোলনকারীরা আসবেন কী না সেটি নিয়ে সংশয়ের মধ্যেই মোর্চার চিঠি অশান্ত পাহাড়ে শান্তির পরিবেশ ফিরে আসার ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
Comments