দৌলতদিয়ায় জনারণ্য!

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে আজ শনিবার সকাল থেকেই দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা থেকে বিভিন্ন উপায়ে ঘাটে আসা যাত্রীদের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। কঠোর লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণে কর্মস্থলে ফেরা এসব যাত্রীর জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।
বৃষ্টি, পুলিশের ভয়ের পাশাপাশি কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে তাদের কর্মস্থলে ফিরতে হচ্ছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মহাসড়কে অটো, মাহেন্দ্রসহ ব্যক্তিগত গাড়ি দেখা গেছে। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ রিকশায়-অটোতে, আবার কেউ ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ফিরছেন। ফেরিতে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি।
রাজবাড়ী থেকে অটোরিকশায় দৌলতদিয়া ঘাটে আসা যাত্রী লতিফ সরদার জানান, তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তার অফিস রোববার খোলা।

তিনি বলেন, 'সরকার ৫ আগস্ট পর্যন্ত কারখানা বন্ধ রাখার কথা বলে গণপরিবহন বন্ধ রেখে আমাদের বিপদের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। কিছু করার নেই, কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়েই যেতে হচ্ছে এখন।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক যাত্রী বলেন, 'আমারা কী করব? সরকার লকডাউন দেয়, আবার লকডাউনের মধ্যে অফিসও খুলে দেয়, কেন?'
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক জামাল উদ্দিন বলেন, 'আমাদের ১৬টি ফেরিই প্রস্তুত আছে। উভয় ঘাটে এখন ছোট-বড় মিলিয়ে মোট আটটি ফেরি চলছে।'

ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে না কেন? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'সরকারের নির্দেশনা ছাড়া আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না।'
ফেরিতে গাদাগাদি করে পারাপার, স্বাস্থ্যবিধি না মানা এবং ব্যবস্থা গ্রহণ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুল হক খাঁন বলেন, 'মূলত ঘাটে বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ এসে ভিড় করছেন। সড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ থাকলেও কেমন করে তারা আসছেন বুঝতে পারছি না। আমাদের ভ্রাম্যমাণ টিম নিয়মিত তদারকি করছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা যদি সাত নম্বর ঘাটে যাই, তারা পাঁচ নম্বর ঘাটে এসে ফেরিতে উঠে পড়েন। তাছাড়া, স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য আমরা মসজিদের মাইক কাজে লাগিয়েছি এবং আমাদের নিয়মিত প্রচার চলছে।'
এ বিষয়ে রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, 'যেহেতু সরকার সব কলকারখানা খুলে দিয়েছে। আর এই জনস্রোত বাস্তবে ঠেকানোর কোনো উপায় নেই। এখন তাদের মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করা এবং বার বার হাত স্যানিটাইজ করা জরুরি।'
Comments