দার্জিলিং নিয়ে মমতার বৈঠক ‘নিষ্ফলা’

Darjeeling meeting
গত ২৯ আগস্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সভাপতিত্বে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দার্জিলিং নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: স্টার

কোনও সিদ্ধান্ত ছাড়াই ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তপ্ত পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে বৈঠক শেষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজ্য সরকারের সচিবালয় নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সভাপতিত্বে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও আন্দোলনকারী গোর্খা মুক্তি মোর্চার নেতা বিনয় তমাং এবং গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (জিএনএলএফ)-এর নেতা হরকাবাহাদুর ছেত্রী উপস্থিত ছিলেন। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর উত্তরবঙ্গের রাজ্য সচিবালয় উত্তরকন্যায় তিনদিনের দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে সরকারিভাবে জানানো হয়।

তিনপক্ষের অবস্থান বৈঠক থেকে পরিষ্কার করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক প্রধান বৈঠকে পৃথক রাজ্য নিয়ে কোন আলোচনা না করার কথা প্রথমেই বলে বসেন। অন্যদিকে মূল প্রতিপক্ষ গোর্খার পক্ষ থেকে বিনয় তমাং বলেন, পৃথক রাজ্যই তাঁদের মূল দাবি। একইসঙ্গে পাহাড়ের সন্ত্রাসের তদন্ত করা হোক সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)-কে দিয়ে।

অন্যদিকে মধ্যপক্ষ জিএনএলএফ হরকাবাহাদুর ছেত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারকে এই আলোচনার প্রয়োজন। তিন পক্ষের তিন রকম অবস্থানের কারণেই বৈঠকটি নিষ্ফলা বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে শান্তি প্রক্রিয়া শুরুর ক্ষেত্রে আলোচনার টেবিলে সবপক্ষের উপস্থিতিকে অনেকেই ইতিবাচক বলে মনে করছেন।

এদিন সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বৈঠক নিয়ে বলেন, ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। পাহাড়ের সমস্যা সমাধান ও শান্তি ফেরাতে সবাইকে এক হতে হবে। বনধ তুলতে হবে। পৃথক রাজ্য নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। এটি রাজ্যের এখতিয়ার নয়।

বৈঠক নিয়ে আন্দোলনকারী মোর্চা নেতা বিনয় তমাং বলেন, “আমরা পৃথক রাজ্যের দাবি থেকে সরছি না। পাহাড়ের শান্তি চায় মোর্চা। আন্দোলনকারী কয়েকজনের খুনের বিষয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্ত করা হোক। একই সঙ্গে বিস্ফোরণের তদন্ত করুক সিবিআই।”

পশ্চিমবঙ্গ ভেঙে পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে গত ১২ জুন থেকে দার্জিলিং, কালিম্পং, মিরিক, ডুয়ার্স, তরাইয়ে আন্দোলন শুরু করে গোর্খা মুক্তি মোর্চা। এখনও দার্জিলিং, কালিম্পংসহ পার্বত্য অঞ্চল জুড়ে হরতাল চলছে।

তবে হরকাবাহাদুর ছেত্রী বলেন, আলোচনা যতটুকুই হয়েছে সেটা আমার কাছে ইতিবাচক বলেই মনে হয়েছে। তবে রাজ্য সরকার ও পাহাড়ের আন্দোলনকারীরা ছাড়াও পাহাড়ের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কেন্দ্রেরও বৈঠক প্রয়োজন। তাই কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গেও একইভাবেই এই ধরণের বৈঠক হওয়া প্রয়োজন।

রাজ্য সরকারের এই বৈঠকের সমালোচনা করেছেন কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, “এভাবে পাহাড়ের মানুষকে কষ্ট দিয়ে এতো দেরিতে আলোচনা না করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আরও আগেই এই উদ্যোগ নিতে পারতেন। তিনি চেয়েছিলেন পাহাড়ের মানুষ তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করুন। এটি গণতান্ত্রিক কোন সরকারের নীতি হতে পারে না।”

দার্জিলিংসহ পশ্চিমবঙ্গের পার্বত্য অঞ্চলে প্রায় আড়াই মাস ধরে চলা রাজনৈতিক অচলাবস্থায় সেখানে জনজীবন কার্যত ভেঙে পড়েছে। অর্থনীতিও তলানিতে ঠেকছে। পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে গোটা পার্বত্য অঞ্চল।

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

3h ago