পরমাণু কমিশনের ৩ কর্মকর্তা নিহত: ধাক্কা দেওয়া বাসের অজ্ঞাতনামা চালকের বিরুদ্ধে মামলা

পরমাণু শক্তি কমিশনের ৩ বিজ্ঞানীসহ ৪ জন নিহতের ঘটনায় অভিযুক্ত সেইফ লাইন পরিবহনের বাসটির অজ্ঞাতনামা চালককে আসামি করে মামলা হয়েছে।
রোড ডিভাইডার ভেঙে পরমাণু কমিশনের বাসে ধাক্কা দিচ্ছে সেইফ লাইন বাসটি। ছবি: ভিডিও ফুটেজ থেকে নেওয়া

পরমাণু শক্তি কমিশনের ৩ বিজ্ঞানীসহ ৪ জন নিহতের ঘটনায় অভিযুক্ত সেইফ লাইন পরিবহনের বাসটির অজ্ঞাতনামা চালককে আসামি করে মামলা হয়েছে।

আজ সোমবার সকালে বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সাভার হাইওয়ে থানার এসআই গোলাম মোস্তফা। 

তিনি বলেন, 'পরমাণু শক্তি কমিশনের ৩ বিজ্ঞানীসহ ৪ জন নিহতের ঘটনায় অভিযুক্ত সেইফ লাইন পরিবহনের বাসটির অজ্ঞাতনামা চালককে আসামি করে সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক ফজলুল হক বাদী হয়ে গতকাল রাতে মামলাটি দায়ের করেন। সড়ক দুর্ঘটনার মামলাগুলো হাইওয়ে থানা তদন্ত করে। তাই আমাকে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।'

'আমরা বাসটির নম্বর প্লেট সংগ্রহ করেছি।  চালক ও মালিকের সন্ধান এখনো পাইনি', বলেন তিনি।

বাসটির রোড পারমিট, ফিটনেস ও রোড ট্যাক্স দেওয়া ছিল কি না, তদন্তের পর জানা যাবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, সেইফ লাইন পরিবহনের সেই বাসটির রোড পারমিট ও ফিটনেস ছিল না।

সাভার হাইওয়ে পুলিশের কাছ থেকে সেইফ লাইন পরিবহনের বাসটির নম্বর নিয়ে সাভার বিআরটিএ অফিসে যোগাযোগ করা হলে এমন তথ্যই পাওয়া যায়। সাভার হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক গোলাম মোস্তফা ডেইলি স্টারকে সেইফ লাইন পরিবহনের বাসটির নম্বর দেন।

সাভার বিআরটিএর পরিদর্শক সাজ্জাদুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সেইফ লাইন পরিবহনের বাসটির কোনো নম্বর প্লেট দেখতে পাইনি। বাসটির সামনের অংশ খুব বাজেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পেছনে লাগানো নম্বর প্লেটটিও পাওয়া যায়নি।'

হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শকের কাছ থেকে পাওয়া নম্বরটি তাকে জানানো হলে তিনি বলেন, 'নম্বরটি ওই গাড়ির হলে, এটির রোড পারমিট ছিল না। গাড়িটির ২০১৪ সাল পর্যন্ত ফিটনেস ছিল। রোড ট্যাক্স দেওয়া ছিল ২০১৫ সাল পর্যন্ত।'

গতকাল সকাল ৯টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে সেইফ লাইন পরিবহনের বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে বাম পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসকে ধাক্কা দেয়। পরে সেটি ডান পাশে থাকা গরু বোঝাই একটি চলন্ত ট্রাককে সামনের দিকে ধাক্কা দিয়ে সড়ক বিভাজনের ওপর দিয়ে আরিচামুখী লেনে চলে যায় এবং ওই লেনে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের একটি চলন্ত বাসকে ধাক্কা দেয়।

এতে ঘটনাস্থলেই পরমাণু শক্তি কমিশনের স্টাফ বাসের চালক রাজিব হোসেন নিহত হন। সে সময় কমিশনের ১২ কর্মকর্তাসহ অন্যান্য পরিবহনের মোট অন্তত ২০ জন আহত হন।

তাদের উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে পরমাণু শক্তি কমিশনের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পূজা সরকার ও প্রকৌশলী কাউসার আহম্মেদকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

এ দুর্ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে গেছে।

সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান ডেইলি স্টারকে জানান, নিহতদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Comments