‘কেন্দ্র দখল করলে আমরা করব, জোর করে ভোট নিলে আমরা নেব’
নোয়াখালী সদর উপজেলার দাদপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দেলু বলেছেন, 'কেন্দ্র দখল করলে আমরা করব, জোর করে ভোট নিলে আমরা নেব। কারণ আমরা সরকারের প্রতিনিধি।'
ওই ইউনিয়নে তার নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেছেন। রোববার রাতে এ বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দেলোয়ার হোসেন দেলু বলতে শোনা যায়, 'আওয়ামী লীগের টিকেট নিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি। আপনাদের কাছে ভোট দাবি করতেছি। আপনারা আগামী ২৬ তারিখে আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। কেউ কোনো কেন্দ্র নিজের হাতে নিয়ে যাবে এমন কথা ভুয়া কথা।'
একই অনুষ্ঠানে দেলোয়ার হোসেন দেলুর কর্মী ও ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম বলেন, 'কেন্দ্রের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করে দিব। নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করলে তাদের তালিকা আমরা কড়া-গণ্ডায় গুনব। প্রশাসন তাদের ধরার জন্য সবসময় প্রস্তুত আছে।'
আগামী ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনে নোয়াখালী সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইউনিয়নগুলোতে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে গত শনিবার সন্ধ্যায় দাদপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বারাহীপুর এলাকায় নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দেলু।
সেখানে তিনি দলের নেতাকর্মী ও স্থানীয় ভোটারদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন।
কেন্দ্র দখলের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে দেলোয়ার হোসেন দেলু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি এমন বক্তব্য দেইনি। প্রতিপক্ষ আমার বক্তব্যকে এডিট করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে এবং আমার ভোটের মাঠ নষ্ট করার চেষ্টা করছে।'
তিনি এ বিষয়ে আইনের আশ্রয় নেবেন বলে জানান।
ইউপি সদস্য জহিরের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সত্যতা স্বীকার করে বলেন, 'জহির কথায় কথায় এ সব কথা বলে ফেলেছেন।'
এ প্রসঙ্গে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের প্রথম যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আওয়ামী লীগ কোনো কেন্দ্র দখলের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ সাধার ভোটারদের রায়ে বিশ্বাসী। দাদপুর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন যদি এমন কেন্দ্র দখলের ঘোষণা দিয়ে থাকেন, তাহলে এটা দুঃখ জনক। এটা তার ব্যক্তিগত বক্তব্য। এর দায়দায়িত্ব তাকেই নিতে হবে।'
যোগাযোগ করা হলে নোয়াখালী সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রবিউল আলম বলেন, 'কোনো প্রার্থী যদি নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে এমন ঘোষণা দেন, তাহলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন। নির্বাচনে কেউ যদি কেন্দ্র দখল কিংবা ভোট ডাকাতির আশা করে থাকেন, তাহলে সেটা হবে দিবাস্বপ্ন।'
Comments