‘এই উৎসব করাটা অমানবিক ও বেমানান’

সিলেট ও সুনামগঞ্জকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য জি এম সিরাজ পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে উৎসব আয়োজনের সমালোচনা করে সংসদে বক্তব্য দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, বন্যায় মানুষের দুর্দশায় সরকারের খেয়াল নেই। এখন তারা পদ্মা সেতু উদ্বোধনের উৎসব উন্মাদনায় মত্ত।
প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেটের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, উৎসব উদযাপনে আমাদের আপত্তি নাই। কিন্তু দেশের বর্তমান দুর্গত মানুষের দুঃখ দুর্দশায় এই উৎসব করাটা অমানবিক ও বেমানান বৈকি। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হোক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে শুভ উদ্বোধন করুন। তবে উল্লাসের মাত্রাহীন উন্মাদনা দয়া করে বন্ধ করুন।
এ সময় সরকারি দলের সদস্যরা হইচই করে বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান।
জিএম সিরাজ বলেন, পদ্মা সেতু সারা দেশের স্বপ্নের সেতু, যার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন ২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। সেদিন বাজেট আলোচনায় শেখ সেলিম সাহেব তা স্বীকার করেছেন। সেই সেতু উদ্বোধনের প্রাক্কালে কোন দুঃখে বিএনপি ষড়যন্ত্র করবে।
নির্বাহী আদেশে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান সিরাজ।
তিনি বলেন, বারবার অনুরোধ সত্ত্বে তাকে বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি। এখন তার মৃত্যু হলে দায় কে নেবে?
জি এম সিরাজ বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট বড় বড় সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের জন্য। ছোট ব্যবসায়ী বা জনগণের জন্য নয়। মানুষের আয় বাড়েনি। মধ্যবিত্তরা মহাসংকটে। প্রকৃত মূল্যস্ফীতি ১৩ থেকে ১৫ শতাংশ। অর্থমন্ত্রী তার বাজেটে দুর্নীতিবিরোধী কোনো পদক্ষেপের কথা বলেননি। আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ভাই মোহতেশাম হোসেন বাবরকে ২ হাজার কোটি টাকা পাচার এবং এর মাস্টারমাইন্ড রিং লিডার বলে মন্তব্য করেছে হাইকোর্ট। গত ১২ মাসে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিরা ২ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা জমা রেখেছেন।
অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, 'জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন না মেনে সামান্য করের বিনিময়ে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করে দিলেন। এতে পাচারকারীরা অর্থনৈতিক সুরক্ষা পুরস্কার পাচ্ছেন।'
সরকারি দলের সংসদ সদস্য এ বি তাজুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বন্যা দুর্গত এলাকায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সফর মানুষের মনের বল বাড়িয়েছে। তিনি বলেন, আমরা উৎসবও করব, মানুষের পাশে দাঁড়াব।
জাসদের সংসদ সদস্য শিরিন আখতার বলেন, ব্যক্তি আয়কর দাতা বাড়াতে হবে। সম্পদ কর এবং করপোরেট কর উচ্চ হারে আদায় করতে হবে। আয় বৈষম্য কমাতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, করোনার সুরক্ষা সামগ্রী যেমন গ্লাভস, মাস্কের মতো করোনা সুরক্ষা সামগ্রীতে করারোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি যেন প্রত্যাহার করা হয়। এছাড়া তিনি তামাকের ওপর কর বাড়ানো, পলিথিন নিষিদ্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব করেন।
Comments