একেবারে যে আমরা ডিগবাজি খেয়ে যাব, তা তো না: সিইসি

cec.jpg
কাজী হাবিবুল আউয়াল। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমরা যে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি তার কিছুটা হলেও থাকা তো উচিত। একেবারে যে আমরা ডিগবাজি খেয়ে যাব, তা তো না!

আজ মঙ্গলবার সকালে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সংলাপের শুরুতে তিনি এ কথা বলেন।

সিইসি বলেন, অনাস্থা আমাদের ওপর আপনাদের হয়তো আছে। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমরা যে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি তার কিছুটা হলেও থাকা তো উচিত। একেবারে যে আমরা ডিগবাজি খেয়ে যাব, তা তো না! ২০১৮ সালে যে নির্বাচন হয়েছিল, ওভাবে এই নির্বাচন হবে সেটা আপনারা আশা করবেন না। আমরা সেটা জানি না, দেখিওনি।

ইভিএম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপনি লাঠি দিয়ে, হকিস্টিক দিয়ে ইভিএম ভেঙে ফেলতে পারবেন কিন্তু এখানে ভোটের নড়চড় হবে না। একটা কেন্দ্র দখল করে একজন লোক ১০০টা করে ৫ জন যদি ৫০০টা ভোট দেন; ভোট দিলো ৫ জন কিন্তু কাউন্ট হলো ৫০০, ভোটের হার অনেক বেশি। আমি যেটা বলতে চাচ্ছি, বিভিন্ন ধরনের সমস্যা আছে। সমস্যাগুলোকে আমরা কীভাবে ব্যালেন্স করে অর্থবহ এবং যতদূর সম্ভব নিরপেক্ষ, যতদূর সম্ভব দুর্নীতিমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠান করা যায় সে কথা বলা হচ্ছে।

আমাদের ওপর আস্থা রাখেন। আস্থা রাখতে যেয়ে চোখ বন্ধ করে রাখলে হবে না। আপনাদের নজরদারি থাকতে হবে, আমরা কি আসলেই সাধু পুরুষ-না ভেতরে ভেতরে অসাধু। আপনারাও আপনাদের তরফ থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কঠোর নজরদারিতে আমাদেরও রাখতে হবে। অভিযোগ থাকলে পাঠান, আমাদের অনেকগুলো টেলিফোন থাকবে সে সময়। ক্যামেরায় অনেকগুলো সেন্টার আমরা ওয়াচ করতে পারবো, বলেন হাবিবুল আউয়াল।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রতিনিধি দলের কাছে প্রশ্ন রেখে সিইসি বলেন, অর্থশক্তিকে কীভাবে সামাল দেবো? আপনি আমাকে একটা বুদ্ধি দেন। এটা একটা সংস্কৃতি এখন, দেশে অর্থ বেড়েছে। আমাদের সবার বাড়িতে বস্তা বস্তা অর্থ এখন। আর বস্তা বস্তা অর্থ আমরা নির্বাচনে ব্যয় করি। এই অর্থ নিয়ন্ত্রণ করবো কীভাবে? যেটা প্রাকশ্যে হয়, নির্বাচন কমিশন সেই কাগজপত্র সংগ্রহ করে। সেখানে দেখানো হলো যে, আমি ৫ হাজার টাকা খরচ করেছি। তার বাইরে গিয়ে গোপনে যদি আমি ৫ কোটি টাকা খরচ করি, কীভাবে আমাকে ধরবেন বা আমি কীভাবে ধরবো? এটাও সম্ভব, এটার জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের চর্চা অপসংস্কৃতি হয়ে গেছে পয়সা ঢালছে, মাস্তান হায়ার করছে। একজন প্রফেশনাল কিলার হায়ার করতে খুব বেশি পয়সা লাগে না; আজকাল যেটা হয়েছে। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে আমাদের সবাইকে আন্দোলন করতে হবে। অর্থশক্তি ও পেশীশক্তির ব্যাপারে আমরা একা কিছু করতে পারবো না। মাঠে আপনাদের থাকতে হবে। আমাদের সাহায্য করবেন, তথ্য পাঠাবেন।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ১১ দফা দাবি জানায়। দলের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী এসব দাবি তুলে ধরেন।

এসব দাবির মধ্যে রয়েছে—নির্বাচনকে সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য করতে এবং সংঘাত-সহিংসতা এড়াতে প্রতীক বরাদ্দ থেকে নির্বাচন পরবর্তী ১ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রার্থী, সমর্থক ও ভোটারদের নিরাপত্তা বিধানে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে; বাংলাদেশের নারী-পুরুষ ভোটার জনতার অধিকাংশই প্রযুক্তির মাধ্যমে ভোট প্রদানে অভ্যস্ত নয় বিধায় ইভিএমের পরিবর্তে ব্যালটেই ভোট গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে; নির্বাচনকালে স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকতে হবে; ত্রুটিমুক্ত ব্যবস্থা প্রবর্তন করে প্রবাসী রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের ভোট প্রদান প্রক্রিয়ার আওতায় আনতে হবে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। সঙ্গত কারণে এ দেশে ইসলামী রাজনীতির চর্চা থাকাটা খুব স্বাভাবিক। সুতরাং ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাহীন ও জনসমর্থনহীন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Air raid sirens in northern Israel due to Iranian missiles: military

Israel says conducted 'extensive strikes' in Iran's west, while explosions near Tel Aviv, sirens blare across Israel; smoke rises after explosion in Iran’s Tabriz

3h ago