পানির নিচে চীনের দীর্ঘতম হাইওয়ে টানেল

পানির নিচে নিজ দেশের দীর্ঘতম হাইওয়ে টানেল নির্মাণ করেছে চীন। প্রায় ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ এই টানেল নির্মাণে দেশটি সময় নিয়েছে ৪ বছর।
২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারি থেকে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। সম্প্রতি এই টানেল জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে চীন।
আজ বুধবার সিএনএনের প্রতিবেদনে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, টাইহু সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ১০ দশমিক ৭৯ কিলোমিটার। এটি সাংহাই থেকে ৫০ কিমি দূরে পূর্ব চীনের জিয়াংশু প্রদেশের টাইহু লেকের নিচ দিয়ে গেছে।

জিয়াংশুর সরকারি কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, সুড়ঙ্গ তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৯ দশমিক ৯ বিলিয়ন ইউয়ান।
এক ইউয়ানে ১৩ টাকা ৪৯ টাকা বিনিময় হার ধরে যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৩ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকার সমান।
অর্থাৎ প্রতি কিলোমিটার নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় ১ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা।
চীনের সংবাদ সংস্থা জিনহুয়া জানিয়েছে, দ্বিমুখী সুড়ঙ্গটি নির্মাণে প্রায় ২০ লাখ ঘন মিটারেরও বেশি কংক্রিট ব্যবহার করা হয়েছে। এতে রয়েছে ৬টি লেন এবং এর প্রস্থ ১৭ দশমিক ৪৫ মিটার।
সুড়ঙ্গের ছাদে রঙ্গিন এলইডি আলো বসানো হয়েছে, যাতে চালকদের ক্লান্তি দূর হয়।
এই সুড়ঙ্গটি ৪৩ দশমিক ৯ কিমি দীর্ঘ চ্যাংঝৌ-উজি মহাসড়কের অংশ, যেটি গত ৩০ ডিসেম্বর জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। সাংহাই থেকে জিয়াংশুর রাজধানী নানজিং এ যাওয়ার জন্য এটি একটি বিকল্প পথ।
এই সুড়ঙ্গটি মূলত তৈরি করা হয়েছে টাইহু লেকের আশেপাশের শহরগুলোর ওপর থেকে ট্রাফিকের চাপ কমানো এবং একইসঙ্গে ইয়াংজি নদীর ব-দ্বীপ এলাকার শহরগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য।
টাইহুর টানেল ছাড়াও পৃথিবীতে আরও কিছু বড় সুড়ঙ্গ রয়েছে। যেমন নরওয়ের স্ট্যাভেঞ্জার ও স্ট্র্যান্ড শহরের মধ্য দিয়ে যাওয়া আন্ডারওয়ে রাইফাস্ট টানেলের দৈর্ঘ্য ১৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার।
টোকিও উপসাগরের নিচে রয়েছে ৯ দশমিক ৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সুড়ঙ্গ। এটি 'টোকিও বে আকুয়া লাইনের' অংশবিশেষ।
তবে সার্বিক ভাবে পানির নিচে তৈরি করা সুড়ঙ্গপথের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘতম হচ্ছে চ্যানেল টানেল। এটি ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সকে রেলপথের মাধ্যমে সংযুক্ত করেছে। এর পানিতে নিমজ্জিত অংশ প্রায় ৩৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ, যেটি পানির নিচে বিশ্বের দীর্ঘতম সুড়ঙ্গপথ।
Comments