ভাস্কর্য সরানো হলো সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে

সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রিক ন্যায়বিচারের দেবী থেমিসের ভাস্কর্যটি গতকাল মধ্যরাতে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
প্রগতিশীল রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ সত্ত্বেও ভাস্কর মৃণাল হকের তত্ত্বাবধানে পাঁচ থেকে সাতজন শ্রমিক ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেন।
মৃণাল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “আমার কিছু বলার নেই। আমরা কবে মানুষ হবো? আমাদের দেশের মানুষ কবে শিক্ষিত হবেন? এটা অনেক দুঃখের বিষয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমি এসবের কিছুই জানি না। উচ্চপদস্থ কর্তৃপক্ষের চাপে ভাস্কর্যটি সরানো হচ্ছে। আমি এখানে এসেছি কারণ, আমি দেখিয়ে না দিলে ভাস্কর্য সরাতে গিয়ে শ্রমিকরা হয়তো এর ক্ষতি করে ফেলবে।”
ভাস্কর মৃণালের মতে, “আমরা পরাজয় মেনে নিয়েছি। দেশের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি, সংস্কৃতিপ্রেমী এবং স্বাধীনচেতা মানুষদের গালে এটা একটা চপেটাঘাত। মনে হচ্ছে রাজাকার, আল-বদররাই জয়ী হলো।”
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন যে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা বর্তমান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেনসহ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বর্তমান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করে সুপ্রিম কোর্টের প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য সরানোর বিষয়ে তাঁদের মতামত চেয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, “অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে তাঁরা ভাস্কর্যটি সরিয়ে সুপ্রিম কোর্টের জাদুঘরে রাখার বিষয়ে মতামত দেন।”
এদিকে, ভাস্কর্য সরানোর খবর জেনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শতাধিক নেতা-কর্মী ও সাধারণ ছাত্ররা সুপ্রিম কোর্টের কাছে সমবেত হোন এবং গতরাত ২টার দিকে “বিক্ষুব্ধ নাগরিক”-এর ব্যানারে তাঁরা রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন।
উল্লেখ্য, ভাস্কর্যকে ইসলামবিরোধী আখ্যা দিয়ে হেফাজতে ইসলাম, আওয়ামী ওলামা লীগ এবং আরও কয়েকটি ইসলামী দল দ্রুত এটি সরিয়ে ফেলার দাবি জানায়। গত ২১ এপ্রিল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রোজা শুরু হওয়ার আগেই ভাস্কর্যটি সরিয়ে ফেলার দাবি জানায়।
গত ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কওমি মাদ্রাসার আলেম-ওলামাদের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেন যে তিনিও ব্যক্তিগতভাবে সুপ্রিম কোর্টের প্রাঙ্গণে এমন ভাস্কর্য স্থাপন পছন্দ করেন না।
Comments