রক্তাক্ত আন্দোলনের ইঙ্গিত দার্জিলিংয়ে

পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দলোনকারীরা দার্জিলিংয়ে এ পর্যন্ত প্রায় অর্ধশতাধিক গাড়িতে আগুন দিয়েছে। স্টার ফাইল ফটো

পিঠে টিউবলাইট ভেঙে পশ্চিমবঙ্গ থেকে গোর্খ্যাল্যান্ড নামের পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন রক্তাক্ত করার ইঙ্গিত দিয়ে আরো একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে আন্দোলনরত গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা।

মঙ্গলবার সকালে শৈলশহর দার্জিলিংয়ের চকবাজার এলাকায় কয়েক হাজার মোর্চা সমর্থক সমবেত হয়ে মিছিল বের করেন। মিছিলে পৃথক রাজ্যের দাবিতে স্লোগানও তোলেন তাঁরা। এক পর্যায়ে মিছিলের সামনের দিকে কিছু যুবকে খালি গায়ে এগিয়ে যেতে দেখা যায়। তাঁদের পাশের একজন করে আন্দোলনকারী ওই যুবকদের পিঠে এক এক করে টিউব লাইট ভাঙতে শুরু করেন। রক্তাক্ত অবস্থায় মোর্চার মিছিল পরিভ্রমণ করে দার্জিলিং শহর জুড়ে।

টিউবলাইট ভাঙার পরই মিছিলকারীরা ‘জিটিএ টুক্তিপত্র’-এ আগুন জ্বালিয়ে রাজ্যের সঙ্গে ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটরি অ্যাগ্রিম্যান্ট’ থেকে সব সম্পর্ক ছেদ করার ঘোষণা করেন আন্দোলনকারী মোর্চার এক শীর্ষ নেতা বিমল তামং। স্থানীয় সময় তখন সকাল ১১টা ১৯ মিনিট।

২০১১ সালে ১৮ জুলাই সকাল ১১ টা ১৯ মিনিটেই পশ্চিমবঙ্গ, কেন্দ্র এবং আন্দোলনকারী গোর্খা মুক্তি মোর্চার সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর পাহাড়ে গঠিত হয় এই জিটিএ। সমতলের ডুয়ার্স, তারাই ছাড়াও পার্বত্য অঞ্চলের মোট ৪৫টি অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এই স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের আওতায়। মঙ্গলবার ঠিক একই সময়ে সেই চুক্তি পুড়িয়ে ফেলার মধ্যদিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্কের শেষকৃত্যানুষ্ঠান হয়েছে বলে দাবি করেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুড়ং।

প্রসঙ্গত, পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সংঘবদ্ধ করতে বিমল গুড়ংয়ের নেতৃত্বে ২০০৭ সালের ৭ অক্টোবর সকাল ১১ টা ১৯ মিনিটেই আত্মপ্রকাশ করেছিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা।

গত ১২ জুন থেকে পশ্চিমবঙ্গের পার্বত্য জেলা দার্জিলিংয়ে পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে আন্দোলনকারী মোর্চা। ২৬ জুন ঈদের দিন মাত্র ১২ ঘণ্টা ছাড় ছাড়া বাকি ১৩ দিন টানা আন্দোলন চলেছে। এমনকি পৃথক রাজ্যের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেও ঘোষণা করা হয় মোর্চার পক্ষ থেকে।

ইতোমধ্যে পার্বত্য অঞ্চলে সেনাবাহিনী ছাড়াও রাজ্য পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করেছে মমতা ব্যানার্জির সরকার।

এখন পর্যন্ত লাগাতার এই আন্দোলনে মোর্চার ৪ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে বলে তাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। এছাড়াও ১৪ ও ১৫ জুন দফায় দফায় পুলিশ-মোর্চার সংঘর্ষে পুলিশ, সাধারণ পাহাড়বাসী ছাড়াও বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও আহত হয়েছেন। 

আন্দোলনের মধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিমল গুড়ংয়ের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও পাহাড়ি অস্ত্র উদ্ধার করে। অস্ত্র উদ্ধারের পরপর দার্জিলিং থেকে আত্মগোপন করেন আন্দোলনের প্রধান মুখ বিমল গুড়ং।

Comments

The Daily Star  | English

US election: What is at stake for Bangladesh’s export

As millions of Americans head to the polls on November 5 to vote for either Democratic Vice President Kamala Harris or her Republican rival Donald Trump, apparel business communities in Bangladesh, more than 13,119 kilometres away from Washington, will be watching the results of the presidential election closely.

13h ago