রাঙামাটি, বান্দরবান ও চট্টগ্রামে পাহাড়ধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৫

টানা বৃষ্টির পর রাঙামাটি, বান্দরবান ও চট্টগ্রামে পৃথক পাহাড়ধসের ঘটনায় অন্তত ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মধ্যরাতের পর থেকে আজ ভোর পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের মধ্যে সেনাবাহিনীর সদস্যও রয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা মাটি সরিয়ে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন। ছবিটি আজ সকালে বান্দরবান সদর থেকে তোলা। ছবি: স্টার

টানা বৃষ্টির পর রাঙামাটি, বান্দরবান ও চট্টগ্রামে পৃথক পাহাড়ধসের ঘটনায় অন্তত ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মধ্যরাতের পর থেকে আজ ভোর পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের মধ্যে সেনাবাহিনীর সদস্যও রয়েছেন।

আমাদের স্থানীয় প্রতিনিধিরা জানান, রাঙামাটিতে ৩৫ জন, চট্টগ্রামে ২৩ জন এবং বান্দরবানে সাতজন পাহাড়ধসে মারা গেছেন।

রাঙামাটি

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মানজারুল মান্নান আমাদের স্থানীয় সংবাদদাতাকে জানান, পাহাড়ধসের ফলে জেলার বিভিন্নস্থানে নারী ও শিশুসহ অন্তত ৩৫ জনের মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। জেলার সদর, কাউখালি, কাপ্তাই এবং বিলাইছড়ি উপজেলায় এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

সদর উপজেলার বেদবেড়ি ও রিজার্ভবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় ১৯ জন মারা গেছেন। কাউখালিতে নয়, কাপ্তাইয়ে পাঁচ এবং বিলাইছড়িতে দুজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে রুমা আক্তার (২৫), তাঁর মেয়ে নুরি আক্তার (৩), হাজেরা বেগম (৩৩), সোনালি চাকমা ও তাঁর ছেলে অমিয় চাকমা (৩৩), মিন্টু ত্রিপুরা, লিটন মল্লিক, তার স্ত্রী চুমকি মল্লিক ও ছেলে আয়ুস-এর নাম জানা গেছে।

চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্নস্থানে অন্তত ২৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ তওহিদুল ইসলাম ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের বরাত দিয়ে আমাদের স্থানীয় সংবাদদাতা জানান, জেলার রাঙ্গুনিয়া উপজেলার তিনটি স্থানে অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামসুল আলম তালুকদার জানান, তাঁর এলাকায় দুটি পরিবারের আটজনের মৃত্যু হয়েছে। ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন চৌধুরী জানান, অত্র এলাকায় মারা গেছেন ১১ জন।

এদিকে, চন্দনাইশের ধোপাছড়ি ইউনিয়নের চন্দনিয়া পাড়ায় তিন জন ও শামুকছড়ি গ্রামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। আনোয়ারা সার্কেলের পুলিশ কর্মকর্তা মফিজ উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বান্দরবান

বান্দরবান জেলা সদরের লেমুঝুরি ও কালাঘাট এলাকায় সাতজন মাটি চাপা পড়ে মারা গেছেন। বান্দরবান ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন মাস্টার তারিকুল ইসলাম বলেন, লেমুঝুরি এলাকায় ধসের ঘটনায় একই পরিবারের তিন জন মারা গেছেন। সেখানে পৃথক একটি ধসের ঘটনায় কামরুন্নাহার বেগম (৪৫) ও তাঁর মেয়ে সুখিয়া বেগম (১২) নিখোঁজ রয়েছেন। ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা তাদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছেন।

মৃতদের মধ্যে যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে তারা হলেন: তিন ভাই-বোন সেতু বড়ুয়া (১০), হৃদয় বড়ুয়া (৭) এবং লতা বড়ুয়া (২); রেবা ত্রিপুরা (২২) এবং মকা খিয়্যাং (৫৫) ও তাঁর দুই নাতনি মারমা খিয়্যাং (১৩) এবং কিওসা খিয়্যাং (৯)।

সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানা যায়, কামরুন্নেসা বেগম (৪৫) এবং তাঁর মেয়ে সুখিয়া বেগম (১২) নিখোঁজ রয়েছেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বৃষ্টির মধ্যে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা তাঁদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছিলেন।

উল্লেখ্য, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে রবিবার রাত থেকে শুরু হয়ে গতকাল সারাদিন দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হয়। এই প্রবল বর্ষণে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়।

 

Click here to read the English version of this news

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago