রাওয়ালপিন্ডিতে তুষারপাতে নিহত ২২

পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি জেলার পাহাড়ি পর্যটন শহর মুরিতে প্রবল তুষারপাতে ১০ শিশুসহ অন্তত ২২ জনের প্রাণহানি হয়েছে।
আজ রোববার পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বুধবার মুরিতে সাড়ে ৬ ইঞ্চি বরফ পড়ে। পরদিন বরফ পড়ে সাড়ে ৮ ইঞ্চি এবং শুক্র ও শনিবার বরফ পড়ে সাড়ে ১৬ ইঞ্চি।
দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, 'মুরিতে এমন তুষারপাত স্বাভাবিক ঘটনা।'

রাওয়ালপিন্ডি জেলা প্রশাসন ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে কয়েকদিন আগে তুষারপাতের সতর্কতা জানানো হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনা ঠেকাতে কোনো পূর্বপ্রস্তুতি নেয়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত ৫ জানুয়ারি আবহাওয়া দপ্তর প্রবল তুষারপাতের কারণে মুরি, গালিয়াত, নাথিয়াগালি, কাগান, নারান ও অন্যান্য পাহাড়ি এলাকায় ৬ জানুয়ারি থেকে ৯ জানুয়ারি বিকেল পর্যন্ত সতর্কতা জারি করে। তুষারপাতের কারণে সেসব এলাকায় রাস্তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলেও বার্তায় উল্লেখ করা হয়।
এরপর মুরি প্রশাসন পর্যটকদের আবহাওয়া বার্তা মেনে চলা এবং পাহাড়ি এলাকায় যাওয়ার আগে যান চলাচল সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে বলে।

রাওয়ালপিন্ডির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আলী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেন, 'পর্যটক ও যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ করা হয়েছে।'
গত বুধবার রাওয়ালপিন্ডির পুলিশ জানায়, মুরি শহরে পার্কিং করা যায় সাড়ে ৩ হাজার গাড়ি। কিন্তু গত ২ দিনে ৮০ হাজারের বেশি গাড়ি সেখানে প্রবেশ করেছে।
পাকিস্তানের স্থানীয় জরুরি সেবাকেন্দ্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ১ পুলিশ সদস্য, তার স্ত্রী ও ৬ সন্তান এবং ৫ সদস্যের অপর এক পরিবার রয়েছে।
বরফে আটকে পড়া অবস্থা থেকে ৩০০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে উল্লেখ করে সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র গণমাধ্যমকে বলেন, 'সেনা সদস্য ও প্রকৌশলীরা মুরির রাস্তা পরিষ্কারের কাজ করছেন।'
পুলিশ জানিয়েছে, বরফ জমাট অবস্থায় অন্তত ৬ জনের মরদেহ গাড়ির ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
পাকিস্তানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) চেয়ারম্যান লেফটেনেন্ট জেনারেল আখতার নওয়াজ গণমাধ্যমকে বলেন, 'বরফে আটকে পড়া অনেককে নিরাপদ স্থানে নেওয়া হয়েছে। পর্যটকদের সহায়তার জন্য স্থানীয়দের এগিয়ে আসার অনুরোধ করা হয়েছে।'
এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বেশ কয়েকটি হোটেল আটকে পড়া পর্যটকদের বিনামূল্যে খাবার ও আশ্রয় দিচ্ছে বলে সংবাদ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
Comments