ভিডিও: ভারতে খুনি হাতির মৃত্যুদণ্ডের প্রক্রিয়া শুরু

সিরিয়াল কিলারের কথা বললে সাধারণত চোখের সামনে ভেসে উঠবে একজন মানুষেরই বীভৎস চেহারা। কিন্তু, মানুষের জায়গায় কোনও হাতির রূপ ভেসে উঠলে কেমন হবে? রহস্যময় চোখ হয়তো বড় থেকে আরও বড় হয়ে সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চাইবে।

হ্যাঁ, এমন এক সিরিয়াল কিলার হাতির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে। ওই খুনি হাতির “মৃত্যুদণ্ড” কার্যকর করতে বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরির কাজও করছে পশ্চিমবঙ্গ বন্যপ্রাণী দফতর। তবে মৃত্যুদণ্ড এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

রাজ্যটির সবুজারণ্য জেলা বলে পরিচিত আলিপুরদুয়ার অঞ্চলে স্থানীয় মানুষ কিংবা বন্যপ্রাণী দফতরের সবাই ওই হাতিকে “বাঁয়া গণেশ” নামে চেনেন। সেই “বাঁয়া গণেশ” গত এক মাসে আটজনকে খুন করেছে। বুধবার পর্যন্ত খুনি হাতির শেষ শিকার হোন জয়নারায়ণ শর্মা নামে এক ৮০ বছরের প্রবীণ।

সেদিন সকালে আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট গ্রামে পুজোর ফুল তুলতে জঙ্গলে গিয়েছিলেন জয়নারায়ণ। আচমকা “বাঁয়া গণেশ” তাঁকে পিষে দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয় মানুষ আশঙ্কাজনক অবস্থায় আলিপুরদুয়ার সদর হাসপাতালে নিয়ে যান কিন্তু ততক্ষণে মৃত্যু হয় বৃদ্ধের।

এই ঘটনার পর উত্তেজিত হয়ে পড়েন গ্রামের মানুষ। খুনি “বাঁয়া গণেশ”-এর মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আবেদন জানান মুখ্য বন কর্মকর্তা রবিকান্ত সিনহার কাছে। গোটা ঘটনা শুনে আলিপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ভাস্কর জেডির কাছে খুনি “বাঁয়া গণেশ”-এর কর্মকাণ্ড নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেন তিনি।

মুখ্য বন কর্মকর্তা রবিকান্ত এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, “কোনও হাতি যদি সত্যিই মানুষের জন্য ক্ষতিকর হয়ে ওঠে তবে তাকে হত্যা করার আইন রয়েছে। ওই হাতিটি কী কী অস্বাভাবিক আচরণ করছে তা জানতে ইতোমধ্যেই চিঠি পাঠানো হয়েছে স্থানীয় বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে। এরপর, বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

তবে “বাঁয়া গণেশ”-এর মৃত্যুদণ্ড হওয়ার আশঙ্কায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের পশু প্রেমীরা। রাজ্যের বিশিষ্ট হাতি বিশেষজ্ঞ পার্বতী বড়ুয়া মনে করেন, “জোট বেঁধে চলার নীতিতে বিশ্বাস করে হাতিরা। বিশেষ করে, পুরুষ হাতিরা তাদের সঙ্গিনী দখলের লড়াইয়ের ক্ষেত্রে খুব আপোষহীন হয়ে পড়ে। আর “বাঁয়া গণেশ”-এর ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। সে সঙ্গিনী হারিয়ে পাগল প্রায়! এমনকি, দল ছুটও সে। নিজের উগ্র রাগের জেরে ডান দিকের দাঁত যেমন খুইয়েছে “বায়া গণেশ”, তেমনি বাম কানেও বড় ধরণের জখম রয়েছে তার। নিঃসঙ্গ হওয়ার জন্য গণেশের মেজাজ খারাপ। আর সেই মেজাজ গিয়েই পড়ছে মানুষের ওপর।”

আলিপুরদুয়ারের জলদাপারা জাতীয় উদ্যানে থাকার সময় থেকেই “বাঁয়া গণেশ”-কে উচ্ছৃঙ্খল বলে দাবি করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রায়ই সেখান থেকে মেয়ে হাতি নিয়ে পালাতো সে। এমনকি, “বাঁয়া হাতি”-র পুরুষত্ব দেখে অভিভূত হয়েও অনেকে কুন্তি হাতি গণেশের সঙ্গিনী হতে সোচ্চার এ বন থেকে ও বন পালিয়ে বেড়াতো – “বাঁয়া গণেশ” সম্পর্কে এমন জনশ্রুতি শোনা যাচ্ছে আলিপুরদুয়ারে। এমন খবর বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমগুলোতেও প্রকাশিত হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
Yunus speech at Earthna Summit 2025 in Doha

No one too poor to dream, no dream too big to achieve: Yunus

He says in his keynote speech at Earthna Summit 2025 in Doha

1h ago